৩ পুলিশ কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
৩ পুলিশ কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশের তিন কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

কারাগারে পাঠানো ৩ কর্মকর্তা হলেন রাজধানীর মিরপুর বিভাগের সাবেক এডিসি মইনুল ইসলাম, শাহবাগ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অপারেশন) মোহাম্মদ আরশাদ হোসেন ও রামপুরা থানার সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) চঞ্চল চন্দ্র সরকার।

আরো পড়ুন
বাংলাদেশপন্থীদের অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধপন্থী হতে হবে : মাহফুজ

বাংলাদেশপন্থীদের অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধপন্থী হতে হবে : মাহফুজ

 

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) তাদের হাজির করা হলে ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী এই আদেশ দেন। গত সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ছয়জন পুলিশ কর্মকর্তা ও দুই আওয়ামী লীগ নেতাসহ মোট আটজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।

আদালতে এই তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিষয়ে শুনানি করেন প্রসিকিউটর গাজী মনোয়ার হোসেন তামিম ও বি এম সুলতান মাহমুদ।

আদেশের পর প্রসিকিউটর তামিম বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে রাজধানীর চানখাঁরপুলে একজন ছাত্রকে মুখ চেপে ধরার ছবি সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছিল। মুখ চেপে ধরা সেই পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন আরশাদ। আর রাজধানীর রামপুরায় ভবনের কার্নিশে ঝুলে থাকা ১৮ বছর বয়সী এক কিশোরকে বারবার গুলি করা হচ্ছিল।

সেই গুলি করা পুলিশ কর্মকর্তা হলেন চঞ্চল চন্দ্র সরকার।’

আরো পড়ুন
চাঁদার হাত বদল হয়েছে, চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি : সারজিস

চাঁদার হাত বদল হয়েছে, চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি : সারজিস

 

প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলন চলার সময় এডিসি মইনুল মিরপুরের দায়িত্বে ছিলেন। সে সময় মিরপুরে অনেক মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে। সংঘটিত অপরাধে তিনি সরাসরি জড়িত ছিলেন।

ট্রাইব্যুনাল আরশাদ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের পরবর্তী শুনানি আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি এবং মইনুল ইসলাম ও চঞ্চল চন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগের শুনানি আগামী ২৪ মার্চ রাখা হয়েছে বলে জানান এ দুই প্রসিকিউটর।

জুলাই-আগস্টের গণ-আন্দোলনে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ৩০ জন আসামি কারাগারে আছেন। আর ট্রাইব্যুনাল এ পর্যন্ত ১০৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় ৫ ফেব্রুয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার রায় ৫ ফেব্রুয়ারি

তিন দশক আগে পাবনার ঈশ্বরদীতে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের আবেদন) শুনানি শেষ হয়েছে। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার তারিখ রেখেছেন হাইকোর্ট। 

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষ হলে বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব-উল ইসলাম ও বিচারপতি মো. হামিদুর রহমানের রায়ে এই তারিখ দেন। 

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মজিবুর রহমান।

আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী কায়সার কামাল, কামরুজ্জামান মামুন, জামিল আক্তার এলাহী। তাদের সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মাকসুদ উল্লাহ। 

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর খুলনা থেকে ট্রেনে ঈশ্বরদী হয়ে সৈয়দপুরের দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে যাচ্ছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা শেখ হাসিনা। তাকে বহনকারী ট্রেনটি ঈশ্বরদী স্টেশনে ঢোকার মুহূর্তে ট্রেন ও শেখ হাসিনার কামরা লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা।

স্টেশনে যাত্রাবিরতি করলে আবারও ট্রেনটিতে হামলা চালানো হয়।

এ ঘটনায় দলীয় কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে শেখ হাসিনা ঈশ্বরদী ত্যাগ করেন। পরে ঈশ্বরদী রেলওয়ে (জিআরপি) থানার ওই সময়কার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদী হয়ে ছাত্রদল নেতা ও বর্তমানে ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুসহ সাতজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলা করার পর ওই বছর কোনো সাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ।

