<p>দক্ষিণ কোরিয়ায় আজ শুক্রবার শুরু হচ্ছে শীতকালীন অলিম্পিকের আসর। এর ঠিক এক দিন আগে সামরিক কুচকাওয়াজ করল উত্তর কোরিয়া। তবে গতকালের কুচকাওয়াজে সামরিক শক্তির প্রদর্শন থাকলেও তা অন্যান্যবারের মতো রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়নি। আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বাইরের কোনো গণমাধ্যমকর্মীকেও।</p> <p>এদিকে পিয়ংইয়ং জানিয়েছে, অলিম্পিক গেমসের সময় দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কোনো বৈঠকের আগ্রহ তাদের নেই।</p> <p>পিয়ংইয়ংয়ের (উত্তর কোরিয়ার রাজধানী) পরমাণু কর্মসূচি ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিয়ে কয়েক মাস ধরে দুই কোরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা চলছে। কিন্তু অলিম্পিক গেমসের অছিলায় সেই উত্তেজনা এখন অনেকটাই প্রশমিত। আজ থেকে শুরু এই অলিম্পিকে বড় একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে উত্তর কোরিয়া। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দুই কোরিয়ার প্রতিনিধিদের এক পতাকা নিয়ে হাঁটার কথা। এ ছাড়া আইস হকিতে দুই কোরিয়া মিলে করা হয়েছে এক দল।</p> <p>কিন্তু এমন ‘সৌহার্দ্যপূর্ণ’ পরিবেশের মধ্যেও গতকাল বৃহস্পতিবার সামরিক কুচকাওয়াজ করে পিয়ংইয়ং। তাতে স্বাভাবিকভাবেই উপস্থিত ছিলেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী রি সল জু, ‘সেরিমোনিয়াল’ (আচার-অনুষ্ঠানসংক্রান্ত) বিভাগের প্রধান কিম ইয়ং ন্যাম। আজ শুক্রবার উত্তর কোরিয়ার যে প্রতিনিধিদলটি দক্ষিণ কোরিয়া যাবে, সেটির প্রধান করা হয়েছে ন্যামকে। এ ছাড়া উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে যাবেন কিম জং উনের ছোট বোন কিম ইয়ো-জংও।</p> <p>সামরিক কুচকাওয়াজে ছিল বিভিন্ন অস্ত্রের প্রদর্শনী। এসবের মধ্যে ছিল ‘মিসাইল ট্রান্সপোর্টারস’ও। গতকালের কুচকাওয়াজ আয়োজন করা হয় উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে। অন্যান্যবার এই আয়োজন হয় এপ্রিলে। কিন্তু এবার তা এগিয়ে আনা হয়েছে। এবারের কুচকাওয়াজ অবশ্য রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়নি। আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বিদেশি সাংবাদিকদেরও।</p> <p>বিশ্লেষকরা বলছেন, এর মাধ্যমে পিয়ংইয়ংয়ের মূলত দুই ধরনের উদ্দেশ্য বোঝা যায়। প্রথমত, তারা নিজেদের ‘ডি ফ্যাক্টো নিউক্লিয়ার স্টেট’-এর উপাধি স্বাভাবিককরণ করতে চাইছে। পাশাপাশি ‘সৌহার্দ্য’ দেখিয়ে নিজেদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞার ভারও কমাতে চাইছে।</p> <p>এদিকে আগামীকাল শনিবার উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দুপুরের খাবার খাওয়ার কথা দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের। অন্যদিকে গতকাল রাতে দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছানোর কথা যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের। যদিও গতকাল পিয়ংইয়ংয়ের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, কোনো মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকের আগ্রহ তাদের নেই।</p> <p>অন্যদিকে জাপানের টোকিওতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মাইক পেন্স বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই উত্তর কোরিয়া ইস্যুর শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়। কিন্তু ‘যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি কিংবা দৃঢ় সংকল্পকে খাটো করে দেখার উপায় নেই’ বলেও পিয়ংইয়ংকে সতর্ক করে দেন তিনি। সূত্র : বিবিসি, এএফপি।</p>