ঢাকা, বুধবার ০২ এপ্রিল ২০২৫
১৯ চৈত্র ১৪৩১, ০২ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, বুধবার ০২ এপ্রিল ২০২৫
১৯ চৈত্র ১৪৩১, ০২ শাওয়াল ১৪৪৬

সাব্বিরকে একক সিদ্ধান্তে দলে নেব, প্রশ্নই ওঠে না

notdefined
notdefined
শেয়ার
সাব্বিরকে একক সিদ্ধান্তে দলে নেব, প্রশ্নই ওঠে না

প্রশ্ন : নিউজিল্যান্ড সিরিজের দল কেমন হলো?

মাশরাফি বিন মর্তুজা : খারাপ হয়নি। যারা ছিল, তারাই তো রয়েছে। এক-দুটি পরিবর্তন হয়তো এসেছে। আসলে বিশ্বকাপ মাথায় রেখে স্কোয়াডে খুব বেশি পরিবর্তনের সুযোগ নেই।

এমনকি একাদশেও তেমন একটা না।

প্রশ্ন : আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের আগেই তো বিশ্বকাপ স্কোয়াড ঘোষণার ডেডলাইন। চূড়ান্ত নির্বাচনের আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডেই তাহলে শেষ সুযোগ নয়?

মাশরাফি : প্রায় তাই। কিন্তু ক্রিকেটে শেষের পরও শেষ থাকে।

ফর্মের ব্যাপার রয়েছে, ফিটনেসের ব্যাপার রয়েছে। নিউজিল্যান্ড সফরের দলটিই তাই বিশ্বকাপের স্কোয়াড—তা নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। তবে এখান থেকে খুব বেশি পরিবর্তন যে হবে না, তা বলতে পারেন।

প্রশ্ন : মাত্র এক সিরিজ আগেই ৩৪৯ রান করা ইমরুল কায়েস বাদ পড়েছেন নিউজিল্যান্ড সফরের স্কোয়াড থেকে।

তাঁকে দুর্ভাগা মনে হয় না?

মাশরাফি : দুর্ভাগা মনে না হওয়ার কারণ নেই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে যেভাবে খেলেছে, তা অবিশ্বাস্য। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুটি ম্যাচে সুযোগ পেয়ে রান করতে পারেনি। এরপর একাদশ থেকে বাদ গেল। এখন স্কোয়াড থেকে।

অবশ্যই ওভাবে বিবেচনা করলে ইমরুল দুর্ভাগা।

প্রশ্ন : অফ স্পিনার নাঈম ইসলামকে কি নেওয়া হয়েছে বিশ্বকাপ ভাবনায়?

মাশরাফি : আমি ঠিক নিশ্চিত না। আপাতত নিউজিল্যান্ড সিরিজের কথা ভেবেই ওকে নেওয়া। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনে পাঁচজনের মতো বাঁহাতি থাকবে। আমাদের তাই অফ স্পিনার খুব প্রয়োজন হবে। মিরাজের যদি কোনো সমস্যা হয়, তাহলে স্কোয়াডের ভেতরেই যেন একজন অফ স্পিনার থাকে, সে বিবেচনা থেকে নাঈমকে নেওয়া। কিন্তু বিশ্বকাপ নিয়ে এখনই বলা যাবে না। নিউজিল্যান্ডে নাঈম কেমন করে, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে।

প্রশ্ন : দলে সাব্বির রহমানকে নেওয়ার ব্যাখ্যায় প্রধান নির্বাচক বলেছেন, ‘আমি পরিষ্কার করে দিই, এটি সম্পূর্ণভাবে আমাদের অধিনায়কের পছন্দ।’ এ নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। এরপর কি মিনহাজুল আবেদীনের সঙ্গে আপনার কথা হয়েছে?

মাশরাফি : না, এরপর কথা হয়নি।

অধিনায়ক চেয়েছেন, প্রধান নির্বাচক সেই চাওয়াটাকে সম্মান দেখিয়েছেন। তাই নিউজিল্যান্ড সফরের দলে সাব্বির রহমান। ‘সুযোগটা হাতছাড়া করো না’ কোচ স্টিভ রোডস এটাই কি বলছেন সাব্বিরকে!  ছবি : মীর ফরিদ, চট্টগ্রাম থেকে

প্রশ্ন : সাব্বিরের সঙ্গে কথা হয়েছে?

