<p>এক পরিসংখ্যানে বলা হয়, ভুল এবং অবাঞ্ছিত মিটিংয়ের কারণে আমেরিকায় প্রতিবছর ৩৭ বিলিয়ন ডলার জলে যায়। কাজেই অফিসের মিটিং কার্যকর ও যুক্তিপূর্ণ হওয়াটা জরুরি। যে অফিসগুলো ভুল মিটিং করে পয়সা ও সময় অপচয় করত, অ্যাপল তাদের দলে ছিল না। এ ক্ষেত্রে গোটা কৃতিত্ব দেওয়া হয় স্টিভ জবসকে। স্টিভ জবসকে নিয়ে যাঁরা গবেষণা চালিয়েছেন তাঁরা বলেন, মূলত তিনটি উপায়ে অফিসের প্রতিটি মিটিংকে অর্থপূর্ণ করে তুলতেন এই প্রযুক্তির দিকপাল। এখানে জেনে নিন এই কিংবদন্তিতুল্য সফল প্রযুক্তিবিদ ও অ্যাপলের প্রাণপুরুষ কিভাবে গুরুত্বপূর্ণ সভাগুলোকে শতভাগ কার্যকর করে তুলতেন।</p> <p><strong>পরিসর যতটা ছোট হয়</strong></p> <p>জবসের বহুকালের সঙ্গী ছিলেন কেইন সিগাল। একেবারে কাছ থেকে পর্যবেক্ষণের সুযোগ পেয়েছেন তিনি। ‘ইনসেনলি সিম্পল’ বইয়ে মিটিংয়ের পরিসর যতটা সম্ভব ছোট করে আনার জন্য জবসের ঐকান্তিক ইচ্ছার কথা লিখেছেন তিনি। প্রতিটি সময়ই স্টিভ সভাকে দীর্ঘায়িত করতে দিতেন না। এমনকি প্রয়োজনে এ বিষয়ে বেশ নিষ্ঠুর হতেন। একবার অ্যাপলের বিজ্ঞাপন নিয়ে কাজ করে এমন একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মিটিংয়ে বসলেন স্টিভ। সেখানে লরি নামের অপরিচিত এক নারী এলেন। জবস সরু চোখে তাঁর দিকে তাকিয়ে পরিচয় জানতে চাইলেন। লরি বললেন, ‘আমাকে এখানে আমার প্রতিষ্ঠান থেকে পাঠানো হয়েছে। তারা মনে করছে, সংশ্লিষ্ট কাজে আমাকে প্রয়োজন হবে।’ জবস তাত্ক্ষণিকভাবে তাঁকে স্পষ্ট জানালেন, আগে যেহেতু প্রয়োজন হয়নি, এখনো হবে না।</p> <p><strong>উপস্থিত প্রত্যেকেরই দায়িত্ব থাকতে হবে</strong></p> <p>যে বিষয়ে মিটিং হবে এবং সেখানে যাঁরা উপস্থিত হবেন, ওই বিষয়ের সঙ্গে প্রত্যেকেরই সংশ্লিষ্টতা থাকতে হবে। নয়তো ওই মিটিংয়ে তিনি অপ্রয়োজনীয়। এ বিষয়কে প্রতিষ্ঠিত করতে নীতিমালা গ্রহণ করেন জবস। তার নাম দেন ডিআরআই, যার অর্থ ডিরেক্টলি রেসপন্সেবল ইনডিভিজ্যুয়াল। মিটিংয়ের এজেন্ডার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত মানুষগুলোই সভাসদ হতেন। অন্য কেউ নয়। অ্যাপলের যেকোনো মিটিংয়ে ‘ডিআরআই’ একটি প্রচলিত শব্দ হয়ে দাঁড়ায়। স্টিভ জিজ্ঞেস করতেন, এ মিটিংয়ে ডিআরআই কে কে? এ পদ্ধতিতেই আইপড টিম থেকে গ্লোরিয়া লিনকে ফ্লিপবোর্ডে নেওয়া হয়। কারণ তিনি ফ্লিপবোর্ডের ডিআরআই। বড় মাপের প্রতিষ্ঠানের হাজারো কাজকে সুষ্ঠুভাবে ভাগ করে দিতে এটি জবসের এক অনন্য পদ্ধতি।</p> <p><strong>প্রেজেন্টেশন নিয়ে ব্যস্ততা থাকবে না</strong></p> <p>‘স্টিভ জবস’ বায়োগ্রাফিতে ওয়াল্টার আইজ্যাকসন লিখেছেন, অফিশিয়াল প্রেজেন্টেশনকে রীতিমতো ঘৃণা করতেন জবস। প্রতি বুধবার দুপুরে মার্কেটিং এবং বিজ্ঞাপন বিভাগের সঙ্গে এজেন্ডাবিহীন মিটিং করতেন তিনি। সেখানে স্লাইড শো নিষিদ্ধ ছিল। সেখানে কেউ প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে পরিকল্পনার কথা তুলে ধরতেন না। সবাই নিজ নিজ কল্পনাপ্রসূত পরিকল্পনার কথা আবেগের সঙ্গে তুলে ধরতেন। জবস একবার আইজ্যাককে বলেছিলেন, ‘চিন্তার বদলে স্লাইডের মাধ্যমে মানুষ যেভাবে প্রেজেন্টেশন করে, তা ঘৃণা</p> <p>করি আমি। এর মাধ্যমে মানুষ তার কাজ ও চিন্তার মাঝে একাত্মতার যোগ ঘটাতে পারে না। তাই চিন্তা এবং তা প্রকাশের মাধ্যমেই সর্বোত্কৃষ্ট প্রেজেন্টেশন তৈরি করা যায়।</p> <p>-- বিজনেস ইনসাইডার অবলম্বনে সাকিব সিকান্দার</p> <p> </p>