কিন্তু আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) দায়িত্ব দেন। পরে তদন্ত করে ১৯৯৭ সালে ৫২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এতে নতুনভাবে স্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়। আসামিদের মধ্যে পাঁচ আসামির মৃত্যু হওয়ায় তাদের বাদি দিয়ে বাকি ৪৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

বিচার শেষে ২০১৯ সালের ৩ জুলাই পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রোস্তম আলী ৯ জনের ফাঁসির আদেশ দেন।

এ ছাড়া ২৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১৩ জনকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে যাবজ্জীবন সাজার আসামিদের ৩ লাখ টাকা এবং ১০ বছরের সাজার আসামিদের এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। বিচারের সময় ৩২ জন আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। রায়ের পর ১৪ জুলাই যাবজ্জীবন সাজার আরো ৭ আসামি আত্মসমর্পণ করেন।

ফাঁসির আসামিরা হলেন এ কে এম আক্তারুজ্জামান, মো. জাকারিয়া পিন্টু, মোখলেছুর রহমান বাবলু, রেজাউল করিম শাহীন, শহীদুল ইসলাম অটল, আজিজুর রহমান ফড়িং, শ্যামল, মাহাবুবুর রহমান পলাশ ও শামসুল আলম।

এ রায়ের পর মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরাও আপিল করেন। ওই বছর ১৯ আগস্ট হাইকোর্ট মোট ৪৩ আসামির আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। সেই সব আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের চূগান্ত শুনানির পর মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য রাখলেন উচ্চ আদালত। 

ফাঁসির আসামিরা সবাই কারাগারে আছেন বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মাকসুদ উল্লাহ। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘চূড়ান্ত শুনানিতে সব আসামির খালাসের আরজি জানানো হয়েছে।’

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মজিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘চূড়ান্ত শুনানিতে আমি বলেছি, শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টায় গুলি এবং বোমা বিস্ফোরণের কোনো আলামত এই মামলায় পাওয়া যায়নি। এমনকি যে হামলার কথা বলা হচ্ছে, কথিত সেই হামলায় গুরুতর কেউ আহত বা নিহতও হয়নি। তারপরও ৯ জন মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। যে কারণে বিচারিক আদালতের বিচারকের বিচারিক ক্ষমতা জব্দ করার আরজি জানিয়েছি হাইকোর্টের কাছে।’ 

ফাঁসির রায় দেওয়া সেই বিচারক রোস্তম আলী বর্তমানে বরিশালের প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের বিচারক বলে জানিয়েছেন আইন কর্মকর্তা মজিবুর রহমান।

মন্তব্য

অর্থপাচার মামলায় আ. লীগের ২ নেতাসহ ৯ জনের কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
অর্থপাচার মামলায় আ. লীগের ২ নেতাসহ ৯ জনের কারাদণ্ড
সংগৃহীত ছবি

অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইনে করা মামলায় গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি এনামুল হক এনু এবং তার ভাই ও একই ইউনিটের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুপন ভূঁইয়াকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মাসুদ পারভেজ এই রায় দেন। পাশাপাশি তাদের ৩৪ লাখ ২৬ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া এ মামলায় আরো সাতজনকে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

 

দণ্ডিত অন্যরা হলেন- শহিদুল হক ভূঁইয়া, রশিদুল হক ভূঁইয়া, মিরাজুল হক ভূঁইয়া শিপলু, তুহিন মুন্সি, নবীর হোসেন সিকদার, সাইফুল ইসলাম ও জয় গোপাল সরকার। পাশাপাশি তাদের ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের সাজা দেওয়া হয়েছে। এই মামলার ঘটনায় জব্দকৃত ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আদালতের বেঞ্চ সহকারী জাহিদুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

 

আরো পড়ুন
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযানের দাবি

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযানের দাবি

 

জানা গেছে, কারাগারে আটক এনু, রুপন, শহিদুল, নবীর হোসেনকে আদালতে হাজির করা হয়। জামিনে থাকা সাইফুল ইসলাম ও জয় গোপাল আদালতে হাজির হন। তাদের উপস্থিতিতে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের পরে সাজা পরোয়ানাসহ তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

তবে পলাতক থাকায় অপর দুই আসামি মেরাজুল ও তুহিন বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। 

