কিছুদিন আগেই শুরু হয়েছে বাংলা ১৪২৬ বঙ্গাব্দ। নতুন বছরে রাজধানীর ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হাসপাতালের বিশেষায়িত কেন্দ্র এডভান্সড সেন্টার অফ কিডনি এন্ড ইউরোলজি (আকু)-র উদ্যোগে আজ সোমবার আয়োজন করা হয়েছিল এক বৈশাখী আড্ডার। 'ষোল আনাই বাঙ্গালীয়ানা' শীর্ষক প্রাণবন্ত এই আয়োজনে মিলিত হয়েছিলেন দেশের খ্যাতনামা চিকিৎসকেরা। নাচ-গানসহ হরেক রকমের বাঙালি খাবারের আয়োজন ছিল এই অনুষ্ঠানে।
আকু\'র আয়োজনে জমজমাট বৈশাখী আড্ডা
কালের কণ্ঠ অনলাইন


জমজমাট এই অনুষ্ঠানে এসেছিলেন দেশের প্রথিতযশা ইউরোলজিস্ট অধ্যাপক জেনারেল আকবর (অব:), অধ্যাপক এম এ সালাম, অধ্যাপক এস এ খান, অধ্যাপক ফকরুল ইসলাম, অধ্যাপক জামানুল ইসলাম ভূঁইয়া, অধ্যাপক মাহবুবুল আলম, অধ্যাপক জাহাঙ্গীর কবির, অধ্যাপক আমানুর রসুল, অধ্যাপক মিজানুর রহমান, অধ্যাপক সাহাদৎ হোসেন, কার্ডিয়াক সার্জন অধ্যাপক কামরুল হাসান মিলন, ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট অধ্যাপক মীর জামাল উদ্দীন, এনেসথেশিওলজিস্ট অধ্যাপক খলিলুর রহমান, কার্ডিওলজিস্ট অধ্যাপক জামিলুর রহমান, নিওন্যাটোলজিস্ট, গাইনোকোলজিস্ট, হেমাটোলজিস্ট, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিকসহ অনেকে।
সকলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানস্থল পরিণত হয় মিলনমেলায়। ডাক্তারির পাশাপাশি চিকিৎসকেরাও যে শিল্প-সংস্কৃতির চর্চা করেন তার প্রমাণ পাওয়া যায় অধ্যাপক এম এ সালামের বেহালার সুরে, অধ্যাপক খলিলুর রহমানের আধুনিক গান, অধ্যাপক জামানুল ইসলাম ভূঁইয়ার ভাওয়াইয়া গান, ডা. গুলজার হোসেন উজ্জ্বলের নজরুলগীতি কিংবা ডা. কেয়া দাস পুরকায়স্থের আধুনিক গানে। মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর ছিল খাবারের আয়োজন।

কী নেই সেই খাবারের তালিকায়? কাঁচা আমের জুস, ডাব, নিমক পোড়া, খই, বাতাসা, রাজভোগ, তরমুজ দিয়ে আপ্যায়ন শুরু হয়। দুপুরের খাবারে ছিলো বাসমতির সাদা ভাত, শুকনো মরিচ ভর্তা, আলু ভর্তা, ডাল ভর্তা, টাকি মাছ ভর্তা, টমেটো ভর্তা, বরবটি ভর্তা, মাছ ভাজা, পটল ভাজা, বেগুন ভাজা, করল্লা ভাজা, সর্ষে ইলিশ, আম দিয়ে মলা মাছ, মুরগীর ঝোল, মুড়িঘন্ট, আম ডাল, কাঁচা আমের ভর্তা, দই মিষ্টি ইত্যাদি। এত পদের আয়োজনের মাঝেও কোনো কোল্ড ড্রিংকস ছিল না। 'যোলোআনা বাঙালিয়ানা' বলতে যা বোঝায় আরকি।
অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের ধন্যবাদ জানান, ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. আব্দুল হাই চৌধুরী, আকু'র চেয়্যারম্যান অধ্যাপক ডা. সোহরাব হোসেন সৌরভ, কনালট্যান্ট ডা. ফজল নাসের প্রমূখ।
সম্পর্কিত খবর

শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের
অনলাইন ডেস্ক

চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া এক্সেস রোড এলাকায় প্রাইভেটকারে গুলি চালিয়ে দুজনকে হত্যার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী কারাবন্দি সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী তামান্না শারমিনকে মামলায় হুকুমের আসামি করা হয়।
মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) দুপুরে নগরের বাকলিয়া থানায় মামলাটি করেন নিহত বখতিয়ার হোসেন মানিকের মা ফিরোজা বেগম। মামলায় ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৬/৭ জনকে আসামি করা হয়।
ওসি বলেন, ‘মামলার আসামিদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। তারা কে কোথায় অবস্থান করছেন, সে বিষয় জানার চেষ্টা করছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।
জানা যায়, গত শনিবার (২৯ মার্চ) রাত পৌনে ৩টার দিকে নগরের বাকলিয়া এক্সেস রোড এলাকায় চার-পাঁচটি মোটরসাইকেল থেকে আট-নয় জন লোক এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে চট্টগ্রামের আরেক সন্ত্রাসী সারোয়ার হোসেন বাবলাকে বহনকারী প্রাইভেটকার ঝাঁঝরা করে ফেলে। এতে সারোয়ারের প্রাইভেটকার চালক বখতিয়ার হোসেন মানিক (৩০) ও তার সহযোগী আবদুল্লাহ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
তবে অক্ষত ছিলেন সারোয়ার ও তার সহযোগী রবিউল ইসলাম রবিন, ইমন ও হৃদয়। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ রবিন ও হৃদয় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের ঢল
বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার

ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে। মঙ্গলবার ঈদের দ্বিতীয় দিন সমুদ্রসৈকতের লাবণী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট, কলাতলী পয়েন্টসহ আশপাশের পর্যটন স্পটগুলোতে লোকে-লোকারণ্য হয়ে ওঠে।
পর্যটকের কেউ কেউ সাগরের ঢেউয়ে শরীর ভিজিয়ে টিউব নিয়ে সাঁতার কেটে উপভোগ করছেন স্বচ্ছ সাগরের জলরাশি। আবার অনেকেই জেড স্কিতে চড়ে ঘুরে আসছেন ঢেউয়ের তালে তালে।
ঢাকা থেকে আগত পর্যটক সৈয়দ হোসেন বলেন, ‘সারা বছরই কোনো না কোনো কাজে ব্যস্ত থাকি তাই ঈদের টানা ছুটিতে পরিবার নিয়ে কক্সবাজারে এসেছি। অনেক ভালো লাগছে।
সমুদ্রপারে ছোট দুই সন্তানকে নিয়ে জলকেলিতে মেতে ছিলেন ফরিদপুর থেকে আগত পর্যটক প্রিন্স। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার এসে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মন একেবারে জুড়িয়ে যায়, তাই প্রতিবছর অন্তত একবার হলেও এখন আসার চেষ্টা করি।’
গাজীপুর থেকে থেকে এসেছেন মোহাম্মদ কবির। তিনি বলেন, ‘ছুটি কাটাতে পরিবার নিয়ে কক্সবাজারে আসছি।
কক্সবাজার আবাসিক হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘আজ ঈদের পরের দিন সকাল থেকে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছে। এই মুহূর্তে তারকা মানের হোটেলগুলো প্রায় বুকিং রয়েছে। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট তৈরি করে হোটেল ভাড়া বেশি নিচ্ছেন।’
কক্সবাজার বেড়াতে আসা পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ সমুদ্র গোসল।
টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মহমুদ বলেন, ‘কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। পর্যটকদের সুবিধার জন্য সৈকতের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট গুলোতে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলা পুলিশের সহযোগিতায় পর্যটন এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে।’ পর্যটকেরা কক্সবাজার ভ্রমণ শেষে নিরাপদে বাড়িতে ফিরতে পারেন সে জন্য যা যা করার প্রয়োজন সব কিছু করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে বলে তিনি জানান।