মাশরাফি : না।

প্রশ্ন : বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসানের সঙ্গে কথা হয়েছে?

মাশরাফি : পাপন ভাইয়ের সঙ্গে এ নিয়ে আমার কখনো কথা হয়নি। এত সামান্য জিনিস যে এত বড় হয়ে গেছে!

প্রশ্ন : সাব্বিরকে নেওয়ার ব্যাপারে আপনি নির্বাচকদের ঠিক কী বলেছিলেন?

মাশরাফি : আমার তো মতামত দেওয়ার চেয়ে বেশি কিছু করার নেই। অন্য অনেক দেশের নির্বাচক প্যানেলে অধিনায়ক থাকেন। আমাদের দেশে তা নেই। সাব্বিরকে আমি একক সিদ্ধান্তে দলে নিয়ে নেব, সে প্রশ্নই ওঠে না। আমি শুধু নিজের মতামত জানিয়েছিলাম।

প্রশ্ন : সাব্বিরকে কেন্দ্র করে যে সমালোচনা হচ্ছে, ভবিষ্যতে এমন কিছু এড়ানোর জন্য অধিনায়ককেও নির্বাচক প্যানেলের অংশ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন?

মাশরাফি : দেখুন, আপনি যখন কোনো দায়িত্বে থাকবেন, তখন মেনে নিতে হবে যে, এখানে সমালোচনা হতে পারে। কারণ মানুষ মাত্রই ভুল করে। আবার এটিও সত্য, যে কাজ করে সে ভুল করে। কাজ না করলে তো ভুল হওয়ার সুযোগ নেই। আমি যদি নির্বাচক প্যানেলে থেকে সমালোচনার শিকার হতাম তাহলে অন্তত সান্ত্বনা পেতাম। কিন্তু এখন তো আমি তা নই। এখন যে নির্বাচক প্যানেলের অংশ কোচ, আবার অধিনায়ক তাঁর কথা ম্যানেজারকে জানান—এ প্রক্রিয়া চালু করেন চন্দিকা হাতুরাসিংহে। তিনি ঠিক করেছেন, তা বলা যাবে না। আবার তিনি ভুল করেছেন, তা-ও বলা যাবে না। তবে অধিনায়কের যা চাওয়ার, তা তিনি যদি সরাসরি নির্বাচক প্যানেলকে বলতে পারেন—তাহলে ভালো।

নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে নিউজিল্যান্ড সফরের ওয়ানডে স্কোয়াডে রাখা হয়েছে সাব্বির রহমানকে। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, ‘এটি সম্পূর্ণভাবে আমাদের অধিনায়কের পছন্দ।’ এর পর থেকেই সমালোচনার তীরে বিদ্ধ মাশরাফি বিন মর্তুজা। কাল চট্টগ্রামের রেডিসন ব্লু হোটেলে নোমান মোহাম্মদকে দেওয়া এই একান্ত সাক্ষাৎকারে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন তিনি। সেখানে ক্রুদ্ধ মাশরাফিকে যেমন পাওয়া গেছে, তেমনি হতাশ মাশরাফিকেও। কিন্তু দায় এড়ানোর সহজ পথ বেছে নেওয়া মাশরাফিকে পাওয়া যায়নি কিছুতেই।

প্রশ্ন : অর্থাৎ, অধিনায়ককে নির্বাচক প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে?

মাশরাফি : আমার বিশ্বাস যে, ভবিষ্যতে এটি হবে। না হলে কাজ করা কঠিন হবে। কারণ শেষ পর্যন্ত ১১ জন নিয়ে মাঠে তো অধিনায়কই নামবেন। এখন মনে হতে পারে, দলের একাদশ তো ঠিকই আছে; বাকি চারজন কারা থাকবে—সেটি নির্বাচন করার জন্য অধিনায়কের দরকার নেই। কিন্তু অধিনায়কের জন্য ১৫ জনই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ যে কোনো সময় যে কাউকে প্রয়োজন হবে। অধিনায়কের নাম শুরুতে লেখা হলেও তার মতোই গুরুত্বপূর্ণ দলের ১৫তম সদস্য। এ কারণেই আমার কাছে মনে হয়, অধিনায়কের কথা শোনেন বা না শোনেন, নির্বাচক প্যানেলে অধিনায়ককে রাখা প্রয়োজন।

প্রশ্ন : যে সাব্বিরকে নিয়ে এত কিছু, তিনি তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অমন ভালো কিছু করতে পারেননি। তাহলে তাঁর ওপর আপনার এমন আস্থার কারণ কী?

