<p style="text-align:justify">জ্বালানি খাতে প্রতিযোগিতায় উৎসাহ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে এখন থেকে রাজনৈতিক সম্পর্কের পরিবর্তে দক্ষতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চুক্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জ্বালানি উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান।</p> <p style="text-align:justify">শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) আয়োজিত ‘শিল্প খাতে জ্বালানি সংকট নিরসনের উপায়’ শীর্ষক সেমিনারে উপদেষ্টা একথা জানান।</p> <p style="text-align:justify">ড. ফাওজুল বলেন, ‘পাবলিক সেক্টরে প্রতিযোগিতার অভাব রয়েছে। টিকে থাকতে হলে ঘুষ বাণিজ্য থেকে বের হতে হবে। সরকারি ক্রয়কে প্রতিযোগিতার মধ্যে আনার প্রয়োজন রয়েছে।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছরে মন্ত্রী বা সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ব্যবসায়ীদের একটি নির্বাচিত গোষ্ঠীই শুধু ঠিকাদারি পেয়েছে। এর ফলে সুস্থ প্রতিযোগিতা নষ্ট হয়েছে এবং বিনিময়ে দেশের অর্থনীতিকে নিষ্পেষণ করেছে তারা। এ বিষয়টিতে পরিবর্তন আনতে হবে। বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা হচ্ছে এবং এখন থেকে সব চুক্তি যোগ্যতার ভিত্তিতে হবে।’</p> <p style="text-align:justify">বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজের সভাপতিত্বে সেমিনারে জ্বালানি সংকট নিয়ে আলোচনা করেন নীতিনির্ধারক ও শিল্প নেতারা।</p> <p style="text-align:justify">বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন জ্বালানি উপদেষ্টার কথা সমর্থন করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে পরিস্থিতির উন্নতির কথা তুলে ধরেন।</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের চুক্তি চূড়ান্ত করতে এখন আর কোনো চাঁদাবাজি ফি দিতে হয় না। এই স্বচ্ছতা উদ্যোক্তাদের আধুনিক প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও তা গ্রহণে অনুপ্রাণিত করবে।’</p> <p style="text-align:justify">নারায়ণগঞ্জ, সাভার ও গাজীপুরের মতো শিল্পাঞ্চলে গ্যাস ও বিদ্যুতের তীব্র সংকট নিয়ে এ সময় ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিল্পপতিরা। এ বিষয়ে বিসিআই সভাপতি পারভেজ উদ্বেগজনক পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।</p> <p style="text-align:justify">তিনি জানান, জ্বালানি সংকটের কারণে চলতি বছরের মার্চ থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ২০০টি শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে, বন্ধের ঝুঁকিতে রয়েছে আরো ৩০০টি।</p> <p style="text-align:justify">এসব সংকটের জন্য বছরের পর বছর ধরে চলা সরকারি বিনিয়োগের অপব্যবহার ও অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করলেও চলমান সংস্কারের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন জ্বালানি উপদেষ্টা।</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও টেকসই সমাধানে বিনিয়োগ করতে হবে। সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র শিল্প কারখানার জন্য একটি কার্যকর বিকল্প হতে পারে।’</p> <p style="text-align:justify">স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে ভোলার গ্যাসক্ষেত্রে আবিষ্কৃত ৭০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ঢাকায় আনার জন্য একটি উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বানের পরিকল্পনাও প্রকাশ করেন উপদেষ্টা।</p> <p style="text-align:justify">২০৩০ সাল পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ স্থিতিশীল রাখার কথা তুলে ধরে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, ‘আগামী বছরের শুরুতেই বিশ্বের নাম করা জ্বালানি কম্পানির সঙ্গে অফশোরের গ্যাস নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারব বলে আশা করি।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘পাবর্ত্য এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস পাওয়ার বিপুল সম্ভাবনা আছে। এসব এলাকার গ্যাস অনুসন্ধানে অনশোর বিডিং ওপেন করার প্রস্তুতি চলছে। আশা করছি, আগামী মার্চের মধ্যে অনশোর বিডিং করা সম্ভব হবে।’</p> <p style="text-align:justify">জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় শিল্পভিত্তিক সহযোগিতা এবং চুক্তি প্রদানের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতার প্রতি নতুন করে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সেমিনারটি শেষ হয়।</p>