মা-ভাই-বোনের অস্ত্রের আঘাতে প্রকৌশলী খুন
রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের রাউজানে মা, ভাই ও বোনের অস্ত্রের আঘাতে নুরুল আলম বকুল (৪১) নামের এক প্রকৌশলী নিহত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) বিকেল ৩টার সময় রাউজান উপজেলার ১ নং হলদিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডস্থ তিতা গাজীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নুরুল অভিযুক্ত হত্যাকারী শহিদা বেগমের ছেলে। তার মা শহিদা বেগমের দুই ঘরের সন্তান রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, প্রকৌশলী নুরুল আলম বকুল গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে স্ত্রী ও সন্তানদের শহরে রেখে নিজ বাড়িতে আসে। ঈদের পরের দিন দুপুরে মা শহিদা বেগম, সৎভাই দিদার আলম, নাজিম উদ্দিন, মুন্নি আকতারের সঙ্গে জায়গাজমি ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ হয়। এক পর্যায়ে তারা বকুলের ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা ও ছোট ভাই রাজু আহমেদ প্রথমে রাউজান উপজেলা হাসপাতাল পরে চমেক হাসপতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূইয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, সৎভাইয়ের ছুরিকাঘাতে বড় ভাই নিহত হয়েছেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

‘আব্বা তো আর আইতো না, এর লাইগ্যা খালি মোবাইলো ছবি দেহি’
আলম ফরাজী, ময়মনসিংহ

‘আম্মা আর বড় আব্বা (চাচা) খালি কয় আব্বা আসমানো গেছে, আইয়া পড়বো। অহন তো ঈদো গেছেগা, কই আইলো না তো। ঈদের আগে বেহেই (সবাই) আইবো কইছিন। বড় আব্বা নতুন জামা আনলেও আমার মন খারাপ।
পাঁচ বছরের মেয়ে জান্নাতুল জানে না তার বাবা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে হুমায়ুনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, জান্নাতুল হাতে মোবাইল। বসে বসে নিজের বাবার ছবি দেখছে সে।
গত বছরের ২০ জুলাই গাজীপুরের সাইনবোর্ড বাজারে অবস্থিত বড় ভাইয়ের দোকানের ভেতরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন হুমায়ুন।
বাড়ির বাইরে বসে শোনা যাচ্ছিল ভেতরে কারো আহাজারি। পরে জানা গেল, ঘরের ভেতরে বসে কাঁদছেন শহীদ হুমায়ুনের মা ফরিদা খাতুন। গতকাল ঈদের দিন এই আহাজারি আরো কয়েক গুণ বেশি ছিল বলে জানিয়েছেন হুমায়ুনের স্ত্রী আয়েশা বেগম।
ফরিদা খাতুনের একটাই দাবি, তার সন্তান হত্যার বিচার।
স্ত্রী আয়েশা জানান, প্রতি ঈদেই স্বামী তাকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে ঘুরতে যেতেন। দূরে কোথাও গিয়ে ছবি তুলতেন। এই ছবি নিজেদের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করতেন। এসব এখন শুধুই স্মৃতি। এখন আগের ছবি তার সম্বল। অবুঝ মেয়ের সামনে কাঁদতেও পারেন না আয়েশা।
শহীদ হুমায়ুনের বড় ভাই হযরত আলী জানান, গত বছরের ২০ জুলাই বিকেলে ভ্যানগাড়িতে করে পানের বস্তা আসে হুমায়ুনের দোকানে। পানের বস্তা দোকানে ঢুকিয়ে দোকান বন্ধ করেন হুমায়ুন। এ সময় ভ্যানচালক গুলিবিদ্ধ হয়ে দোকানের সামনে লুটিয়ে পড়ে বাঁচও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকেন। হুমায়ুন ভ্যানচালককে উদ্ধার করে তার (হযরত আলী) দোকানে ঢুকিয়ে ভেতর থেকে সাটার লাগিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর পুলিশ বাইরে থেকে সাটার খুলে ভেতরে অবস্থানরত দোকান কর্মচারীদের লক্ষ্য করে লাঠিচার্জ ও গুলি করে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান হুমায়ুন।