মাশরাফি : একটি পরিষ্কার কথা বলছি। সাব্বিরের ওপর আমি আস্থা দেখিয়েছি, এ কারণে না যে তাকে নিতেই হবে। ওকে না নিলে দল চলবে না। তাহলে সাব্বির যে কদিন ছিল না, তত দিন দল চলত না। আসলে নিউজিল্যান্ড সফরের জন্য স্কোয়াডের ১৪ জনের নাম ঠিক হয়ে গেছে। এরপর ১৫ নম্বর সদস্যের জন্য যে নামগুলো দেখেছি, তখন মনে হয়েছে সাব্বিরকে নেওয়া যায়। কারণ বিশ্বকাপে সাত নম্বরে প্রতিপক্ষের সেরা পেস বোলারদের সামলানোর সামর্থ্য আমাদের অন্য ব্যাটসম্যানদের তুলনায় ওর বেশি। আমি তাই সামর্থ্যের কথা চিন্তা করে সাব্বিরের কথা বলেছি। যদি তা ভালো না লাগে, তাহলে নেবেন না। ও না থাকার পরও আমরা এশিয়া কাপ ফাইনাল খেলেছি; জিম্বাবুয়ে-ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছি। সাব্বিরকে ছাড়া চলেছে না? চলেছে তো। আর এর আগেও তো অনেককে নেওয়ার মত দিয়েছি; কিন্তু নির্বাচকরা নেননি।

প্রশ্ন : যেমন?

মাশরাফি : যেমন আবদুর রাজ্জাক। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় আমরা সিনিয়র ক্রিকেটাররা সবাই ওর কথা বলেছি। সাকিব বলেছে, তামিম বলেছে, মুশফিক বলেছে, রিয়াদ বলেছে; আমি তো অধিনায়ক বলেছিই। কিন্তু নেওয়া হয় সাকলাইন সজীবকে। এটি তো ওর প্রতিও অবিচার। কারণ এক ম্যাচ খেলানোর পর বলা হলো, ও এই চাপে বোলিং করতে পারে না। তাহলে ওকে দলে নিয়েছেন কেন? আজ হাতুরাসিংহে কোচ নেই বলে আমি এটি বলতে পারছি। উনি থাকলে বলতে পারতাম না। অধিনায়ক হিসেবে এমন অনেককে অনেকবার চেয়েছি আমি। পাইনি।

প্রশ্ন : কিন্তু নিষিদ্ধ থাকা ক্রিকেটার সাব্বিরকে নেওয়ার দায় আপনার ওপর পড়েছে; বিশেষত প্রধান নির্বাচকের অমন কথার পর?

মাশরাফি : নিষেধাজ্ঞা কমানো-বাড়ানোর সিদ্ধান্ত পুরোপুরি বোর্ডের। ওখানে আমার কিছু করার নেই। আর দায়ের কথা বলছেন? দায় এড়ানো তো পৃথিবীর সবচেয়ে সহজতম কাজ। এটি ঠিক কি না, ভেবে দেখা দরকার। এখন সাব্বিরকে দলে নেওয়ার ক্ষেত্রে দায় যখন আমার ওপর এসেছে, আমি দায় নিলাম। বাংলাদেশ ক্রিকেট আমার পারিবারিক দল না। আর সাব্বির আমার পারিবারিক মানুষও না; বরং রাজ ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তবে আমার কাছে মনে হয়, সাব্বিরের এই ঘটনায় কারো না কারো দায় নেওয়া উচিত। বাংলাদেশ ক্রিকেট এখন যে জায়গায় গিয়েছে, তাতে এত দায়িত্বহীন হলে হবে না। যেহেতু আমার কথা বলেছেন প্রধান নির্বাচক, আমি দায় নিতে রাজি। ঠিক আছে, ধরেই নিচ্ছি সাব্বিরকে আমার কথা অনুযায়ী দলে এনেছেন। আমিই ওকে নির্বাচন করেছি। কারণ দায় তো কাউকে না কাউকে নিতে হবে। দায় এড়িয়ে কত দিন চলবেন?

