<p>প্রায় দেড়যুগ আগে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবদায়ক সরকারের সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির চার মামলা বাতিল করেছেন হাইকোর্ট।  </p> <p>এসব মামলা বাতিল প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন। </p> <p>আদালতে মামলা বাতিলের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও কায়সার কামাল। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।</p> <p>রায়ের পর আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন সাংবাদিকদের বলেন, “চারটি মামলাই রাজধানীর কাফরুল থানার। মামলাগুলোর ঘটনা ২০০৩, ২০০৪ ও ২০০৫ সালের ঘটনা দেখিয়ে ২০০৭ সালে মামলাগুলো করা হয়েছিল। চারটি মামলার মধ্যে তিনটি মামলার এজাহারে তারেক রহমানের নাম নেই। অথচ এসব মামরায় তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রিমান্ডে নিয়ে আমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। তাঁর কোমরের হাড় পর্যন্ত গুড়া করে দিয়েছিল রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করে। আইনত একটি মামলাও চলে না। </p> <p>এর পক্ষে ২০১২ সালে আপিল বিভাগের দেওয়া একটি সিদ্ধান্ত দেখিয়েছি হাইকোর্টকে। আপিল বিভাগ সেখানে বলেছেন, কোনো মামলার ক্ষেত্রে ক্ষমতার বহুমাত্রিক অপব্যবহার যদি হয়ে থাকে, তবে সেসব মামলা চলে না। চাাঁদাবাজির এই মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ফলে আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুসারে এসব মামলা চলতে পারে না। পরে হাইকোর্ট চারটি মামলা বাতিল প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে মামলাগুলো বাতিল করেছেন।”</p> <p>উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা হয়। পরে শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনামলে অর্ধশতাধিক মামলা হয়েছে, যার বেশির ভাগই মানহানির মামলা।</p> <p>বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ছয়টি মামলার বিচার শেষে সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। কিছু মামলার বিচারকাজ উচ্চ আদালতের আদেশে স্থগিত আছে। তবে কোনো মামলায়ই সাজা ভোগ করেননি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তাঁকে পলাতক দেখিয়ে বিচার হয়েছে এসব মামলার। </p> <p>এর মধ্যে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলায় ২০১৮ সালে বিচারিক আদালত তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এ পর্যন্ত যে ছয়টি মামলার রায় হয়েছে, তার মধ্যে এ মামলায়ই তাঁকে সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছেন আদালত।</p> <p>বিএনপির আইন সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদি আইনজীবী সমিতির মহাসচিব কায়সার কামাল সাংবাদিকদের বলেন, “বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আইনের শাসনে বিশ্বাসী। দেশের প্রচলিত আদালত, আইন এবং সংবিধানের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাশীল। হাইকোর্ট চারটি মামলা বাতিল করায় প্রমাণ করে তিনি আইনি প্রক্রিয়ায় সবকিছু মোকাবেলা করতে চান। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রত্যক্ষ প্ররোচনায় ভুয়া, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মামলাগুলো করা হয়েছিল। হাইকোর্টে এই মামলাগুলো স্থগিত করেছিলেন। এখন তা বাতিল করলেন।”</p> <p>চাঁদাবাজির আরেক মামলায় তারেক রহমানের নিয়মিত জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করা হয়েছে, অর্থাৎ তারেক রহমানকে নিয়মিত জামিন দেওয়া হেয়েছে বলেও জানান আইনজীবী কায়সার কামাল।</p>