ঢাকা, বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫
৫ চৈত্র ১৪৩১, ১৮ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫
৫ চৈত্র ১৪৩১, ১৮ রমজান ১৪৪৬

অর্থনীতিতে অশনিসংকেত, প্রবৃদ্ধি নামবে ৩.৮ শতাংশে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
অর্থনীতিতে অশনিসংকেত, প্রবৃদ্ধি নামবে ৩.৮ শতাংশে
প্রতীকী ছবি

বাংলাদেশের দুর্বল অর্থনীতি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আরো আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। বরং যে হার চলছে তা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ধারণার চেয়েও অনেক বেশি। ব্যাংক খাতে সুশাসন ফেরানোসহ রাজস্ব আয় বাড়ানোর উদ্যোগেও চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

অর্থনীতিতে অশনিসংকেতএসবের প্রভাবে চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে ৩.৮ শতাংশে এসে ঠেকবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। তাদের মতে, অন্তর্বর্তী সরকার সফল না হলে তার প্রভাব পরবর্তী রাজনৈতিক সরকারের ওপর পড়বে। এসব আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন আইএমএফের রিভিউ মিশন প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও। তবে তিনি জানান, এমন পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশের জন্য চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় চতুর্থ কিস্তিতে ৬৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার আগামী বোর্ডসভায় ছাড় করবে সংস্থাটি।

আরো পড়ুন

ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় যেমন থাকবে আবহাওয়া

ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় যেমন থাকবে আবহাওয়া

 

গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে চলমান ঋণের কিস্তি আর আর্থিক খাতের নানা প্রসঙ্গে সংস্থার পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন আইএমএফ প্রতিনিধিদলের প্রধান। আর্থিক খাত পুনর্গঠনের রোডম্যাপ প্রণয়নসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা নিশ্চিতের গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি। 

তবে এই আশঙ্কার সঙ্গে ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আইএমএফের উদ্বেগ থাকলেও খুব একটা খারাপ নেই অর্থনীতি।

যদিও সংকট উত্তরণে রয়েছে চ্যালেঞ্জ। আইএমএফের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৩০০ কোটি ডলার পাওয়ার আশাবাদও ছিল অর্থ উপদেষ্টার বক্তব্যে।

এসব নিয়ে কথা বলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, সংস্থাটির পরামর্শ মতে জ্বালানিতে ভর্তুকির সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসছে সরকার। নতুন করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হবে না।

আরো পড়ুন

আজ ২০ ডিসেম্বর, দিনটি কেমন যাবে আপনার?

আজ ২০ ডিসেম্বর, দিনটি কেমন যাবে আপনার?

 

করোনাকালীন ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৩.৫১ শতাংশ। সেটি ছিল একটি বিশেষ পরিস্থিতি। এর পর জিডিপি প্রবৃদ্ধি উন্নতি হয়েছে। কিন্তু চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৩.৮ শতাংশে নামিয়েছে আইএমএফ।

এর আগে গত অক্টোবরে সংস্থাটি প্রক্ষেপণ করেছিল প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৪ শতাংশ হবে। এখন আইএমএফ জানায়, গণ-অভ্যুত্থান, বন্যা এবং কঠোর নীতির কারণে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে ৩.৮ শতাংশ হবে বলে অনুমান। তবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে তা ৬.৭ শতাংশে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আরো পড়ুন

বাবরের রানে ফেরার রাতে সিরিজ পাকিস্তানের

বাবরের রানে ফেরার রাতে সিরিজ পাকিস্তানের

 

আইএমএফ আরো অনুমান করছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে মূল্যস্ফীতি বার্ষিক গড় হিসেবে প্রায় ১১ শতাংশ থাকবে। তবে কঠোর নীতি এবং সরবরাহের চাপ কমার ফলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে তা ৫ শতাংশে নেমে আসবে।

বাংলাদেশের বাজারে অব্যাহতভাবে খাদ্যমূল্য বৃদ্ধি ও নতুন টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছাড়ার প্রভাব নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইএমএফ। এ জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রব্যমূল্য কমাতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়াসহ কর অব্যাহতি অপসারণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের রাশ টেনে ধরা, মুদ্রা সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ, বিনিময় হার আরো নমনীয় এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রাখার পরামর্শ সংস্থাটির।

