<div> আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ‘আনসারুল্লাহ’ বেশ পরিচিত সংগঠন। তবে বাংলাদেশে এর অস্তিত্ব নিয়ে রয়েছে মতভেদ। উগ্র ইসলামী মৌলবাদ প্রচারের দায়ে অভিযুক্ত এ সংগঠনের কার্যক্রম নিয়ে নানা সময় গোয়েন্দারা শঙ্কা প্রকাশ করলেও স্পষ্ট কোনো ধারণা দিতে পারেনি। গত পাঁচ বছর কয়েকটি আলোচিত হত্যাকাণ্ডের সূত্রে এসে যায় আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, আনসারুল্লাহ-২, আনসারুল্লাহ-৭, আনসার আল ইসলামসহ নানা সংগঠনের নাম। কয়েকজন কথিত জঙ্গিকে গ্রেপ্তারের পর তাদের এসব সংগঠনের নেতা হিসেবে দাবি করে পুলিশ। সম্প্রতি অভিজিৎ রায়কে হত্যার পর আনসারুল্লাহ-৭ নামের একটি সংগঠনের সন্ধানে নেমেছে পুলিশ। কিন্তু এখন পর্যন্ত সংগঠনটির ব্যাপারে স্বচ্ছ কোনো ধারণা মেলেনি। কারা এর নেতৃত্বে, কী তাদের সাংগঠনিক কাঠামো, লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য- এখনো এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই গোয়েন্দাদের কাছে।</div> <div> গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশে আনসারুল্লাহর অনুসারী থাকলেও তা সংগঠিত নয়। বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের দলছুট কর্মীরা একত্র হওয়ার জন্য এই নামে ‘প্ল্যাটফর্ম’ গড়ার চেষ্টা করছে বলেই প্রতীয়মান। উদ্দেশ্য দেশে অস্থিরতা তৈরি। সে ক্ষেত্রে তাদের অনলাইন প্রচারণার বেশির ভাগ অংশজুড়েই রয়েছে জিহাদ, কতল ও শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন বিষয়গুলো। আনসারুল্লাহ টিমের সাম্প্রতিক প্রচারণায় রয়েছে সামরিক বাহিনীকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের আহ্বানও। আদর্শিক প্রচারণার চেয়ে তাদের কর্মকাণ্ডে স্পষ্ট রাজনৈতিক অভিলাস ও আতঙ্ক সৃষ্টি। সব মিলিয়ে এক ধরনের ধোঁয়াশার মধ্যেই রয়েছে আনসারুল্লাহর কর্মকাণ্ড ও নেতৃত্ব। অভিজিৎ হত্যার ঘটনায় তদন্তসংশ্লিষ্টরা তাদেরই সন্দেহের শীর্ষে রেখে কাজ শুরু করেছে। তবে কারা আনসারুল্লাহ টিমের সদস্য, কে তাদের নেতা, কোন আদর্শের ভিত্তিতে তারা মানুষ হত্যা করছে, তা এখনো অজানা। ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা আনসারুল্লাহ টিমের সদস্যদের জবানবন্দি বিশ্লেষণে রীতিমতো গোলকধাঁধা তৈরি হয়েছে। মূলত আনসারুল্লাহ বাংলা টিম পৃথক কোনো সংগঠন নাকি জঙ্গিদের সমন্বিত কোনো উইং- সে প্রশ্নই এখন বড় হয়ে উঠেছে।</div> <div> ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনগুলোর সহায়তা নিয়ে বাংলাদেশসহ এশিয়াজুড়ে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে চায় আনসারুল্লাহ বাংলা টিম। এ লক্ষ্যে তারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জিহাদে উদ্বুদ্ধ করছে। আনসারুল্লাহ সদস্যরা আল-কায়েদা নেতাদের ভিডিও বক্তব্য দেখে ও অনলাইন যোগাযোগের মাধ্যমে অনুপ্রাণীত হচ্ছে বলে তথ্য মিলছে। কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশি ও জঙ্গি নেতা সিরিয়ার নুসরা ব্রিগেডে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাংলাদেশে আল-কায়েদা ইন ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট (একিউআইএস) নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছিল। সে উদ্যোগ ভেস্তে যাওয়ায় এখন আনসারুল্লাহর মাধ্যমে জঙ্গি নেটওয়ার্ক বাড়ানোর চেষ্টা চলছে বলে মনে হচ্ছে। তবে তাদের নেটওয়ার্ক সম্পর্কে এখনো ধারণা স্পষ্ট নয়।</div> <div> র‌্যাবের গোয়েন্দা ইউনিট ও গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তাদের মতে, আনসারুল্লাহ সম্পর্কে যে ধরনের তথ্য মিলেছে, তাতে তাদের আদর্শিক অবস্থান ও সাংগঠনিক কাঠামো একেক সময় একেক রকম দেখা গেছে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, আনসারুল্লাহর কর্মীরা এসেছে জেএমবি, হরকাতুল জিহাদ, হিযবুত তাহ্‌রীর, জামায়াত-শিবিরসহ বিভিন্ন সংগঠন থেকে।</div> <div> অপরাধ বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন, সাম্প্রতিক বেশ কিছু হত্যাকাণ্ডের পর আলোচনায় এসেছে যে জঙ্গি সংগঠন, তাদের ব্যাপারে অনুসন্ধান থেমে যাওয়া দুঃখজনক। যদি কেউ পরিচয় আড়ালে এ নাম ব্যবহার করে থাকে তাও স্পষ্ট হওয়া দরকার। গত বছর রাজশাহীতে নৃশংস খুনের শিকার হন অধ্যাপক শফিউল ইসলাম। তখন আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ-২ নামের একটি সংগঠন ফেসবুকে ওই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে। গোয়েন্দাদের দাবি, এ জাতীয় কোনো সংগঠনের তথ্য তাঁদের কাছে নেই। এখন আলোচনায় আনসারুল্লাহ-৭। এর অস্তিত্ব নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। জঙ্গি কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হরকাতুল জিহাদ (হুজি), জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি), শাহাদত-ই-আল হিকমা, জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমজেবি) ও হিযবুত তাহ্‌রীরকে নিষিদ্ধ করেছে। কিন্তু আনসারুল্লাহ টিমকে নিয়ে কয়েক দফায় তোলপাড় হলেও তাদের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো ব্যবস্থা দেখা যায়নি। একটি মহল বিশেষ উদ্দেশ্যে ‘রহস্যজনক’ এসব সংগঠনকে ব্যবহার করছে বলেও মত দিয়েছেন কেউ কেউ।</div> <div> গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, শক্তি ও নেটওয়ার্ক যেমনই হোক, বর্তমানে জঙ্গি ঘরানার অনেক সংগঠনই দেশে রয়েছে। আবার প্রায়ই নতুন নতুন সংগঠন তৈরি হচ্ছে। সুতরাং আনসারুল্লাহ, আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ নামের কোনো সংগঠন নেই বা তৈরি হয়নি, এমনও বলা যাবে না। ২০১০ সালের দিকে সাভারে এক যুবককে হত্যার দায় স্বীকার করেছিল আনসার আল ইসলাম। কিন্তু পরে এ সংগঠনের কার্যক্রম তেমন একটা চোখে পড়েনি।</div> <div> ২০১৩ সালে গোপীবাগের কথিত পীর লুৎফর রহমান ফারুক, তাঁর ছেলে সারোয়ার ইসলাম মনির, খাদেম মঞ্জুর আলম মঞ্জু, ভক্ত শাহিন, রাসেল ও মুজিবুল সরকারকে একসঙ্গে হত্যার ঘটনায় আনসারুল্লাহ ও জেএমবির নাম আসে। উত্তরায় জেএমবির দলছুট সদস্য রাশিদুল ইসলাম, খুলনার খালিশপুরে কথিত ধর্মীয় নেতা তৈয়েবুর রহমান ও তাঁর কিশোর ছেলে নাজমুম মনিরকে জবাই করে হত্যার পর সন্দেহ প্রকাশ করা হয় জঙ্গিদের এ রকম সংগঠন ঘিরে। ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পল্লবীতে গলাকেটে হত্যা করা হয় ব্লগার রাজীব হায়দারকে। এর আগে উত্তরায় ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীনকেও একইভাবে হত্যার চেষ্টা করা হয়। গত ২৭ আগস্ট রাতে রাজধানীর রাজাবাজারের বাসায় জবাই করা হয় হাইকোর্ট মাজার মসজিদের খতিব ও চ্যানেল আইয়ের ‘কাফেলা’ অনুষ্ঠানের উপস্থাপক এবং ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা নূরুল ইসলাম ফারুকীকে। এসব ঘটনায়ও ‘সন্দেহভাজন’ আনসারুল্লাহর অনুসারীরা। কিন্তু তদন্তগুলো একপর্যায়ে গিয়ে থমকে গেছে বারবার।</div> <div> গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, এরই মধ্যে পাওয়া তথ্য অনুসারে ইরাক ও সিরিয়ায় বেশি সক্রিয় আনসারুল্লাহ প্রকৃতপক্ষে ‘আইএসআই’-এর নির্দেশনা নিয়ে কাজ করছে। বাংলাদেশে জঙ্গি সংগঠন জেএমবি ও হিযবুত তাহ্‌রীরের সম্মিলিত ‘বি-টিম’ হিসেবে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম কাজ শুরু করেছে বলে মনে হয়। গ্রেপ্তার হওয়া বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের কর্মীদের দেওয়া তথ্যে দেখা গেছে, আনসারুল্লাহর অধিকাংশ সদস্য পাকিস্তান ও আফগানিস্তানকেন্দ্রিক জঙ্গি নেতাদের অনুসারী।  