বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত অপ্রচলিত বাজারেও প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে, যেখানে মোট রপ্তানি ৬.২৩ শতাংশ বেড়ে ৪.৫২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে জাপানে সবচেয়ে বেশি ৮৩৯ মিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে, এরপর অস্ট্রেলিয়ায় ৫৮২ মিলিয়ন এবং ভারতে ৪৭৮ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি হয়েছে।
এ ছাড়া তুরস্ক ও মেক্সিকোতে যথাক্রমে ৩০৫ মিলিয়ন ও ২২৯ মিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। প্রবৃদ্ধির দিক থেকে ভারতে ১৮.৫৮ শতাংশ, মেক্সিকোতে ২৫.১৪ শতাংশ এবং তুরস্কে ৩২.২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে রাশিয়া, কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মালয়েশিয়ায় রপ্তানির হার কমেছে।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানি এখনো প্রধানত ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল। তবে অপ্রচলিত বাজারেও সম্ভাবনা রয়েছে, যেখানে কৌশলগত গবেষণা ও বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি বাড়ানো সম্ভব। তিনি বলেন, এই বাজারগুলোতে প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা গেলে প্রধান বাজারগুলোর ওপর নির্ভরতা কমবে।
বিজিএমইএ সাবেক পরিচালক আরো বলেন, বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিস্থিতি পরিবর্তিত হচ্ছে, যা বাংলাদেশের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারে। তবে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে বিনিয়োগের প্রয়োজন। তিনি ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পে বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন, যাতে বাংলাদেশের পোশাক খাত দীর্ঘ মেয়াদে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে।
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে জার্মানি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাজার, যেখানে ৩.৩৮ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বিশ্বে পোশাক খাতের প্রধান বাজারগুলোতে বাংলাদেশের রপ্তানির প্রবৃদ্ধি দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছেছে। ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতাদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার ফলে এই প্রবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্র (ইউএস) এবং কানাডার মতো প্রধান রপ্তানি গন্তব্যগুলোতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। পাশাপাশি যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য অপ্রচলিত বাজারেও তুলনামূলকভাবে ভালো প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) রপ্তানি বিশ্বব্যাপী ১০.৬৪ শতাংশ বেড়ে ২৬.৭৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার হিসেবে ৫০.১০ শতাংশ শেয়ার নিয়ে শীর্ষে রয়েছে, যেখানে মোট রপ্তানি ১৩.৪২ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি ৫.০৬ বিলিয়ন ডলার, যা মোট রপ্তানির ১৮.৯১ শতাংশ। কানাডায় রপ্তানি হয়েছে ৮৪৫ মিলিয়ন ডলার, যা ৩.১৬ শতাংশ শেয়ার দখল করেছে।
যুক্তরাজ্যও গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে রয়েছে, যেখানে রপ্তানি ২.৯৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা মোট রপ্তানির ১০.৯৪ শতাংশ।
প্রবৃদ্ধির দিক থেকে ইইউতে পোশাক রপ্তানি আগের বছরের তুলনায় ১১.৫৩ শতাংশ বেড়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে ১৬.৩৮ শতাংশ এবং কানাডায় ১৪.১২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে যুক্তরাজ্যে প্রবৃদ্ধির হার তুলনামূলক কম, ৩.৭৪ শতাংশ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে জার্মানি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাজার, যেখানে ৩.৩৮ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ ছাড়া স্পেনে ২.৩৫ বিলিয়ন, ফ্রান্সে ১.৪৩ বিলিয়ন, ইতালিতে ১.০৫ বিলিয়ন, পোল্যান্ডে ১.১৩ বিলিয়ন এবং নেদারল্যান্ডসে ১.৪৩ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে।