<p>বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার ও উন্নতি সাধনের লক্ষ্যে প্রশাসনের নিকট ২১ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীরা। রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়টির মিলনায়তনে চুয়েট প্রশাসন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় এ দাবিগুলো তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা।</p> <p>উত্থাপিত দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সেমিস্টারের সময়সীমা হ্রাস ও এসাইনমেন্টের ব্যবস্থা, পরীক্ষার খাতায় কোডিং সিস্টেম চালু, অধ্যাপক ড. ইসলাম মিয়া এবং আন্দোলনে সহিংসতায় অভিযুক্ত চুয়েট ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণের পাশাপাশি সংস্কার,  ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিতকরণ, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে হওয়া দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণ, মেয়েদের হলগুলোর পাশাপাশি সব আবাসিক হলের সুবিধা বৃদ্ধি, চুয়েটে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া যথাযথকরণ ও শিক্ষাদানের মান বৃদ্ধি,  লাইব্রেরি এবং একাডেমিক ল্যাব সুবিধার পাশাপাশি খেলাধুলার ক্ষেত্রে উন্নয়ন, বিএইটিই স্বীকৃতি এবং ইন্ডাস্ট্রি ওরিয়েন্টেড সিলেবাস বাস্তবায়ন, পরিবেশ সুরক্ষা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি, ক্যান্টিনের পাশাপাশি সার্বিকভাবে খাবারের মান বৃদ্ধি, বাজেট বরাদ্দ ও ব্যয়ের হিসাব ওয়েবসাইটে প্রকাশ, ক্যাম্পাস ও চুয়েট বাসে ধূমপান ও মাদক সেবন নিষিদ্ধকরণ, নির্মাণাধীন ভবনগুলোর অবশিষ্ট কাজ দ্রুত সমাপ্ত করা। পাশাপাশি পূর্বে সংঘটিত নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় প্রস্তাবকৃত দাবিসমূহ দ্রুত বাস্তবায়ন করার জন্যও দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। </p> <p>দাবিসমূহের ব্যাপারে চুয়েটের প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্বপ্রাপ্ত পুর ও পরিবেশ প্রকৌশল ফ্যাকাল্টির ডিন অধ্যাপক ড. সুদীপ কুমার পালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা মূলত আজকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে তাদের কথা শুনেছি। যেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করতে পারব, তাদেরকে সেই ব্যাপারে বুঝিয়েছি। আমার ধারণা, তারাও বুঝেছে। বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে একটা মিটিংও ডাকা হয়েছে। কিছু কিছু দাবি পূরণে সময় প্রয়োজন। তারা সেগুলোতে সময় দিয়েছে, আমরাও সময় নিয়েছি। এগুলোর অগ্রগতি নিয়ে পরবর্তী সপ্তাহে আবার মিটিং করব। আসলে ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে আমাদের এমন আলোচনাটা দরকার ছিল। তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এসেছে। আমি মনে করি সংস্কার সব জায়গা থেকেই প্রয়োজন। তবে, সেটা যেন নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে হয়। এ জন্য সার্বিকভাবে আমাদের আজকের মতবিনিময়ের প্রয়োজন ছিল।’ </p> <p>এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহাফুজার রহমান মোহাব্বত বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরবর্তী দেশ পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারকে অত্যন্ত জরুরি। এই সংস্কারের লক্ষ্যে যৌক্তিক ২১ দফা দাবি পেশ করেছি, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিবেশ উন্নত করতে সহায়ক হবে। স্যারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তাদের আন্তরিকতা দেখে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করছি, প্রশাসন দ্রুততম সময়ে এসব দাবি বাস্তবায়ন করবে। তবে, যদি সংস্কারের এই উদ্যোগ সফল না হয়, তাহলে আন্দোলনের শহীদ, আহত এবং নির্যাতিতদের প্রতি অবিচার করা হবে। এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে, আমরা যে কোনো কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবো।’</p>