আইএসের ইন্ধনে আফগানিস্তান-ফেরত একাধিক জঙ্গি আনসারুল্লাহর নেপথ্যে কলকাঠি নাড়াচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিভ্রান্ত করতেও তারা নানা কর্মকাণ্ড চালাছে। অভিজিৎ হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন শাফিউর রহমান ফারাবী এক সময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। পরে যোগ দেন হিযবুত তাহ্‌রীরে। এ সংগঠনের হয়ে চট্টগ্রাম ও সিলেটে প্রচারণা চালানোর সময় তিনি গ্রেপ্তারও হন। বর্তমানে তাঁর অনলাইন যোগাযোগের সূত্র ধরেই গোয়েন্দারা জানতে পারে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সমন্বয়ক হিসেবে তিনি ভূমিকা রাখছেন। ফারাবী র‌্যাবের হাতে আটক হওয়ার আগেই গোয়েন্দারা তাঁর ফেসবুক ও ব্লগ পর্যালোচনায় দেখতে পায়, শুধু মুক্তচিন্তার মানুষকে হত্যার হুমকি নয়, সরকার পরিবর্তনের জন্য একাধিকবার সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি। তাঁর অনুসারীদের বিভিন্ন বার্তায় সরকারপ্রধান সম্পর্কে নানা খারাপ ধারণা দেওয়ার চেষ্টাও তিনি করেছেন। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, ফারাবী অন্য কাউকে রাজনৈতিক সুবিধা দিতেই এসব নিয়ে অনুসারীদের উত্তেজিত করার চেষ্টা করেছেন। বর্তমানে কাশিমপুর কারাগারে আটক আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান মুফতি মোহাম্মদ জসীমের সঙ্গে তিনি দেখা করারও চেষ্টা করেছেন কয়েক দফায়।</div> <div> গত বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে ঢাকার সেগুনবাগিচা থেকে আসিফ আদনান (২৬) নামের এক যুবককে আটক করা হয়। একটি রক ব্যান্ডের সদস্য আসিফ জিহাদে অংশ নিতে সিরিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় গোয়েন্দা পুলিশ ইস্কাটন থেকে আটক করে ফজলে এলাহী তানজিল নামের আরেক যুবককে। তাঁরা দুজনই আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য বলে দাবি করেন। তাঁদের দেওয়া তথ্যসূত্রে পরে গ্রেপ্তার করা হয় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক সামিউন রহমান ইবনে হামদানকে। তাঁর কাছ থেকে বাংলাদেশে সক্রিয় জঙ্গিদের বেশ কিছু তথ্য মিললেও তাদের নেতৃত্ব সম্পর্কে কোনো ধারণা মেলেনি। রাজীব হায়দার হত্যা মামলা তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা আনসারুল্লাহর সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়। সে হত্যার নেতৃত্বদানকারী রেদোয়ানুল আজাদ ওরফে রানাকে দীর্ঘদিনেও পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। অভিজিৎ হত্যার পর আবার রানা আলোচনায়, কিন্তু সে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমে কী পদে ছিল, এখন কোথায় আছে, তা জানাতে পারেনি গ্রেপ্তার হওয়া সহযোগীরাও।</div> <div> অভিজিৎ হত্যার পর টুইটারে ‘আনসারুল্লাহ বাংলা-৭’ নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে এর দায় স্বীকার করা হয়েছিল। কিন্তু এ টুইট বার্তাটি প্রকৃত পক্ষেই আনসারুল্লাহর কেউ নাকি পরিচয় আড়ালের প্রচেষ্টায় তা করা হয়েছিল সেটি যাচাই করা হচ্ছে। সেই টুইটার অ্যাকাউন্টটি বর্তমানে বন্ধ। বার্তাটি দেশের ভেতর থেকে পাঠানো হয়েছিল কি না, তাও স্পষ্ট হয়নি।