<p>বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলোর অন্যতম মির্জাপুর শাহি মসজিদ। নির্মাণ সালে মতপার্থক্য থাকলেও ধারণা মতে প্রায় ৩৫০ বছরের পুরনো এ মসজিদ দেশের সর্ব-উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় অবস্থিত। তথ্যমতে, মির্জাপুর শাহি মসজিদটি ১৬৫৬ সালে নির্মাণ করা হয়েছে। তবে কে নির্মাণ করেছেন এটি নিয়ে ঐতিহাসিক মতপার্থক্য রয়েছে।</p> <p>কেউ কেউ মনে করেন, মালিক উদ্দিন নামে মির্জাপুর গ্রামেরই এক ব্যক্তি মসজিদটি নির্মাণ করেন। এই মালিক উদ্দিন মির্জাপুর গ্রামও প্রতিষ্ঠা করেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। আবার কেউ কেউ মনে করেন, দোস্ত মোহাম্মদ নামের জনৈক ব্যক্তি মসজিদটির নির্মাণকাজ শেষ করেন। তবে প্রত্নতত্ত্ববিদরা ধারণা করেন, মোগল শাসক শাহ সুজার শাসনামলে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল।</p> <p>এই মসজিদের আশপাশের মুসল্লিরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে পারেন এবং সেই সঙ্গে মসজিদের পাশেই আছে একটি মাদরাসা। সেখানকার ছাত্ররাও এই মসজিদে প্রতিদিন নামাজ আদায় করে থাকেন।</p> <p>টেরাকোটা ফুল ও লতাপাতার নকশা খোদাই করা রয়েছে মসজিদটির দেয়ালে। ৪০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২৫ ফুট প্রস্থ আয়তাকার এই মসজিদের ছাদে পাশাপাশি তিনটি গম্বুজ ও চার কোণে চারটি চিকন মিনার স্থাপন করা হয়েছে।</p> <p>মসজিদের নির্মাণশৈলীর নিপুণতা ও দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে। চুন ও সুড়কি দিয়ে তৈরি মির্জাপুর শাহি মসজিদের সামনের দেয়ালে রয়েছে সুশোভন লতাপাতা ও ইসলামী ঐতিহ্যপূর্ণ টেরাকোটা নকশাখচিত মাঝারি আকৃতির তিনটি দরজা। তিনটি দরজায়ই ছাদ ও দরজার উপরিভাগের মাঝামাঝি স্থানে বাইরের দিকে উভয় পাশে ঢালু তোরণ আকৃতির একটি অতিরিক্ত স্ফীত অংশ সংযুক্ত হওয়ায় অলংকরণ বিন্যাসে সৃষ্টি হয়েছে নতুনত্ব। বর্তমানে এই মসজিদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। দৃষ্টিনন্দন মির্জাপুর শাহি মসজিদটি দেখতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অসংখ্য পর্যটক আসে।</p> <p>দৃষ্টিনন্দন কারুকার্যখচিত মার্বেল পাথরের এই শৈল্পিক স্থাপনাটি দেখতে হলে দেশের যেকোনো জেলা থেকে যেতে হবে পঞ্চগড় জেলা শহরে। সেখান থেকে একটি ইজি বাইক নিয়ে ১৮-২০ কিলোমিটার পূর্বে আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামে গেলেই দেখা মিলবে এই মসজিদের।</p>