প্রশ্ন : মানে বলছেন, ‘আমি নির্বাচক না হয়েও সাব্বিরকে নির্বাচন করেছি।’

মাশরাফি : অবশ্যই। যেহেতু আমার কথা এসেছে, দায় আমি নিচ্ছি। সমস্যা নেই। বাংলাদেশের ক্রিকেট এত বড় জায়গা, সেখানে কেউ দায় নেবেন না কেন? আমি নিলাম।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

টিভিতে

শেয়ার
টিভিতে

৩০.৩.২৫ (রবিবার)

ফুটবল

লা লিগা, বার্সেলোনা-জিরোনা

সরাসরি, রাত ৮-১৫ মিনিট, জিও সিনেমা

অ্যাথলেতিক বিলবাও-ওসাসুনা

সরাসরি, রাত ১০-৩০ মিনিট, জিও সিনেমা

রিয়াল বেতিস-সেভিয়া

সরাসরি, রাত ১টা, জিও সিনেমা

বুন্দেসলিগা, বরুশিয়া ডর্টমুন্ড-মেইঞ্জ

সরাসরি, রাত ৯-৩০ মিনিট, টেন ১

এফএ কাপ, বোর্নমাউথ-ম্যানচেস্টার সিটি

সরাসরি, রাত ৯-৩০ মিনিট, টেন ২

৩১.৩.২৫ (সোমবার)

ফুটবল

লা লিগা, সেল্তা ভিগো-লাস পালমাস

সরাসরি, রাত ১টা, জিও সিনেমা

১.৪.২৫ (মঙ্গলবার)

ফুটবল

ইপিএল, আর্সেনাল-ফুলহাম

সরাসরি, রাত ১২-৪৫ মিনিট

স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১/২

নটিংহাম ফরেস্ট-ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড

সরাসরি, রাত ১টা, স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১/২

২.৪.২৫ (বুধবার)

ফুটবল

ইপিএল, ম্যানচেস্টার সিটি-লিস্টার সিটি

সরাসরি, রাত ১২-৪৫ মিনিট

স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১/২

লিভারপুল-এভারটন

সরাসরি, রাত ১টা, স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১/২

ক্রিকেট

নিউজিল্যান্ড-পাকিস্তান, দ্বিতীয় ওয়ানডে

সরাসরি, ভোর ৪টা, টেন ১

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

টি স্পোর্টস

শেয়ার
টি স্পোর্টস

৩০.৩.২৫ (রবিবার)

ক্রিকেট

আইপিএল, দিল্লি-হায়দরাবাদ

সরাসরি, বিকেল ৪টা

রাজস্থান-চেন্নাই

সরাসরি, রাত ৮টা

৩১.৩.২৫ (সোমবার)

 ক্রিকেট

আইপিএল, মুম্বাই-কলকাতা

সরাসরি, রাত ৮টা

১.৪.২৫ (মঙ্গলবার)

ক্রিকেট

আইপিএল, লখনউ-পাঞ্জাব

সরাসরি, রাত ৮টা

২.৪.২৫ (বুধবার)

 ক্রিকেট

আইপিএল, বেঙ্গালুরু-গুজরাট

সরাসরি, রাত ৮টা

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
বিশেষ

অবিশ্বাসের ক্রীড়াঙ্গন

সাইদুজ্জামান
সাইদুজ্জামান
শেয়ার
অবিশ্বাসের ক্রীড়াঙ্গন

কেউ কাউকে কনফিডেন্সে নিচ্ছেন না। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সংস্কারের হুংকার দিয়ে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সার্চ কমিটি গঠন করে। এই কমিটির প্রত্যেক সদস্য দেশের ক্রীড়া কর্তৃপক্ষের আস্থাভাজন। তেমনটাই হওয়ার কথা।

