<p>স্বৈরাচার সরকার পতনের পর রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবিবি) উপাচার্য, প্রক্টর, ট্রেজারারসহ ৪০ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন। তাদের পদত্যাগে বিশ্ববিদ্যালয় অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে নিজের ইচ্ছামতো অফিস করে চলে যান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মনে চাইলে অফিস করেন, না চাইলে করেন না তারা। </p> <p>সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, ডেসপাস শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার, প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী, প্রক্টর অফিসের সেকশন অফিসার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী, ড. ওয়াজেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র রিসার্চ অফিসার, প্রিন্সপ্যাল রিসার্চ অফিসার, সহকারী রেজিস্ট্রার, সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার, কেন্দ্রীয় ভান্ডারের সহকারী রেজিস্ট্রার (স্টোর), বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট, বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গমাতা হলের সহকারী-রেজিস্টার, পেনশন শাখার উপ-পরিচালক, বিভিন্ন দপ্তর প্রধানসহ বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে দেখা যায়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চেয়ারগুলো খালি পড়ে আছে। আবার বেলা ২টার সময় গিয়েও কয়েকটি দপ্তরে চেয়ার ফাঁকা পড়ে থাকতে দেখা যায়। </p> <p>বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক সকাল ৯টা শুরু হয় দাপ্তরিক সময়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরগুলোতে ঘুরে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। অধিকাংশ দপ্তরে গিয়ে দেখা মিলে দুই-একজন কর্মচারীর। অধিকাংশ কর্মকর্তারা নেই। </p> <p>অফিসে এলেও দপ্তর প্রধান বা পরিচালক না থাকায় আড্ডা গল্প-গুজব করে সময় পার করছেন তারা। দশম গ্রেডের ওপরের কর্মকর্তাদের উপস্থিতির কোনো ডকুমেন্টস বা স্বাক্ষর নেওয়া হয় না৷ অফিসে আসা বা না আসার প্রমাণ থাকে না।  </p> <p>অন্যদিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিস সময় (বিকাল ৫টা) শেষ হওয়ার আগেই চলে যেতে দেখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৯-৫টা পর্যন্ত অফিস সময়। এতে ব্যাহত হচ্ছে প্রশাসনিক, শিক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা কার্যক্রম, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চলছে স্বাধীনভাবে।</p> <p>দাপ্তরিক সময়ে কর্মকর্তা কর্মচারীদের কক্ষে না থাকাকে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার ফল বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন সময়ে দাপ্তরিক কাজে গেলেও হয়রানির শিকার হন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। </p> <p>২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী সৈয়দ রেজাউল করিম বলেন, ‘পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের সার্টিফিকেট উত্তোলনের করতে গেলে কর্মকর্তারা বলেন, সময় দিতে হবে, এখন কেউ নেই, দুপুরের পরে আসেন। এমনকি তারা এটাও বলেন, অমুক দিন আসেন।’</p> <p>আরেক শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটা দপ্তরে অনিয়ম দুর্নীতি চলছেই। কেউ সঠিক সময়ে অফিসে আসেন না, সময় শেষ হওয়ার আগেই চলে যান। এজন্যই আমাদের দেশ এখনো দুর্নীতির শীর্ষে।’</p> <p>উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হলে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আলমগী চৌধুরী বলেন, ‘এখানে উপাচার্য স্যার নেই, আর এই জন্য কোনো জবাবদিহি নেই। এখন প্রশাসনে একমাত্র আমি আছি, এই সব কিছু পরিচালনা করা আমার পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’</p> <p>উল্লেখ, আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটি ছাড়াই রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আলমগীর চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। কারণ রেজিস্ট্রার উপাচার্যের নিকট থেকে ছুটি নিয়ে থাকেন। এই বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।</p>