<p>গ্রাহকের অজান্তে অব্যবহৃত ব্যান্ডউইথড বা ব্যালান্স কোনো মোবাইল অপারেটর বা কম্পানি যাতে কেটে নিতে না পারে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিটিআরসিকে নির্দেশনা দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এ ছাড়াও তিনি বিটিআরসির লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানগুলোর গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করা এবং সকল নাগরিকের তথ্য ও নেটওয়ার্ক সুরক্ষার জন্য নিয়মিত ফাইন্যান্সিয়াল অডিটের পাশাপাশি এক্সটার্নাল আইটি অডিট নিশ্চিত করতে বিটিআরসিকে নির্দেশ দেন।</p> <p>প্রতিমন্ত্রী বুধবার (৮ মে) ঢাকায় বিটিআরসি মিলনায়তনে টেলিযোগাযোগ সেবা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যক্রম নিয়ে বিটিআরসির গণশুনানিতে বিটিআরসিকে এসব নির্দেশনা দেন।</p> <p>অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পলক বলেন, ‘বিদ্যমান টেলিযোগাযোগ আইনকে আমরা বর্তমান চাহিদা এবং ভবিষ্যতের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে আধুনিক ও ভবিষ্যৎমুখী আইন হিসেবে প্রণয়ন করতে যাচ্ছি। এখানে ২০১০-এর সর্বশেষ সংশোধনী অনুসারেই বিটিআরসির কর্মপরিধি এবং দায়িত্ব নির্ধারিত থাকবে। আমরা রেগুলেশনের সাথে ইনোভেশনকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করছি। উদ্ভাবনী সেবার প্রয়োগের মধ্য দিয়ে আমরা বিটিআরসির আয় বাড়াতে পারব।’</p> <p>প্রতিমন্ত্রী সরকারের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি সম্পর্কে গৃহীত উদ্যোগ তুলে ধরে শুনানিতে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে চাই না, আপনাদের অভিযোগ ও পরামর্শগুলো শুনে কাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিত করার সক্ষমতা বিটিআরসির রয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি পিলার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্ধারণ করে দিয়েছেন।’</p> <p>তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ সফলভাবে বাস্তবায়নে পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে রূপকল্প আমাদের সামনে দিয়েছেন সেটি বাস্তবায়নের জন্য প্রো-পিপল এবং সিটিজেন-সেন্ট্রিক সার্ভিস আমরা বিটিআরসির মাধ্যমে নিশ্চিত করতে চাই।’</p> <p>জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের পদযাত্রায় বিটিআরসির অসামান্য অবদান ছিল। প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নির্দেশনায় দেশের সকল মানুষের কাছে সুলভ মূল্যে ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া, শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা ও তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা এবং ডিজিটাল সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং প্রযুক্তি শিল্পের বিকাশের মতো ডিজিটাল বাংলাদেশের চারটি মূল স্তম্ভ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিটিআরসির অবদান রয়েছে। আজ টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি খাতে চারটি মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর, তিন হাজার আইএসপি লাইসেন্স হোল্ডার, প্রায় ৪০০ কল সেন্টারের প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রধান উপকারভোগী আমাদের সাধারণ নাগরিকরা।’</p> <p>তিনি বলেন, বিটিআরসির প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে দেশের মানুষের স্বার্থ রক্ষার জন্য। ফাইভজির জন্য নেটওয়ার্ক অপারেটররা যে স্পেক্ট্রামগুলো নিয়েছে সেগুলোকে সম্ভব হলে ফোরজির গুণগত মান উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করা হবে বলে জুনাইদ আহমেদ পলক উল্লেখ করেন। </p> <p>তিনি বলেন, ‘টেলিটককে অন্যান্য মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরের প্রতিদ্বন্দ্বী না হয়ে তাদের সহযোগী হিসেবে এবং বিটিসিএলের অবকাঠামো বেসরকারি খাতের প্রয়োজনে ব্যবহার করাসহ আমরা প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপের ভিত্তিতে কাজ করতে চাই। অল্প সম্পদ ব্যবহার করে বেশি সুবিধা পাওয়ার জন্য আমরা ইতিমধ্যে টাওয়ার শেয়ারিং গাইডলাইন বাস্তবায়ন করেছি।’</p> <p>বিটিআরসির চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিটিআরসির কমিশনাররা এবং মহাপরিচালকরা গণশুনানিতে অংশ নেন। সংশ্লিষ্ট সরকারি-আধাসরকারি-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান, গ্রাহক, বাংলাদেশের ভোক্তা সংঘ এবং বিভিন্ন পেশাজীবীসহ আগ্রহী ব্যক্তিরা এতে অংশ নিচ্ছেন। যারা সশরীরে উপস্থিত হতে পারননি তাদের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়।</p>