<p>মোংলা বন্দর হচ্ছে দেশের দ্বিতীয় প্রধান সমুদ্রবন্দর। চট্টগ্রাম বন্দরে লাইটারেজ সংকট ও জাহাজজটের কারণে অনেক ব্যবসায়ী চট্টগ্রাম ছেড়ে মোংলা বন্দরে পণ্য খালাস করতে যান। কিন্তু পোর্ট ডিউজ, রিভার ডিউজ, কাস্টমসের প্রক্রিয়াগত নানা খরচ চট্টগ্রামের চেয়ে বেশি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা আগ্রহ হারাচ্ছেন। অনেক জাহাজ ফিরিয়ে আনা হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরে। জলসীমায় পৌঁছানোর পর একটি জাহাজ এক মাস বন্দরে রাখতে চট্টগ্রাম বন্দরে যে খরচ দিতে হয়, মোংলা বন্দরে তার খরচ চার গুণের বেশি। এ ছাড়া মোংলা বন্দরে জাহাজের সার্ভে ও কাস্টমসের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতেই গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা। ফলে ব্যবসায়ীরা মোংলা বন্দরের চেয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাস করতেই বেশি আগ্রহী। অন্যদিকে মোংলা বন্দরকে কেন্দ্র করে দেশের অনেক শীর্ষ শিল্প গ্রুপের শতাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। ফলে এই বন্দরে তাদের অতিরিক্ত পরিচালন ব্যয় হচ্ছে।</p> <p>সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী দেশে সরকারিভাবে আমদানি করা মোট ভোগ্যপণ্য এবং সারের ৪০ শতাংশ মোংলা বন্দরে খালাস বাধ্যতামূলক। ২০০১ সালে এই নির্দেশনা জারির পর এ বন্দরে জাহাজ আসা বেড়েছে। জাহাজ বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজস্ব আয়ও বেড়েছে। ওদিকে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ চলছে। এই সেতু নির্মিত হলে এই বন্দরকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় সম্প্রতি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক সার্কুলারে মোংলা বন্দরের ট্যারিফ নতুন করে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। বিপত্তি সেখানেই। লাইটারেজ জাহাজ সংকটের কারণে অনেক ব্যবসায়ী মোংলা বন্দরে যেতে চান। কিন্তু খরচের দিকে তাকিয়ে তাঁরা নিরুৎসাহ হচ্ছেন।</p> <p>সাধারণত ব্যবসায়ীরা যেকোনো পণ্য আমদানির পর নিজেদের চাহিদা ও সুবিধা অনুযায়ী জাহাজ থেকে তা খালাস করে থাকেন। কিন্তু পোর্ট ডিউজ বেশি হওয়ার কারণে তাঁদের বেশি অর্থ গুনতে হচ্ছে। উভয় বন্দরের জন্য একই ডিউজ থাকলে ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত খরচ করতে হতো না। বন্দর ব্যবহার বাড়ত। বন্দরের সক্ষমতা পুরোপুরি কাজে লাগানো যেত। এতে মোংলা বন্দরের রাজস্ব আরো বেশি হতো। কিন্তু তা না করে খরচ বাড়িয়ে ঘাটতি পোষাতে গিয়ে অবস্থা আরো খারাপের দিকেই যাচ্ছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মনোযোগ আকর্ষণের দাবি রাখে। একই দেশের দুই বন্দরে দুই ধরনের ব্যবস্থা কোনোভাবেই কাম্য নয়। চট্টগ্রাম ও মোংলা উভয় বন্দরের জন্য একই ডিউজ নির্ধারণ করা হোক।</p>