<p>অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মাসদার হোসেন বলেছেন, ‘২০০৭ সালে আমার মামলায় (মাসদার হোসেন মামলায়) বিচার বিভাগকে কাগজ-কলমে আংশিক স্বাধীন করা হলেও আসলে এটি স্বাধীন হয়নি। তবে এখন সংস্কার কমিটির কাজ চলমান আছে।’</p> <p>মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে ‘বিচার বিভাগ পৃথ্ককরণ ও বাংলাদেশের বাস্তবতা’ বিষয়ক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। </p> <p>তিনি আরো বলেন, ১৭৩১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ১৮৬ বছরে ১৮২ বার বিচার বিভাগকে আলাদা করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছে। কারণ রাজা যে শাসন চালাবে, কেউ যদি তাকে হস্তক্ষেপ করে তাহলে সে তো এটা স্বাভাবিকভাবে নেবে না।</p> <p>মাসদার হোসেন বলেন, ‘কিভাবে রাষ্ট্র কাঠামো কেমন হবে এর ওপর অনেকে তাদের বিজ্ঞ মতামত দিয়েছেন। আপনি একটা রাষ্ট্রের সংবিধান করবেন, আইন করবেন কিন্তু সেটা জনবান্ধব অথবা জনগণের জন্য কল্যাণকর কি না, সেটাকে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সুপ্রিম কোর্টকে। কোনো আইন যদি জনকল্যাণকর না হয় তাহলে সুপ্রিম কোর্ট সেই আইন ডিক্লাইন করে দেন।’</p> <p>সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, ‘আমরা আশা করি, বাংলাদেশ একটি উন্নত বিচারব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাবে। যেখানে মানুষ মনে করবে, এটা তার শেষ আশ্রয়স্থল। সেখানে গিয়ে তারা ন্যায়বিচার পাবে, সে যেই রাজনৈতিক দল ও ধর্মের লোক হোক বা সে দুর্বল কিংবা শক্তিশালী হোক।’ </p> <p>সেমিনারটির সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল বলেন, ‘রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের কারণে প্রশাসক ও বিচারকদের স্বাধীনতা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। মাসদার হোসেন মামলা ২০০৭ সালে ফয়সালা হয়েছে। উনি একজন জীবন্ত কিংবদন্তি, নিজেই একজন প্রতিষ্ঠান। দেশে-বিদেশে মাসদার হোসেন মামলা এখন পঠিত বিষয়। তিনি একজন বিচারক এবং আইন সংস্কার কমিশনেরও সদস্য।’</p> <p>সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুর রহমান জীবল এবং ড. মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন। এ ছাড়া লোকপ্রশাসন এবং আইন বিভাগের শিক্ষকরা সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।</p>