<p>আমদানি ও রপ্তানি পণ্য পরিবহনে যে কনটেইনার ব্যবহৃত হয় সেগুলো দেশে তৈরি হয় না। বিদেশি বিভিন্ন শিপিং লাইন বিদেশে তৈরি কনটেইনার দিয়েই বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরে আসা জাহাজে পণ্য পরিবহন করে আসছে। বাংলাদেশে কনটেইনার জাহাজ তৈরি হলেও কনটেইনার তৈরির মতো প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। এই অবস্থায় প্রস্তাবিত বাজেটে কনটেইনার আমদানিতে বিদ্যমান যে ১৫ শতাংশ শুল্ককর ছিল, তার পুরোটাই ছাড় দেওয়া হয়েছে। এর ফলে কনটেইনার খাতে দেশীয় উদ্যোক্তা তৈরি হবে।</p> <p>সক্ষমতা প্রমাণ করতে পারলে আমদানি-রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনার ভাড়া বাবদ প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় এবং সাশ্রয় করতে পারবেন আমদানিকারকরা। জানতে চাইলে বাংলাদেশের সুমদ্রবন্দরের একমাত্র টার্মিনাল অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল আমিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘চ্যালেঞ্জিং এই সময়ে এটা অবশ্যই ভালো উদ্যোগ। আমরা মনে করছি সক্ষমতা দেখাতে পারলে এই খাত অনেক ভালো করবে। বাংলাদেশে এটি প্রথম উদ্যোগ।’</p> <p>তিনি পরামর্শ দেন, ‘শিপিং সেক্টরের নতুন নতুন খাত থেকে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সন্ধান করতে হবে। পণ্য পরিবহনে জাহাজ ও কনটেইনার ভাড়া বাবদ বিপুল টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে। সব টাকাই পরিশোধ হচ্ছে বিদেশে এবং বৈদেশিক মুদ্রায়। এই অর্থ দেশে আনা গেলে রিজার্ভ অনেক বড় হতো।’</p> <p>জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ চলাচল করলেও কনটেইনার ব্যবসার শতভাগই বিদেশি প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে। প্রতিবছর প্রায় ৩০-৩৫ লাখ কনটেইনার আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহন কাজে ব্যবহৃত হয়। এসব কনটেইনারের গন্তব্য অনুযায়ী ১০০-১৫০ ডলার পর্যন্ত ভাড়া দিয়ে থাকেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু শুল্ক বেশি হওয়ায় কনটেইনার আমদানি হতো না বললেই চলে। তবে বিভিন্ন সময় অচল কনটেইনার এবং নষ্ট কনটেইনার মেরামতের পর সচল করে এক ধরনের ব্যবসা চলছিল। এখন সরাসরি কনটেইনার আসার সুযোগ তৈরি হলো।</p> <p>রাজস্ব বোর্ডের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘একটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান নতুন ব্যবসা শুরু করতে চেয়ে আমাদের প্রস্তাব দেয়। আমাদের কাছেও সম্পূর্ণ নতুন এবং ব্যতিক্রমী ও সম্ভাবনাময় মনে হওয়ায় শুল্কছাড়ের সুযোগ দিয়েছি।’</p> <p>শিপিং ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশীয় গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠান বন্দর থেকে সময়মতো পণ্য খালাস করতে পারে না। এতে তাদের বাড়তি অর্থ দিতে হয় এবং এর পুরোটাই ডলারে পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু ব্যবসায়ীদের কাছে বাড়তি কনটেইনার থাকলে কিংবা দেশীয় কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে ভাড়া করা কনটেইনারে এসব পণ্য আনা হলে এই বাড়তি অর্থ গুনতে হবে না। এসব বিবেচনায় কনটেইনার আমদানিতে শুল্কছাড় দেশের ডলার সাশ্রয় করবে।</p> <p>এবার বাজেটে সরকার যে চারটি পণ্য আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে তার মধ্যে দুটি হচ্ছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কনটেইনার ও সাধারণ কনটেইনার। অন্য দুটি টার্বো ও জেট ইঞ্জিন আমদানি।</p>