মামলার ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর র‍্যাব-৩ এর একটি দল রাত ১১টা ৩০ মিনিটের সময় রাজধানীর সূত্রাপুর থানাধীন বানিয়াগরের ৩১ নম্বর বাড়ির দ্বিতীয় তলায় রুপন ভূঁইয়ার শোয়ার ঘরের ভেতর দুটি লোহার সিন্দুক থেকে বিপুল পরিমাণ সোনার অলংকার ও টাকা উদ্ধার করে। 

একটি সিন্দুক থেকে ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা উদ্ধার করে র‍্যাব। আরেকটি সিন্দুক থেকে বিভিন্ন প্রকার স্বর্ণালংকার যার মোট ওজন ৫ হাজার ১৬৩ গ্রাম।  অলংকারগুলোর মোট মূল্য আড়াই কোটি টাকা।

 

এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর র‍্যাব-৩ এর পুলিশ পরিদর্শক মো. আবুল বাশার সূত্রাপুর থানায় মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে রুপনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। তদন্ত শেষে সিআইডির ইকোনমিক ক্রাইম স্কোয়াড অর্গানাইজড ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক মো. মেহেদী মাকসুদ ২০২১ সালের ৭ জুলাই অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত ২০২১ সালের ২৬ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলার বিচার চলাকালে ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। 

মন্তব্য

আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ট্রাইব্যুনালের উষ্মা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ট্রাইব্যুনালের উষ্মা

ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে যাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি হয়েছে, তাদের গ্রেপ্তার ও তদন্তকাজ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

প্রসিকিউশনকে উদ্দেশ করে আদালত বলেছেন, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) বা ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, যেই গাফিলতি করবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া  হবে। আর সময়মতো তদন্ত প্রতিবেদন দিতে না পারলে তার ব্যাখ্য দিতে হবে তদন্ত সংস্থাকে।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন বেশ কয়েকটি আবেদন করে।

 

আরো পড়ুন
৭ কলেজের নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হতে পারে ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’

৭ কলেজের নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হতে পারে ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’

 

এর মধ্যে একটি আবেদন ছিল, গণ-আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রবাড়ী এলকায় সংঘটিত গণহত্যা ও মানবাতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ তদন্তের প্রতিবেদন নিয়ে। প্রতিবেদন দাখিলের পরিবর্তে প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ আরো দুই মাস সময় চেয়ে আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানতে চান।

জবাবে প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘এ মামলায় মোট আসামি ছয়জন। তার মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আরো পড়ুন
ইজতেমার প্রথম পর্বে চলবে ১১ ট্রেন

ইজতেমার প্রথম পর্বে চলবে ১১ ট্রেন

 

বাকিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল অগ্রগতি জানতে চাইলে প্রসিকিউটর বলেন, ‘আসামিদের অবস্থান জানার পরও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না। এক ভিকটিমের ভাই আমাদের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগও করেছেন।’

তখন ট্রাইব্যুনাল অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রসিকিউটর বলেন, ‘গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর ভিকটিম ইমাম হাসান তাইমের ভাই রবিউল আসামিদের অবস্থান জানিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের বিভিন্ন শাখায় যোগাযোগ করেন। কিন্তু পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারে কোরো পদক্ষেপ নেয়নি।

তখন ট্রাইব্যুনাল বলেন, সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে বলেন। যার গাফিলতি থাকবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে বলেন ট্রাইব্যুনাল তামাশা করতে বসে নাই। আইজি-ডিএমপি কমিশনার যেই গাফিলতি করবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। দুই হাজার লোক মারা গেছে।

ট্রাইব্যুনাল থেকে এখন পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। কিন্তু গ্রেপ্তারে কোনো অগ্রগতি নেই। 

এসময় প্রসিকিউটর মাহমুদ জানান, ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর অভিযোগের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে ট্রাইব্যুনাল বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে না পারলে সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে এসে ব্যাখ্যা দিতে হবে। সব তদন্তে তো এত সময় লাগার কথা না। আদেশ যদি ঠিকমতো প্রতিপালন করা না হয় আমরা ব্যবস্থা নেব। এরপর আদালত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে প্রসিকিউশনের আবেদন মঞ্জুর করে দুইমাস সময় দেন।

