কাউকে ‘গালি’ দেওয়া যাবে কিনা, বাংলাদেশের আইনে এ বিষয়ে সরাসরি কিছু বলা নেই। তবে ‘কেউ মানহানিকর শব্দ ব্যবহার করলে তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা যায়’ বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
কিন্তু কোন ধরনের বক্তব্য মানহানিকর, আইনে তা খুব সীমিতভাবে বলা আছে। এক্ষেত্রে ‘কোন শব্দটা মানহানির, তা সমাজের প্রথা হিসাবে ধরে নিতে হবে’ বলে জানান এই আইনজীবী।
তিনি বলেন, ‘মানহানিকর বলতে এর আওতায় গালি দেওয়ার বিষয়কেও আনা যায়। আইনে গালি শব্দটা বলা নেই।’
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, ‘আইনে গালি দেওয়ার অধিকার নেই। বরং, কাউকে গালি দিয়ে অপমান করা আইনের চোখে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
’
মানহানির মামলাগুলো ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৪৯৯ ও ৫০০ ধারা অনুযায়ী পরিচালিত হয়। দণ্ডবিধির ৪৯৯ ধারামতে, কোনো ব্যক্তি যদি অন্য কোনো ব্যক্তির খ্যাতি বা সুনাম নষ্ট করার জন্য উদ্দেশ্যমূলক শব্দাবলি বা চিহ্নাদি বা দৃশ্যমান প্রতীকের সাহায্যে নিন্দা প্রণয়ন বা প্রকাশ করে, তাহলে তাতে ওই ব্যক্তির মানহানি হয়েছে মর্মে গণ্য হবে। মৃত ব্যক্তিরও খ্যাতি বা সুনাম নষ্ট হয়, এমন কোনো বক্তব্য দিলেও এই ধারায় মানহানির মামলা হতে পারে।
দণ্ডবিধির ৫০০ ধারায় মানহানির ক্ষেত্রে দুই বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদে বিনা শ্রম কারাদণ্ড অথবা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার কথাও বলা আছে।
এছাড়া, অনলাইনে যদি মানহানিকর বক্তব্য দেয়, তার জন্যও আইনি বিধান আছে।
চলতি বছর পাস হওয়া ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’-এর ২৯ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৪৯৯ ধারায় বর্ণিত মানহানিকর তথ্য প্রকাশ বা প্রচার করেন, তাহলে তা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড হিসাবে ধরা হবে এবং এ জন্য তিনি অনধিক ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ আইনে মানহানির মামলায় কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়নি।
সূত্র : বিবিসি বাংলা