<p>যৌন নির্যাতনের শিকার হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগী নানা হয়রানির আশঙ্কায় অভিযোগ করতে চান না। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেও নানা ধরনের বিরূপ মন্তব্যের শিকার হন ভুক্তভোগীরা।</p> <p>পাকিস্তানে সম্প্রতি জয়নব নামে ছয় বছর বয়সের এক শিশু ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তবে জানা গেছে শুধু এ ঘটনাই নয়, সেখানে আরো বহু ঘটনা ঘটেছে একই ধরনের। এর প্রতিক্রিয়ায় যেন ফুঁসে উঠেছে পুরো পাকিস্তান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ধর্ষণসহ যৌন নির্যাতনের নানা ঘটনার কথা প্রকাশ করছেন নারীরা। তাতে উঠে আসছে যৌন নির্যাতনের শিকার হলেও নারীরা অভিযোগ করতে চান না। ফলে বাড়তে থাকে নির্যাতনকারীর স্পর্ধা। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে তাই যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেই বিষয়টি যেন নির্যাতনের শিকার বা ভিকটিম অভিযোগ করতে পারে সেজন্য কিছু করণীয় নিয়েও আলোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।</p> <p>আরো পড়ুন :<a href=\"http://www.kalerkantho.com/online/world/2018/01/14/589283\"> সিরিয়াল ধর্ষকের পাল্লায় পড়েছিল জয়নব</a></p> <p>বর্তমানে মি টু হ্যাশট্যাগের কারণে বহু নারী যৌন নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ করছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে অতীতে নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হলেও নারীরা তা প্রকাশ করেননি। এ অবস্থায় একজন নারী যেন তার প্রতি যৌন নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ করতে পারেন সহজেই, সেজন্য কী করা উচিত? এ প্রসঙ্গে কয়েকটি বিষয় উঠে এসেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও।</p> <p>ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের পরে বেশিরভাগ নারীই মানসিকভাবে চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন হন, অনেকেই আবার আত্মহত্যাও করে থাকেন। এছাড়া পরিবারের সদস্যসহ আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলেন। এ অবস্থায় ধর্ষণের শিকার নারীর মানসিক বিপর্যয় ঠেকাতে পরিবার ও কাছের স্বজনদের যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন। অভিযোগ গ্রহণকারীরও প্রয়োজন সচেতন হয়ে মন্তব্য করা। এক্ষেত্রে করণীয় কী হতে পারে, তার কিছু নজির উঠে এসেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই-</p> <p><strong>জিজ্ঞাসা করবেন না, ‘এত দেরিতে অভিযোগ কেন?’</strong><br /> যখনই নারীরা যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেন দেরি করেন তখনই তাদের জিজ্ঞাসা করা হয়, এত দেরিতে কেন? এ বিষয়টা মানুষ মাত্রই বোঝা উচিত যে, কেন নারীরা যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করতে দেরি করে। বাস্তবে নানা ধরনের সমস্যা কিংবা লোকলজ্জার ভয়ে সঠিক সময়ে তারা অভিযোগ করেন না। কিন্তু তার মানে এটা নয় যে, দেরি হলে অভিযোগ করা যাবে না।</p> <p>আরো পড়ুন : <a href=\"http://www.kalerkantho.com/home/printnews/588385/2018-01-12\">পাকিস্তানের কাসুরে বিক্ষোভ চলছে</a></p> <p><strong>বিশ্বাস করুন এবং সহায়তা করুন</strong><br /> যৌন নির্যাতনের ঘটনা যে ঘটছে এটা অত্যন্ত বাস্তব বিষয়। আর তাই যৌন নির্যাতনের ঘটনাকে অবিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। অনেক যৌন নির্যাতনের শিকার অভিযোগকারীই জানিয়েছেন, তারা অভিযোগ করতে চাননি, কারণ এটা মানুষের বিশ্বাস হবে না। যদিও বাস্তবে তা ঘটেছিল।</p> <p><strong>ভিকটিমকে দোষ দেবেন না</strong><br /> যৌন নির্যাতনের শিকারকে প্রায়ই মানুষ দায়ী করতে চায়। তার পোশাক, আচরণ, সঙ্গ কিংবা অন্য কোনো বিষয়কে যৌন নির্যাতনের জন্য দায়ী করার প্রবণতা থাকে অনেকেরই। তবে এটি মোটেই কাম্য নয়। যৌন নির্যাতনের জন্য কোনো অজুহাতই গ্রহণযোগ্য নয়।</p> <p><strong>ভাষা সাবধান</strong><br /> যৌন নির্যাতনের শিকার যদি অভিযোগ জানাতে গিয়ে দুর্ব্যবহারের শিকার হন তাহলে তার মতো দুঃখজনক ঘটনা আর থাকে না। নির্যাতনের শিকার মানুষের দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া উচিত সবারই। তার সঙ্গে এমন কোনো ভাষা ব্যবহার করা উচিত নয়, যা মৌখিক নির্যাতনের সমতুল্য কিংবা তাকে আঘাত করে। সহানুভূতির সঙ্গে তার অভিযোগ শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।</p> <p>সূত্র : ডন</p>