</div> <div> পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, প্রগতিশীলদের টার্গেট করে হত্যার মিশনে নামা আনসারুল্লাহ বাংলা টিম কার নেতৃত্বে চলছে তা জানা না থাকলেও গোয়েন্দারা এর কর্মকাণ্ড নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে একাধিক প্রতিবেদনে। উগ্রপন্থী এ সংগঠনের প্রধান মুফতি জসীমউদ্দিন রাহমানীকে গ্রেপ্তারের পর তৎপরতা থেমে যাবে বলে গোয়েন্দারা দাবি করেছিল। কিন্তু তা হয়নি। বরং আনসারুল্লাহ-৭ এবং আনসারুল্লাহ-২ নামের সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। তামীম আল আদনানী নামের এক প্রবাসী বর্তমানে আনসারুল্লাহর হাল ধরেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।</div> <div> ব্লগার রাজীব হায়দার ও আশরাফুল আলমকে হত্যা, আসিফ মহিউদ্দীন, রাকীব মামুন, সর্বশেষ অভিজিৎ রায়ের ওপর হামলার সঙ্গে সরাসরি আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্যরা জড়িত বলে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য রয়েছে। একই গ্রুপের সদস্যরা কৌশলে কখনো আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ, আবার কখনো আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ-২ নামে নিজেদের প্রচারণা চালাচ্ছে বলেই গোয়েন্দাদের মত।</div> <div> র‌্যাব সূত্র জানায়, জেএমবি কিংবা হুজি সদস্যদের বেশির ভাগই কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তারা স্বল্পশিক্ষিত। আর আনসারুল্লাহ বাংলা টিম ও হিযবুত তাহ্‌রীর সদস্যদের বেশির ভাগই উচ্চ শিক্ষিত ও বিত্তশালী পরিবারের সদস্য।</div> <div> গোয়েন্দা পুলিশের দাবি, এর আগে খায়রুল, শফিক, আহসান, আসিফ ও তানজিল নামে বাংলা টিমের কয়েকজন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে খায়রুল বোমা তৈরির কারিগর। খায়রুল গাজীপুরে অবস্থিত ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইলেকট্রনিকসের শেষ বর্ষের ছাত্র। আসিফ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। সম্প্রতি ঢাকায় গ্রেপ্তার হওয়া আনসারুল্লাহর গণমাধ্যম প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী মোরশেদ আলম উচ্চ শিক্ষিত। তিনি আনসারুল্লাহর পক্ষে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও ফেসবুকের শতাধিক পাতা পরিচালনার পাশাপাশি অডিও-ভিডিও বার্তা তৈরি করতেন। কিছুদিন আগে ড্রোন বা স্কোয়াড হেলিকপ্টার তৈরির সরঞ্জামসহ রাজধানীর যাত্রাবাড়ী শহীদ ফারুক সড়কের একটি বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের দুই সদস্যকে। তানজিল হোসেন বাবু (২৬) ও মো. গোলাম মাওলা মোহনকে (২৫) পুলিশ কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে। মোহন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্সে পড়াশোনা করছিলেন।</div> <div> আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নামের যে জঙ্গি সংগঠন আলোচনায় তার প্রতিষ্ঠাতা আমির দাবিদার জসীমউদ্দিন রাহমানী ২০১৩ সালের আগস্টে গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে। তাঁর অনুপস্থিতিতে কারা ও কিভাবে সংগঠন চালাচ্ছে সে বিষয়ে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা মোটেও অবগত নন বলে দাবি করেন। তবে মুফতি জসীমউদ্দিন রাহমানী গ্রেপ্তারের পরপরই টিএফআই সেলে জিজ্ঞাসাবাদে জানান, এ সংগঠনের সামরিক উপদেষ্টা সেনাবাহিনীর পলাতক মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক। বিভিন্ন লেখা পড়ে জিহাদের উদ্দেশ্যে মেজর জিয়া তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। জিয়া ‘ইসলামী শাসন’ প্রতিষ্ঠায় ‘জিহাদ’ কার্যকর করার জন্য দেশে বেশ কয়েকটি জঙ্গি সংগঠনকে একত্র করার পাশাপাশি এদের সঙ্গে আল-কায়েদাসহ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্থাপনেরও চেষ্টায় আছেন বলে দাবি করেন রাহমানী।</div>