<p>ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফার্টিলিটি কেয়ার সেন্টারে সূচিত হয়েছে ‘বন্ধ্যাত্ব দূরীকরণ’ (স্বাভাবিকভাবে সন্তান জন্মদানে অক্ষমদের বিশেষ পদ্ধতিতে সন্তান লাভ) চিকিৎসায় সফলতার নবদিগন্ত। বাংলাদেশে সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে এখানেই প্রথম শুরু হয় বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসা। হাসপাতালের ফার্টিলিটি সেন্টারের কর্মীদের দাবি, ২০১৪ সালে ঢামেক হাসপাতালে যাত্রা শুরুর পর থেকে বাংলাদেশে এ চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেকখানিই এগিয়ে গেছে। </p> <p>গত ৩ জানুয়ারী ২০১৮ ঢামেক হাসপাতালের এই সেন্টারে প্রথম পূর্ণাঙ্গ সাফল্য আসে। এ দিন এখানে জন্ম হয় প্রথম সফল IUI (Intra-Uterine Insemination বা জরায়ু-অভ্যন্তরীণ প্রজনন) শিশু। ছেলে শিশুটির নাম রাখা হয়েছে রামিম আরহাম। </p> <p><img alt=\"\" src=\"/ckfinder/userfiles/images/2018/JANUARAY-2018/17/Dr_iui_newborn.jpg\" style=\"border-style:solid; border-width:2px; height:400px; width:600px\" /></p> <p><span style=\"color:#B22222\"><em>ডা. আবিদা সুলতানার কোলে সদ্যোজাত আইইউআই শিশু রামিম আরহাম । ছবি : কালের কণ্ঠ</em></span></p> <p>শিশুটির বাবা হাসান তারেক আর মা হোসনে আরা এখন যেন হাতে আকাশের চাঁদ পেয়েছেন- তাদের আনন্দ যেন সীমা মানছে না।</p> <p>ঢামেক সূত্র জানায়, শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত এই হাসপাতালে করা আইইউআই-সমূহের মধ্যে এটিই প্রথম পূর্ণাঙ্গ সাফল্য লাভ করে। সফলভাবে শিশু জন্মের ঘটনাও এটিই প্রথম। তবে মা ও শিশুর জীবনের নিরাপত্তায় সিজারিয়ান সেকশন অপারেশনের মাধ্যমে ডেলিভারিটি সম্পন্ন হয়। </p> <p>হাসপাতালের ইমার্জেন্সি গাইনি অপারেশন থিয়েটারে পদ্ধতিটি সম্পন্ন করেন সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আবিদা সুলতানা (Gynae-obs)। তিনি এই কেসের Clinical Embryologist হিসেবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন।</p> <p>হাসপাতাল সূত্র আরো জানায়, এক নার্স দম্পতি ৮ বছরের বিবাহিত জীবনের ৭ বছর ধরেই একটি সন্তান আশা করে আসছিলেন। কিন্তু তা সম্ভব হচ্ছিল না কিছু স্বাস্থ্যগত জটিলতার কারণে। একপর্যায়ে ঢামেক হাসপাতালে সব ধরনের প্রয়োজনীয় পরীক্ষার পর IUI পদ্ধতি সম্পন্ন করা হয়। </p> <p><img alt=\"\" src=\"/ckfinder/userfiles/images/2018/JANUARAY-2018/17/IuI_3_dmc_dhaka.jpg\" style=\"border-style:solid; border-width:2px; height:400px; width:293px\" /></p> <p><span style=\"color:#B22222\"><em>মা হোসনে আরার কোল আলো করে এসেছে আরহাম</em></span></p> <p>এই কর্মযজ্ঞের ধারাবাহিকতায় গত বছরের ৭ জুন সংশ্লিষ্ট নারীর প্রেগনেন্সি টেস্ট পজিটিভ হয় এবং গত ৩ জানুয়ারি  সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে একটি সুস্থ সবল শিশুর (৩.৯ কেজি) জন্ম হয়।</p> <p>হাসপাতালের ফার্টিলিটি কেয়ার সেন্টারের প্রফেসর ডা. নিলুফার সুলতানার নেতৃত্বে পরিচালিত গুরুত্বপূর্ণ এই চিকিৎসাপদ্ধতি দেশের অনেক নিঃসন্তান দম্পতির বুকে জাগাবে আশার আলো। বেসরকারি হাসপাতালে বা বিদেশে এই পদ্ধতি ব্যয়বহুল হওয়ায় দেশের সাধারণ দম্পতি যারা এমন সমস্যার শিকার- তাদের হাতের নাগালের বাইরেই রয়ে গেছে এই চিকিৎসাসুবিধা। এখন ঢামেক হাসপাতালে এই পদ্ধতির সফলতা অনেকের মুখেই আনবে আশা ও আনন্দের হাসি।  </p> <p>'সন্তান হয় না' এমন দম্পতিদের সমসাময়িককালে বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। এসবের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি হলো আইইউআই। </p> <p><img alt=\"\" src=\"/ckfinder/userfiles/images/2018/JANUARAY-2018/17/IuI_3_dmc_dhaka_baby_mother.jpg\" style=\"border-style:solid; border-width:2px; height:400px; width:286px\" /></p> <p><span style=\"color:#B22222\"><em>হাসপাতালকর্মী-স্বজনসহ মেডিক্যাল টিমের সঙ্গে মায়ের কোলে আরহাম । ছবি : কালের কণ্ঠ</em></span></p> <p><span style=\"color:#B22222\"><strong>আইইউআই পদ্ধতি</strong></span><br /> আইইউআই কায়দায় সুস্থ ও সবল শুক্রাণুগুলোকে পৃথক করে সরাসরি জরায়ুর ভেতর ডিম্বাণুর সঙ্গে মিলন বা মিলিয়ে দেওয়া হয়। এই পদ্ধতির মাধ্যমে প্রায় শতকরা ৭০ থেকে ৮০ জন দম্পতিকে (যাদের প্রজননসংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে) এখন দেশেই চিকিৎসা করা যায়। স্বামী এবং স্ত্রীকে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তারা কোন পদ্ধতির মাধ্যমে চিকিৎসা দেবেন তা নির্ণয় করবেন ভ্রূণ বিশেষজ্ঞ।</p>