<p><strong>সৃজনশীল প্রশ্ন</strong></p> <p><strong>তৃতীয় অধ্যায়</strong></p> <p><strong>উদ্দীপক</strong> : জিং তার মা-বাবাসহ পৃথিবীর মানচিত্রের একেবারে পূর্ব প্রান্তের দেশটিতে অবস্থান করে, যা একটি বিশেষ মহাদেশের অন্তর্গত। মহাদেশটির ভূ-প্রকৃতি ও জলবায়ু যেমন বৈচিত্র্যপূর্ণ, অন্যদিকে বিভিন্ন ধর্মের উদ্ভব ঘটেছে এই মহাদেশটিতে।</p> <p>ক) এশিয়া ও ইউরোপ মহাদেশের মাঝখানে কী অবস্থিত?</p> <p>খ) এশিয়ার বিভিন্ন দেশগুলোর মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে উঠেছে কেন?</p> <p>গ) ‘উদ্দীপকে উল্লিখিত মহাদেশটিতে বিভিন্ন ধর্মের উদ্ভব ঘটেছে’—উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।</p> <p>ঘ) জিং যে মহাদেশটিতে অবস্থান করছে তার ভূ-প্রকৃতি ও জলবায়ু বৈচিত্র্যপূর্ণ বলা হয় কেন, তা বিশ্লেষণ করো।</p> <p>উত্তর : ক) রাশিয়ার ইউরাল পর্বতমালা অবস্থিত।</p> <p>খ) সাগর-মহাসাগর ও নদ-নদীর সুবিধা থাকায় এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে উঠেছে।</p> <p>এশিয়া পৃথিবীর বৃহত্তম মহাদেশ। পৃথিবীর বড় নদীগুলোর সাতটি এশিয়া মহাদেশে অবস্থিত। এই মহাদেশে রয়েছে প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ, যা প্রাচীনকাল থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে আকৃষ্ট করেছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রধান সংযোগ পথ হিসেবে সাগর-মহাসাগর ও নদ-নদী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সাগর-মহাসাগর ও নদ-নদীর সুবিধা থাকায় প্রাচীনকাল থেকেই তাই এশিয়া মহাদেশের দেশগুলোর নিজেদের মধ্যে ও বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে উঠেছে।</p> <p>গ) পৃথিবীর প্রায় সব প্রধান ধর্মের উদ্ভব ঘটেছে এশিয়ায়।</p> <p>প্রাচীন ধর্মের মধ্যে হিন্দু, জৈন ও বৌদ্ধধর্মের জন্ম এশিয়ায়। এর পর ইহুদি, খ্রিস্টান ও সর্বশেষ ইসলাম ধর্মের উদ্ভব ঘটেছে এই এশিয়ায়। সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিকাশ ও জ্ঞানচর্চার বিকাশ ঘটে এভাবে।</p> <p>এশিয়া মহাদেশের ভারতবর্ষে হিন্দু, জৈন ও বৌদ্ধধর্মের উদ্ভব ঘটে। পরবর্তী সময়ে চীন, জাপানসহ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে বৌদ্ধ ধর্মের প্রসার ঘটে। ইহুদি এবং পরে খ্রিস্টধর্মের উদ্ভব ঘটে দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া বা মধ্যপ্রাচ্য থেকে। একই স্থান থেকে ইসলাম ধর্ম সপ্তম শতকে পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। সৌদি আরবের মক্কায় মুসলমানদের পবিত্র কাবা শরিফ অবস্থিত। অন্যদিকে হিন্দুদের পবিত্র তীর্থস্থান গয়া ও কাশি এবং বৌদ্ধদের পবিত্র তীর্থ ভারতে অবস্থিত। আবার পৃথিবীর তিনটি প্রধান ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠী মুসলমান, খ্রিস্টান ও ইহুদিদের পবিত্র ধর্ম স্থান জেরুজালেম শহরে অবস্থিত।</p> <p>ঘ) এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতি ও জলবায়ু ঋতুভেদে বিভিন্ন রকম বলে এশিয়া মহাদেশের ভূ-প্রকৃতি ও জলবায়ুকে বৈচিত্র্যপূর্ণ বলা হয়।</p> <p>এই মহাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চল সমতল। বাকি অংশ পাহাড়-পর্বত ও নদ-নদী দ্বারা পরিবেষ্টিত। আবার কোনো অঞ্চলে অতিরিক্ত তাপ, শীত ও গ্রীষ্মে বৃষ্টিপাতের তারতম্য পরিলক্ষিত হয়।</p> <p>উত্তরে আছে যেমন বরফে আচ্ছাদিত এলাকা সাইবেরিয়া, তেমনি পশ্চিমে আছে উত্তপ্ত মরুভূমি। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে নদীবিধৌত নিম্ন সমভূমি। পূর্ব দিকে রয়েছে আগ্নেয় দ্বীপ। পৃথিবীর বৃহত্তম হ্রদ কাসপিয়ান সাগর এবং বড় নদীগুলোর সাতটি এশিয়া মহাদেশে অবস্থিত। সেই সঙ্গে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট এই মহাদেশে অবস্থিত। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বৃষ্টিবহুল গ্রীষ্মকাল এবং বৃষ্টিহীন মৌসুমি জলবায়ু ও মরু অঞ্চলে বৃষ্টিহীনতা ও উষ্ণতার পার্থক্য রয়েছে। আবার শীতকালে বৃষ্টি কিন্তু গ্রীষ্মকালে সাধারণত বৃষ্টিহীনতা—এরূপ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ভূমধ্য সাগরীয় জলবায়ু এশিয়া মহাদেশের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।</p> <p>উপরোক্ত বৈশিষ্ট্য থাকায় এশিয়া মহাদেশের ভূ-প্রকৃতি ও জলবায়ুকে বৈচিত্র্যপূর্ণ বলা হয়।</p>