আরো পড়ুন

গুপ্ত হত্যা ও টার্গেট কিলিংয়ের প্রতিবাদে মানববন্ধন

গুপ্ত হত্যা ও টার্গেট কিলিংয়ের প্রতিবাদে মানববন্ধন

 

ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, বাংলাদেশের বাজারে অব্যাহতভাবে খাদ্যমূল্য বাড়ছে, এ জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। সংস্থাটি মনে করে, মূল্যস্ফীতির চাপে বাংলাদেশের অর্থনীতি। এ জন্য প্রবৃদ্ধি কমবে। রাজস্ব আদায়ও কমেছে। রিজার্ভের অবস্থাও চাপের মুখে রয়েছে।

সরকার যে টাকা নতুন করে বাজারে ছেড়েছে সেটা দ্রুত বাজার থেকে তুলে নেবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের জানিয়েছে। তবে সেটা যদি না করে তাহলে মূল্যস্ফীতি আরো বাড়বে, যা দেশের সাধারণ মানুষের ভোগান্তি আরো বাড়াবে বলে মনে করে সংস্থাটি।

আইএমএফ বলছে, বাংলাদেশে কর রাজস্ব অনুপাত কম। তাই একটি স্বচ্ছ ও ন্যায্য রাজস্ব ব্যবস্থা গড়ে তুলতে জরুরি ভিত্তিতে রাজস্বসংক্রান্ত সংস্কার করতে হবে।

ব্যাংক খাতের দুর্বলতা দূর করার পরামর্শ দিয়ে আইএমএফ বলেছে, দ্রুত যেসব কাজ করতে হবে তার মধ্যে রয়েছে সঠিকভাবে খেলাপি ঋণ চিহ্নিত করা, বর্তমানে যেসব নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা রয়েছে তার কার্যকর বাস্তবায়ন এবং আর্থিক খাতে পুনর্গঠনের জন্য একটি রোডম্যাপ বা পথনকশা তৈরি করা। আর্থিক খাতের সংস্কার কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা ও সুশাসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে সংস্থাটি।

এ ছাড়া বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করা, বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো এবং তৈরি পোশাকশিল্পের বাইরে রপ্তানি খাত আরো বৈচিত্র্যময় করতে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের পাশাপাশি সুশাসন বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ। ঋণের চতুর্থ কিস্তি ছাড় ১০ ফেব্রুয়ারি চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য চতুর্থ কিস্তিতে ৬৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার ছাড় করতে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদ বোর্ডসভায় উপস্থাপন করা হবে। বোর্ডে অনুমোদন হলে ১০ ফেব্রুয়ারি তা ছাড় করা হবে বলে জানিয়েছেন ক্রিস পাপাজর্জিও।

আরো পড়ুন

গবেষকরা নাকাল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চাহিদা মেটাতে

গবেষকরা নাকাল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চাহিদা মেটাতে

 

তবে চলমান ঋণের বাইরে আইএমএফের কাছে অতিরিক্ত ৩০০ কোটি ডলার চেয়েছিল বাংলাদেশ। সংস্থাটির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকের পর শেষ পর্যন্ত মাত্র পৌনে এক বিলিয়ন (৭৫ কোটি) ডলারের চুক্তি হয়েছে। একই সঙ্গে চলমান ঋণের চতুর্থ কিস্তির অঙ্ক আগের কিস্তির চেয়ে প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। যদিও এই কিস্তিতে অন্তত ১১০ কোটি ডলার ছাড় করার আবেদন করেছিল সরকার।

সূত্রে জানা গেছে, খেলাপি ঋণসহ বিভিন্ন আর্থিক তথ্য গোপন করে সূচকের উন্নতি এবং কঠিন শর্ত মেনে আইএমএফ থেকে ঋণ নিচ্ছিল ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকার। তবে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এই নীতি থেকে সড়ে এসেছে। আর্থিক সূচক খারাপ হবে এটা জেনেও খেলাপি ঋণ, মূল্যস্ফীতি এবং ব্যালান্স অব পেমেন্টের প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। এতে সূচকগুলোতে ব্যাপক অবনতি হয়। আর আর্থিক সূচকের অবনতির কারণে ঋণে কঠোর শর্ত জুড়ে দেয় আইএমএফ। কঠিন শর্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির মতো কঠিন শর্ত মানতে রাজি না হওয়ায় তিন বিলিয়নের ঋণ চুক্তি এক বিলিয়নের নিচে নেমে আসে।