কিন্তু মাস না গড়াতেই সুখের সংসারে আগুন! সেই আগুন অনাস্থা-অবিশ্বাসের।

পেশাগত কারণে সার্চ কমিটির সবার সঙ্গে কমবেশি পরিচয় আছে। কমিটি গঠনের পর তাঁদের মধ্যে যথারীতি ক্রীড়া কল্যাণে ভূমিকা রাখতে পারার রোমাঞ্চ। কিন্তু মাস না গড়াতেই সেই কমিটির একাধিক সদস্য দেখি ফুঁসছেন! কী ব্যাপার? ব্যাপার কিছু না, পুরনো রোগ।

১৬ কোটির দেশে সব পদের জন্য ১৮ কোটি সুপারিশ থাকে। স্বজনপ্রীতি আছে, থাকে অর্থের প্রলোভন। অবশ্য আজকাল স্বজনপ্রীতিরও নাকি বাজারমূল্য আছে। মানে, খায়-খাতিরও নাকি আর ফ্রি নয়!

বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশনের নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ আর গোপন নেই।

সার্চ কমিটির জমা দেওয়া তালিকা বদলে যাচ্ছে হরহামেশা। পরিবর্তনের এখতিয়ার অবশ্যই আছে দেশের ক্রীড়া কর্তৃপক্ষের। যেহেতু চূড়ান্ত অনুমোদন হবে তাঁদের কলমের খোঁচায়। কিন্তু রীতি বলে একটা ব্যাপার আছে। জমা পড়া তালিকায় পরিবর্তন আনতে হলে অন্তত সার্চ কমিটির সঙ্গে পূর্বালোচনা একটা রীতি।
সেসবের তোয়াক্কা কেউ করেনি। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় ধরে নেওয়া যায়, সার্চ কমিটির কর্মকাণ্ডে অতটা আস্থাশীল নয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। আর কর্তৃপক্ষের ওপর সার্চ কমিটি বিশ্বাস হারিয়েছে তারও আগে। সার্চ কমিটির প্রধান জোবায়দুর রহমান রীতিমতো সংবাদ মাধ্যমে ক্ষোভ জানিয়েছেন।

এটা নজিরবিহীন। অবশ্য অনুমেয়ই ছিল। একটি ফেডারেশনে একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে সাধারণ সম্পাদক মনোনয়ন নিয়ে প্রথম মনোমালিন্যের শুরু মন্ত্রণালয় ও সার্চ কমিটির। এরপর কমিটি জমা পড়ে, কিন্তু ঘোষণা হয় না। আবার ঘোষিত কমিটিতে কিছু কাটাছেঁড়া থাকে। সব মিলিয়ে অনেক দিন ধরেই ফুঁসছিল সার্চ কমিটি, যার বিস্ফোরণ ঘটেছে আর্চারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক পদে ওলটপালট ঘটিয়ে। এই প্রথম একটা রাউন্ড জিতল সার্চ কমিটি। কমিটির তালিকায় রাজীব উদ্দীন আহমেদ ছিলেন না। কিন্তু সরকারিভাবে ঘোষিত অন্তর্বর্তী কমিটিতে তাঁকে সাধারণ সম্পাদক পদে দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে সার্চ কমিটি। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে সার্চ কমিটির দাবি মেনে রাজীবকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন একজনকে আর্চারির সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।

এতে কী সমস্যার সমাধান হয়ে গেল? মনে হয় না। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সঙ্গে সার্চ কমিটির বিরোধ এখন প্রকাশ্য। মতবিরোধ আর বিরোধ দুটো ভিন্ন জিনিস। মতবিরোধ আলোচনায় চুকিয়ে ফেলা যায়। কিন্তু ক্রীড়া পরিষদ ও সার্চ কমিটির মধ্যে অবিশ্বাসের যে মেঘ জমেছে, তা সরবার নয়। থেমে থেমে কখনো বৃষ্টি কিংবা ঝড়ও হতে পারে।

তো নতুন ক্রীড়া ব্যবস্থায় আমরা কী পেলাম? এই প্রশ্নের উত্তর ভবিষ্যৎ বলবে। তবে অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন নিয়ে অযথা কালক্ষেপণ এবং প্রকাশ্য দ্বন্দ্বকে শুভ সূচনা বলা যাবে না। এর মধ্যে আবার শ্যুটিং স্পোর্ট ফেডারেশনের কমিটি ঝুলে আছে। এই ফেডারেশনের অন্তর্বর্তী কমিটি নিয়ে নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে বাজারে। আর্চারির পর শ্যুটিংয়ের কমিটি নিয়েও হুলুস্থুল হবে না তো ক্রীড়াঙ্গনে?