পরে প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যাত্রবাড়ী এলাকায় সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ নিয়ে যে তদন্ত চলছে, সেই তদন্তের প্রতিবেদন তা আগামী ৬ এপ্রিল দাখিলের তারিখ রেখেছেন ট্রাইব্যুনাল।’

এই অভিযোগে গ্রেপ্তার যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হোসেন ও যাত্রাবাড়ী জোনের সাবেক সহকারী পুলিশ কমিশনার তানজিল আহমেদকে এদিন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

যেকোনো স্থান ও নথি জব্দ করা যাবে

এদিকে প্রসিকিউশনের আরেক আবেদনে ট্রাইব্যুনাল আরও তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। তদন্ত ও আসামিদের গ্রেপ্তারের স্বার্থে আসামিদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি প্রসিকিউশন। এছাড়া আরেক আবেদন করা হয় প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে। এই আবেদনে অভিযোগের তদন্ত ও মামলার বিচারকাজের স্বার্থে যেকোনো জায়গা সার্চ ও নথিপত্র সিজ (জব্দ) করার অনুমতি চাওয়া হয়। একই সঙ্গে কোনো জায়গা সার্চ করে কোনো নথিপত্র জব্দ করা হলে তা যেন যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়, তার অনুমতিও চাওয়া হয় আবেদনে। এই আবেদন দুটি করেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম।

তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আদালত আবেদন দুটি মঞ্জুর করে একটিতে তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। তদন্ত ও তাদের গ্রেপ্তারের স্বার্থে তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করছি না। অন্য আবেদনটি ছিল সার্চ ও সিজ সংক্রান্ত। এই আবেদনটিও মঞ্জুর করেছেন ট্রাইব্যুনাল। এর ফলে তদন্ত ও বিচারের স্বার্থে প্রসিকিউশন বা তদন্ত সংস্থা এখন থেকে যোকোনো জায়গা সার্চ করতে পারবে, নথিপত্র জব্দ করতে পারবে এবং নথিপত্র জব্দ করলে যথাযথ কর্তৃপক্ষ দিয়ে জব্দকৃত নথিপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করাতে পারবে।’

মন্তব্য

এস আলমের ১৭৫ বিঘা জমি জব্দের আদেশ

শেয়ার
এস আলমের ১৭৫ বিঘা জমি জব্দের আদেশ
সংগৃহীত ছবি

ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম ও তার পরিবারের নামে থাকা ১৭৫ বিঘা সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। যার প্রদর্শিত মূল্য ৩৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।

জব্দের নির্দেশ দেওয়া সম্পদের মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের ১৮নং ওয়ার্ড এলাকায় ১৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ জমি যার বাজার মূল্য ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

একই ওয়ার্ডে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা মূল্যের ১৩ দশমিক ৫০ শতাংশ জমি। চট্টগ্রামের ১নং পাথরঘাটা ইউনিয়নে ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ জমি। যার বাজার মূল্য ৩ কোটি ৫৪ লাখ ৭৯ হাজার ৫০০ টাকা।  এটির মালিক এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ্ব মোহাম্মদ সাইফুল আলম।
 

এছাড়া রাজধানীর গুলশানের ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা মূল্যের ১০ কাঠা জমি,  ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের তেজতুরি বাজারে ৫৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা মূল্যের ৯০ দশমিক ৮৮ শতাংশ জমি ও তিন হাজার বর্গফুটের একতলা দালান। ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় ১ বিঘা জমি রয়েছে জব্দের নির্দেশ দেওয়া সম্পদের তালিকায়। 

এর বাইরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানা, পটিয়া, নারায়ণগঞ্জ, সীতাকুণ্ড এলাকার এস আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন জমিও জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। 

এর আগে গত ৭ অক্টোবর এস আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ তার পরিবারের ১২ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

অন্যরা হলেন— সাইফুল আলমের পুত্র আশরাফুল আলম, পুত্র আহসানুল আলম, ভাই মোরশেদুল আলম, ভাই সহিদুল আলম, ভাই রাশেদুল আলম, ভাই আবদুস সামাদ, ভাই আবদুস সামাদের স্ত্রী শাহানা ফেরদৌস, ভাই ওসমান গণি, ওসমান গণির স্ত্রী ফারজানা বেগম, ভাই মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসান ও অজ্ঞাত মিশকাত আহমেদ।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