২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ। এ পর্যন্ত তিন কিস্তিতে ২৩০ কোটি ডলার ঋণ ছাড় করেছে সংস্থাটি। চতুর্থ কিস্তি ঋণ দেওয়ার আগে গত ৩ থেকে ১৮ ডিসেম্বর আইএমএফের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করে। সফরে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ও বিদ্যমান ঋণের চতুর্থ কিস্তির কাঠামোগত সংস্কারের শর্ত পালন নিয়ে পর্যালোচনা করে দলটি।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

এক বছরে আমানত বেড়েছে ২২০ কোটি টাকা

    কৃষকদের হিসাব ও আমানত সবচেয়ে বেশি
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
এক বছরে আমানত বেড়েছে ২২০ কোটি টাকা
সংগৃহীত ছবি

দেশে ক্ষুদ্র আমানতকারীদের ব্যাংক হিসাব ও আমানতের স্থিতি বেড়েছে। সামপ্রতিক সময়ে বড় আমানতকারী অর্থাৎ কোটিপতিদের ব্যাংক হিসাবের সংখ্যাও বেড়েছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সুবিধা দিতে ১০, ৫০ ও ১০০ টাকার ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ করে দিয়েছিল সরকার। এগুলোকে নো ফ্রিলস অ্যাকাউন্ট (এনএফএ) বলা হয়।

গত ডিসেম্বর শেষে এসব ব্যাংক হিসাবে আমানত দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের একই সময় যার পরিমাণ ছিল চার হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে স্বল্প আয়ের মানুষের ব্যাংক হিসাবে জমা বেড়েছে ২২০ কোটি টাকা বা ৪.৬৯ শতাংশ। তবে স্কুল ব্যাংকিং ও কর্মজীবী শিশুদের অ্যাকাউন্ট এই হিসাবের বাইরে।

এই নো ফ্রিলস অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ব্যালান্স বা সার্ভিস চার্জ বা ফি নেই। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের আর্থিক সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন উদ্যোগের আওতায় এসব অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত কয়েক মাস আগেও দেশে ব্যাপক রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছিল।

তবে এর পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সংকট কিছুটা কাটতে  শুরু করেছে। আর এতেই দেশের ব্যাংকিং খাতের ওপর মানুষের আস্থা ফিরতে শুরু করেছে। এর ফলে স্বল্প আয়ের মানুষও ব্যাংকে টাকা রাখছে। পাশাপাশি ব্যাংকগুলোকে ঠিক করতে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকও বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এসব কারণে ব্যাংকে আমানত ফিরে আসছে।

২০১০ সালে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সুবিধা দিতে ১০, ৫০ ও ১০০ টাকার ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ করে দিয়েছিল সরকার। এগুলোকে নো ফ্রিলস অ্যাকাউন্টস (এনএফএ) বলা হয়। এসব অ্যাকাউন্টের ন্যূনতম সার্ভিস চার্জ বা ফি নেই। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের আর্থিক সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন উদ্যোগের আওতায় এসব অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। কৃষকরা ছাড়াও এসব হিসাবের আওতায় থাকেন পোশাক শ্রমিক, অতিদরিদ্র মানুষ, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির সুবিধাভোগীসহ অনেকে। এর মধ্যে কৃষকদের হিসাব ও আমানত সবচেয়ে বেশি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ১০, ৫০ ও ১০০ টাকা দিয়ে খোলা স্বল্প আয়ের মানুষের ব্যাংক হিসাবে আমানতের পরিমাণ ছিল চার হাজার ২৮২ কোটি টাকা। আর ডিসেম্বর শেষে এসব হিসাবে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে ১০, ৫০ ও ১০০ টাকা দিয়ে খোলা হিসাবে আমানত বেড়েছে ৪০৩ কোটি টাকা বা ৮.৬০ শতাংশ।

