<p>বোরখায় ঢেকে নিয়ে কোলের ছেলেকে স্তন্যপান করাচ্ছিলেন মা। ‘অপরাধ’ তাঁর এইটুকুই। আর সেই ‘অপরাধ’-এর শাস্তিতে পেলেন নির্মম মৃত্যুদণ্ড। পাশবিকভাবে তাঁকে হত্যা করে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস-এর আল-খানসা ব্রিগেড।</p> <p>আইএস-এর হাতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নারী জঙ্গিদের বিশেষ ব্রিগেড। যাদের কাজ জঙ্গিগোষ্ঠীর কট্টরপন্থী ভাবধারাকে ছড়িয়ে দেওয়া। এবং তা বহাল রাখা। প্রায় ৬০ জন ব্রিটিশ মহিলা রয়েছে এই আল খানসায়।</p> <p>কীভাবে কাজ করে আল খানসা?</p> <p>সিরিয়ার রাক্কার প্রাক্তন বাসিন্দা, অধুনা দক্ষিণ টার্কি নিবাসী আয়শা জানালেন, মায়ের কাছ থেকে প্রথমে সন্তানকে আলদা করে নেয় জঙ্গিরা। অন্য মহিলার হাতে তুলে দেয় ওই বাচ্চাকে। আর তারপর নির্মমভাবে হত্যা করে মাকে। আইএস-এর পৃষ্ঠপোষক এক সোশাল সাইট জানিয়েছে, খুন করার আগে ওই মহিলার হাত-পা কেটে তাঁকে বিকলাঙ্গ করে দেওয়া হয়। তারপর তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে জঙ্গিগোষ্ঠী।</p> <p>বর্ববতার উদাহরণে বরাবরই নিজেদেরকে ছাপিয়ে গেছে আইএস। পণবন্দিদের ঝলসে মারা থেকে কিশোরী-যুবতীদের যৌনদাসী বানানো, বারবারই খবরের শিরোনামে এসেছে মধ্যপপ্রাচ্যের এই জঙ্গিগোষ্ঠী।</p> <p>আল-খানসার বিধান...</p> <p>আল-খানসার বিধান অনুযায়ী আইএস অধ্যুষিত রাক্কায় পুরুষের সঙ্গে ছাড়া কোনও মহিলার ঘরের বাইরে বেরনো বা ঘুরে বেড়ানো নিষিদ্ধ। সেইসঙ্গে রয়েছে পোশাকবিধিও। প্রাপ্তবয়স্ক যে কোনও কিশোরী ও যুবতিকে পড়তে হবে শরীর ঢাকা পোশাক। কোনও মেয়ের শরীরের কী আদল, তা যাতে বোঝা না যায় তার জন্য কমপক্ষে ২টি করে গাউন পড়তে হবে। হাত ঢেকে রাখতে হবে গ্লাভসে। কোনওভাবেই যাতে সূর্যের আলোয় মুখ দেখা না যায়, তাই মুখ ঢেকে রাখতে হবে অন্তত তিনটি বোরখায়। সেইসঙ্গে যে সে রঙের পোশাক পড়লেও কিন্তু চলবে না ! বিবাহিত মহিলাকে পড়তে হবে কালো রঙের পোশাক। অবিবাহিত, বিবাহবিচ্ছিন্না ও বিধবাদের জন্য পোশাকের রঙের বিধান যথাক্রমে সাদা, নীল ও সবুজ।</p> <p><br /> কোনও নারী যদি এই নিয়ম ভাঙেন, তাহলে তাঁর নিয়তি মৃত্যুদণ্ড। শাস্তিস্বরূপ জনসমক্ষে বালির মধ্যে জীবন্তকবর দেওয়া হয় তখন সেই নারীকে।</p> <p>আইএস-এর হাতে পণবন্দি হয়ে থাকা পালিয়ে আসা এক স্কুলশিক্ষিকা বললেন, বন্দিদশায় জানলা দিয়ে বাইরে তাকানোও ছিল অপরাধ। যদি কোনও মহিলা ভুলক্রমে জোর গলায় কথা বলে ফেলতেন তাহলে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত ছিল। এমনকী, গা থেকে পারফিউমের গন্ধ বেরনোও ছিল ঘোরতর অপরাধ।</p> <p>স্কুলশিক্ষিকার স্মৃতিচারণাতেও উঠে এসেছে আল-খানসার ভয়াবহ অত্যাচারের কথা। বলে চলেন, “বোরখার মধ্যে দিয়ে আমার চোখ দেখা যাচ্ছিল। আর তাই আমাকে চাবুক মারা হয়। কীধরনের শাস্তি তুমি নেবে, তা আবার পছন্দও করতে দিত জঙ্গিরা! হয় চাবুকাঘাত নয়তো কামড়। কোনও কোনও নারীকে শাস্তিস্বরূপ কামড়ে ক্ষতিবক্ষত করত জঙ্গিরা।</p>