তবে আশা করব, যেন সে রকম কিছু না হয়। তবে হতে পারে। কারণ দীর্ঘদিনের চর্চায় সব কিছুর আগে নিজেকে জুড়ে দেওয়ার একটা প্রবণতা গড়ে উঠেছে। দেশের সমৃদ্ধি স্রেফ একজনের কারণেরাজনীতির এমন সস্তা প্রচারণা ছড়িয়ে পড়েছে ক্রীড়াঙ্গনে। ফেডারেশন কিংবা জেলা ও বিভাগীয় সংস্থার নির্বাহী কমিটিতে নাম থাকলেই পরিচিতি, সেই সুবাদে ব্যবসা-বাণিজ্যে বাড়তি সুবিধা মেলে। আবার কিছু পেলে দিতেও তো হবে। প্রত্যাশীরা সোৎসাহে দেন। কী দেন, কাকে দেনসেসব উহ্য থাক।

ক্রীড়াঙ্গনের সংস্কার প্রক্রিয়ায় দারুণ কিছু প্রস্তাবনা রয়েছে। যেমনবটবৃক্ষ হয়ে গেঁড়ে বসা যাবে না ফেডারেশনে। একইভাবে নিয়মিত খেলা আয়োজন না করলে বাদ পড়তে হবে। ঠিক আছে। যদিও অদ্ভুত এক যুক্তিতে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া কমিটিতে সাংবাদিক কোটা রাখা হয়েছে। কমিটিতে ক্রীড়া সাংবাদিক থাকলে নজরদারি ভালো হবে। যদিও একজন ক্রীড়া সাংবাদিকের কাজই ক্রীড়াঙ্গনের সত্যিকারের ছবি তুলে ধরা। বরং সেই তিনি যদি কোনো ক্রীড়া কমিটিতে যুক্ত থাকেন, তা স্পষ্টতই কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট। আর নীতিনির্ধারকরা কিভাবে নিশ্চিত হলেন যে কমিটির ওয়াচডগ হতে পারেন শুধুই একজন ক্রীড়া সাংবাদিক?

যাই হোক, আর্চারি ফেডারেশন দিয়েই শেষ করি। এই ফেডারেশনের যাত্রার ঘোষণা শুনে ক্রীড়াঙ্গনে বলাবলি হচ্ছিল, অনুদান মেরে খাওয়ার জন্য আরেক দোকান খোলা হয়েছে! পরে রাজীব উদ্দীন আহমেদ সিটি গ্রুপকে যুক্ত করেন এর পৃষ্ঠপোষকতায়। বাকিটুকু ইতিহাসরোমান সানা সরাসরি অলিম্পিকে। এসব বিবেচনায় হয়তো টিকে গিয়েছিলেন তিনি। আবার সার্চ কমিটির ক্ষোভের পর রাজীবকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তো কে জিতল? অবিশ্বাস, তাই না?

 

মন্তব্য

শেফিল্ড শিল্ড

শেয়ার
শেফিল্ড শিল্ড

২৯ বছর পর শেফিল্ড শিল্ডের শিরোপা জিতেছে সাউথ অস্ট্রেলিয়া। চতুর্থ ইনিংসে রান তাড়ায় রেকর্ড গড়ে তারা হারিয়েছে কুইন্সল্যান্ডকে। অ্যাডিলেডের ক্যারেন বোল্টন ওভালের ফাইনালে ২৭০ রানের জয়ের লক্ষ্যে ২৮ রানে তিন উইকেট হারানোর পর অ্যালেক্স কেরির ১০৫ এবং জেসন সাঙ্গার ১২৬* রানের সেঞ্চুরি ৪ উইকেটের জয় এনে দেয় সাউথ অস্ট্রেলিয়াকে। এপি

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