<p style="text-align:justify">জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আইন ও বিচার বিভাগের দুই শিক্ষকের অব্যাহতির দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। এ সময় ওই দুই শিক্ষককে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অব্যাহতি নেওয়ার দাবি জানিয়ে বলা হয়, সসম্মানে তারা অব্যাহতি না নিলে শিক্ষার্থীরা তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করবে। </p> <p style="text-align:justify">আজ রবিবার (১১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে শিক্ষার্থীরা বিভাগে তালা দিয়ে জানায়, যতদিন ওই দুই শিক্ষক চাকরি থেকে অব্যাহতি নেবেন না ততদিন তালা ঝুলবে। </p> <p style="text-align:justify">বিভাগের দুই শিক্ষক হচ্ছেন- অধ্যাপক তাপস কুমার ও সহযোগী অধ্যাপক সুপ্রভাত পাল। অধ্যাপক তাপস কুমার আইন ও বিচার বিভাগের চেয়ারম্যান এবং অনুষদের ডিন।</p> <p style="text-align:justify">মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ১১টি অনিয়ম ও হয়রানির ঘটনা তুলে ধরে বলেন, তাপস কুমার দাস আইন অনুষদের ডিন ও আইন বিভাগের সভাপতি হওয়ার পরও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নানাভাবে হয়রানি করেছেন। তিনি আন্দোলনকারীদের ‘দুষ্কৃতিকারী’ আখ্যা দিয়ে তাদের বাবা-মাকে ফোন দিয়ে আন্দোলন থেকে সরিয়ে নিতে বলেছেন। তিনি আইন অনুষদের ডিন হিসেবে জাবি প্রশাসন কর্তৃক গঠিত আইনি সহায়তা সেলের একজন সদস্য। তাই মামলা পরিচালনার জন্য জাবি আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে দক্ষ আইনজীবী থাকার পরও তাদের নাম সুপারিশ না করে তিনি অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জুনিয়র আইনজীবী নিয়োগ দেন। এর পেছনে আর্থিক ও আন্দোলন বিরোধী রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা। </p> <p style="text-align:justify">এদিকে বিভাগের অন্য শিক্ষক সুপ্রভাত পালের বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে জনসম্মুখে গায়ে হাত তোলার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি চলমান ব্যাচের দুই মেয়ে শিক্ষার্থীকে লাথি মারার হুমকি দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তা ছাড়া বিভাগের এক মেয়ে শিক্ষার্থী বর্তমান আইন অনুষদের ডিনের বিরুদ্ধে বিবাহবহির্ভূত যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করলে তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়। এমনকি তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়। </p> <p style="text-align:justify">এদিকে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে অনুষদের ডিন তাপস কুমার দাস ও সহযোগী অধ্যাপক সুপ্রভাত পাল কিছু শিক্ষার্থীর রেজাল্ট বাড়িয়ে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ আছে। তা ছাড়া প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক না থাকায় প্রচুর খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়, যাদের বেশিরভাগই অযোগ্য ও অদক্ষ। ডিন ও তার সমর্থিত শিক্ষকদের স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয় বলে মনে করেন অনেকে।</p> <p style="text-align:justify">মানববন্ধনে ৫২ ব্যাচের শিক্ষার্থী রেজাউল হক রাহি বলেন, ‘আন্দোলন চলাকালে পুলিশ আমাদের তুলে নিয়ে যায়। আমরা শিক্ষার্থী পরিচয় দেওয়ার পর তারা আমাদের ছাড়েনি। আমরা যখন আমাদের ডিন তাপস স্যারকে কল দিলাম তিনি আমাদের শিক্ষার্থী পরিচয় না দিয়ে দুষ্কৃতকারী পরিচয় দেন।’</p> <p style="text-align:justify">এ সময় আরেক শিক্ষার্থী জানান, ‘গত ১৫ জুলাই রাতে আমাদের এক জুনিয়র গুলিবিদ্ধ হয়। ওই শিক্ষার্থীর বাবা নিরাপত্তার জন্য আমাদের ডিনকে কল ডিন তাকে বলেন, আপনার ছেলে সোহেলের (ছাত্রলীগের সভাপতি) এলাকার লোক হওয়ার পরও কেন ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে? একজন ডিন হয়ে একজন শিক্ষার্থীর বাবাকে তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, আপনার ছেলের এতো সাহস কেন? সে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় কেন? একজন শিক্ষক হয়ে তিনি যে ধরনের লেজুড়বৃত্তি করতেন, তা কোনো শিক্ষকের আচরণ হতে পারে না।’</p>