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোতে নো ফ্রিল অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল দুই কোটি ৭৮ লাখ ৭১ হাজার ৮৭৮টি। ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোতে স্বল্প আয়ের মানুষের অ্যাকাউন্ট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ৮১ লাখ ২৩ হাজার ৩৯০টি। সেই হিসাবে তিন মাসে অ্যাকাউন্ট সংখ্যা বেড়েছে দুই লাখ ৫১ হাজার ৫১২টি।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার পালাবদলের পর ব্যাংক খাত নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। তখন ব্যাংক শতভাগ সিকিউরড খাত হবে কি না, এমন দ্বিধায় অনেকে ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নিয়েছিলেন। সে সময় এসব হিসাব থেকেও আমানত তুলে নেওয়া হয়। সরকার পতনের পর ব্যাংকগুলোর পর্ষদ পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাই নভেম্বর-ডিসেম্বর নাগাদ এ খাত নিয়ে আবার আস্থা তৈরি হয়।

এ ছাড়া গত বছরের ডিসেম্বর শেষে এসব হিসাবের মাধ্যমে আসা মোট প্রবাস আয়ের পরিমাণ ছিল ৭৭২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা, যা ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের রেমিট্যান্সের তুলনায় ৬.১৬ শতাংশ বেশি।

মন্তব্য

সিগারেটে কর বাড়ছে না আগামী বাজেটে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
সিগারেটে কর বাড়ছে না আগামী বাজেটে
সংগৃহীত ছবি

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটের ওপর আর কর বাড়ানো হবে না। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান এ তথ্য জানিয়েছেন।

বুধবার (১৯ মার্চ) এনবিআর ভবনের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনাসভায় তিনি এ কথা জানান।

আরো পড়ুন
ঈদে ফিরছেন ঐন্দ্রিলা

ঈদে ফিরছেন ঐন্দ্রিলা

 

দেশে সিগারেটের চেয়ে বিড়ির ট্যাক্স কম উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, নকল বিড়ির উৎপাদন বন্ধ না করলে বিড়ি মালিক শিল্প সমিতির বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

আবদুর রহমান খান আরো বলেন, ভ্যাট থেকে যে পরিমাণ রাজস্ব আসার কথা, তা আসে না। ভোক্তা ভ্যাট দিয়ে রিসিট না নিলে, রাজস্ব বাড়বে না। যারা ভ্যাট দিয়ে রিসিট নেবে তাদের লটারির মাধ্যমে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত পুরস্কার দেওয়া হবে। সে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

মন্তব্য
এনবিআর-আত্মা প্রাক-বাজেট সভা

সিগারেটে মূল্যস্তর কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব আত্মা’র

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
সিগারেটে মূল্যস্তর কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব আত্মা’র
ছবি: কালের কণ্ঠ

সিগারেটে চারটি মূল্যস্তর (নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ ও প্রিমিয়াম) থাকায় তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ সঠিকভাবে কাজ করছে না। বিশেষ করে নিম্ন এবং মধ্যম স্তরের সিগারেটের দাম কাছাকাছি হওয়ায় ভোক্তা যেকোনো একটি স্তরের সিগারেট বেছে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এই দুইটি স্তর একত্রিত করে সিগারেটে মোট তিনটি মূল্যস্তর নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা)। 

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় এই দাবি জানানো হয়।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

প্রাক-বাজেট (২০২৫-২৬) আলোচনা সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, সিগারেটের স্তর সংখ্যা চারটি থেকে কমিয়ে তিনটিতে নামিয়ে আনা এবং দাম বাড়ানোর বিষয় বিবেচনা করবে এনবিআর। পাশাপাশি প্রজ্ঞা ও আত্মা’র তামাক কর কাঠামো সংস্কারে অতিরিক্ত ২০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ প্রস্তাবকে সাধুবাদ জানান তিনি।

