<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ব্যবসার পরিবেশে অনিশ্চয়তা আর ব্যাংক ঋণে উচ্চ সুদহারের প্রভাব পড়েছে ঋণ প্রবৃদ্ধির ওপর।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত সেপ্টেম্বরে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, অর্থবছরের তৃতীয় মাসে বেসরকারি খাতে ঋণ বিতরণের পরিমাণ আগের বছর একই সময়ের তুলনায় ৯.২০ শতাংশ বেড়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সর্বশেষ ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে এ খাতে এর চেয়ে কম, ৮.৭৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। এরপর আর কখনো তা ৯.২০ শতাংশের নিচে নামেনি। গত আগস্টে প্রবৃদ্ধি ছিল ৯.৮৬ শতাংশ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির এই হার মূল্যস্ফীতি মোকাবেলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতিতে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার খুব কাছাকাছি। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতিতে এই লক্ষ্যমাত্রা ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৯.৮০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেই হিসেবে সেপ্টেম্বরের প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে খুব বেশি বাড়েনি। কিন্তু যে মূল্যস্ফীতি মোকাবেলার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদহার বাড়িয়ে বেসরকারি ঋণে লাগাম দিয়েছে, সেই মূল্যস্ফীতি অক্টোবরে ফের দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছেছে। অর্থনীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ কমে যাওয়ার মানে হলো, ব্যবসা ক্ষেত্রে বিনিয়োগ কমে যাবে। সেই সঙ্গে কমবে নতুন শিল্প স্থাপন বা শিল্প সম্প্রসারণের গতি। অবধারিতভাবে তার প্রভাব পড়বে কর্মসংস্থানে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেছেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করছেন কম। বিনিয়োগের পরিবেশ তখনই তৈরি হয় যখন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি আরো বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের হিসাবে জুলাই মাসের মধ্যে এক সপ্তাহেই পোশাকশিল্পে ক্ষতি হয়েছে এক বিলিয়নের ওপর। আর ব্যাংক বন্ধ থাকায় তো আমদানি-রপ্তানির ওপর সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এই রকম ক্ষতি হওয়ার পর ব্যবসায়ীরা বেশি বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন না। দেশের অর্থনীতির ওপর টানা দুই মাস ধকল যাওয়ার পর সবাই পরিস্থিতি বিবেচনার মধ্যে আনে। তাই ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার দরকার পড়েনি, কারণ চাহিদা কমে গেছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য যা বলছে : মোহাম্মদ হাতেমের বিশ্লেষণের মতো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যও একই কথা বলছে। চলতি বছর জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে আমদানির এলসি খোলার পরিমাণ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৮.৫৮ শতাংশ কমেছে। নিষ্পত্তি কমেছে ১৭.৫৭ শতাংশের মতো। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চলতি বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে আমদানির এলসি খোলা হয়েছে এক হাজার ৫৫৯ কোটি ডলারের। একই সময় নিষ্পত্তি হয়েছে এক হাজার ৬৭১ কোটি ডলারের এলসি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি কমেছে ৪১ শতাংশের বেশি। তিন মাসে ৩৮ কোটি ডলারের মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি হয়েছে। ২০২৩ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে আমদানি হয়েছিল ৬৫ কোটি টাকার মূলধনী যন্ত্রপাতি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অক্টোবরের ২২ তারিখে মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে আরো এক দফা রেপো সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে এই সুদহার ১০ শতাংশে পৌঁছায়। নীতি সুদহার বাড়ালে ব্যাংকঋণের সুদের হারও বেড়ে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক রেপো রেট বাড়ায় মূলত টাকার সরবরাহ কমানোর জন্য। টাকার সরবরাহ কমালে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনার টুল হিসেবে এ পদ্ধতি ব্যবহার করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গভর্নর আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব নেওয়ার পর তিন দফায় নীতি সুদহার বাড়িয়েছেন। এতে ব্যাংক ঋণের সুদহার ১৫ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছে। আর আমানত পাওয়া যাচ্ছে ৮-১১ শতাংশ সুদে। কোনো কোনো ব্যাংক ১২ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমানত সংগ্রহ করছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ২০২২ সালের প্রথম দিকে ১০ শতাংশের ওপর ছিল। ওই বছর তা ১৪ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছিল। এরপর বিভিন্ন কারণে মূল্যস্ফীতির পারদ চড়তে থাকলে তা কমিয়ে আনতে নীতি সুদহার রেপো বাড়ানো হয়। মুদ্রানীতিতে আরো সংকোচনমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়। তাতে ২০২৩ সালের মাঝামাঝি থেকে আবার কমতে শুরু করে ঋণ প্রবৃদ্ধি।</span></span></span></span></p>