বাংলাদেশে তামাকপণ্য অত্যন্ত সস্তা এবং নিত্যপণ্যের তুলনায় এগুলো আরো সস্তা হয়ে পড়ছে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত ৭টি মহানগরীর (ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল এবং রংপুর) নিত্যপণ্যের গড় খুচরা মূল্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০২১ সালের (৪ জুলাই) তুলনায় ২০২৩ সালে (৪ জুলাই) খোলা চিনির দাম বেড়েছে ৮৯ শতাংশ, আলু ৮৭ শতাংশ, খোলা আটা ৭৫ শতাংশ, পাঙ্গাস মাছ ৪৭ শতাংশ, ডিম ৪৩ শতাংশ, সয়াবিন তেল ৩৪ শতাংশ, গুঁড়ো দুধ ৩০ শতাংশ, এবং ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ২৭ শতাংশ। অথচ একইসময়ে বিভিন্ন স্তরের সিগারেটের দাম বেড়েছে মাত্র ৬ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত। ফলে তরুণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী এই ক্ষতিকর পণ্য ব্যবহারে বিশেষভাবে উৎসাহিত হচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।

প্রাক-বাজেট সভায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আত্মা’র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিয়েছেন দৈনিক জনকণ্ঠের সিটি এডিটর কাওসার রহমান, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ডেপুটি এডিটর সাজ্জাদুর রহমান, আত্মা’র কনভেনর মর্তুজা হায়দার লিটন এবং কো-কনভেনর মিজান চৌধুরী।


 
আত্মা’র পক্ষ থেকে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটের নিম্ন এবং মধ্যম স্তরকে একত্রিত করে প্রতি ১০ শলাকার খুচরা মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়। এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে স্বল্প আয়ের ধূমপায়ী ধূমপান ছাড়তে বিশেষভাবে উৎসাহিত হবে। একইসঙ্গে তরুণ প্রজন্ম ধূমপান শুরু করতেও নিরুৎসাহিত হবে বলে সভায় জানানো হয়। এ ছাড়া প্রতি ১০ শলাকা উচ্চ স্তরের সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৪০ টাকায় অপরিবর্তিত রাখা এবং প্রিমিয়াম স্তরের প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৯০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়। এই তিনটি স্তরে সম্পূরক শুল্ক ৬৭ শতাংশ বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়।

প্রাক-বাজেট সভায় ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২৫ টাকা এবং ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়। প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার খুচরা মূল্য ৫৫ টাকা এবং ১০ গ্রাম গুলের খুচরা মূল্য ৩০ টাকা নির্ধারণ করে ৬০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়। এ ছাড়া সকল তামাকপণ্যের খুচরা মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং ১ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বহাল রাখার প্রস্তাব করা হয়।

আসন্ন বাজেটে প্রস্তাবিত তামাক কর সংস্কার বাস্তবায়ন করা হলে ২০ (বিশ) হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় অর্জিত হবে। রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য পূরণ এবং জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে এটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। একইসঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে প্রায় নয় লাখ তরুণসহ মোট সতেরো লাখের অধিক মানুষের অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক (ধূমপান ও ধোঁয়াবিহীন) ব্যবহার করেন, বছরে ১ লাখ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত রোগে মৃত্যুবরণ করে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির (চিকিৎসা ব্যয় এবং উৎপাদনশীলতা হারানো) পরিমাণ ছিল ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা।

মন্তব্য

ফের বাড়ল সোনার দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ফের বাড়ল সোনার দাম
সংগৃহীত ছবি

দেশের বাজারে আরো বেড়েছে সোনার দাম। নতুন করে প্রতি ভরিতে ভালো মানের সোনা (২২ ক্যারেট) দাম ১ হাজার ৪৭০ টাকা বেড়ে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯৪৫ টাকা হয়েছে। বুধবার (১৯ মার্চ) থেকে সারা দেশে সোনার নতুন এ দর কার্যকর হবে।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) রাতে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোনার এ মূল্য বৃদ্ধির তথ্য জানায়।

 

এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী (পিওর গোল্ড) সোনার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সে কারণে সোনার দাম সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাজুস।

নতুন মূল্য অনুযায়ী, ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম বেড়ে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ২৬ হাজার ৭৭৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম এক লাখ ৪ হাজার ৪৯৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী, বর্তমানে ২২ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি দুই হাজার ৫৭৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি দুই হাজার ৪৪৯ টাকা এবং ১৮ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি দুই হাজার ১১১ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম এক হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