<p>বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক আবাসিক হলে ছাত্রলীগের নির্মম নির্যাতনে শহীদ হওয়া আবরার ফাহাদের ৫ম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘সংহতি সমাবেশ’ করার ঘোষণা দিয়েছে ‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’ নামক একটি প্লাটফর্ম। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।</p> <p>শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্ল্যাটফর্মটির মুখপাত্র রায়হান উদ্দীন।</p> <p>রায়হান জানান, আগামী সোমবার (৭ অক্টোবর) রাজধানীর শাহবাগে এই সমাবেশের আয়োজন করবে ‘নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’। এ ছাড়া, দেশের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনগুলো নতুন বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদ ও নিপীড়নমুক্ত রাখার দাবিতে সংহতি প্রকাশ করবেন।</p> <p>সংবাদ সম্মেলনে এক লিখিত বক্তব্যে রায়হান বলেন, জুলাই বিপ্লবে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ও পলায়নের পর বাংলাদেশ সরকার ফ্যাসিবাদ ও গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার একটি অন্তর্বর্তী সময় পার করছে। গত দেড় যুগের বেশি সময় ধরে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থনৈতিক শোষণ, রাজনৈতিক নিপীড়ন, হত্যা, গুম, হামলা, মামলাসহ সীমাহীন দুর্নীতি রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে ফ্যাসিবাদের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। যেখানে সরকারি বাহিনী ব্যবহার করে আওয়ামী নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও মতাদর্শের ওপর নির্যাতনের খড়গ চাপিয়ে দিয়েছিল। এর শিকার হতে হয়েছিল দেশের সকল ভিন্নমতের মানুষদের।</p> <p>তিনি বলেন, রাষ্ট্রব্যবস্থার ফ্যাসিবাদী আচরণের অংশ হিসেবে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এক প্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছিল স্বৈরাচারী সরকারের মদদপুষ্ট ছাত্রলীগের কাছে। যেখানে ছাত্ররাজনীতির নামে প্রতিপক্ষকে হত্যা, নির্যাতন, নিপীড়ন ছিল নিত্য-নৈমত্তিক ব্যাপার। দেশের শীর্ষস্থানীয় বিদ্যাপীঠ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) তার ব্যতিক্রম ছিল না। ছাত্রলীগের অপরাজনীতির বলি হতে হয় বুয়েটের তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে, যা ছিল ছাত্রলীগের বিগত ১৫ বছরে ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থী নিপীড়নের একটি উদাহরণ মাত্র। বিগত ৫ আগস্ট দেশের আপামর ছাত্র-জনতা ধর্ম, বর্ণ ও রাজনৈতিক মতপার্থক্য ভুলে গিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসে। যার দরুণ দেশে অভূতপূর্ব একটি ছাত্র-নাগরিক অভ্যুত্থানের সূচনা হয় এবং স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতন হয়। এর মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা হয়।</p> <p>রায়হান উদ্দীন আরো বলেন, দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের মদদপুষ্ট ছাত্রলীগের নিপীড়নের অন্যতম উদাহরণ ছিল শহীদ আবরার ফাহাদ। শহীদ আবরার ফাহাদ ছিলেন আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে একটি জাগ্রত কণ্ঠস্বর। আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লেখালেখির কারণে তাকে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে রাতভর অমানুষিক নির্যাতনের মাধ্যমে শহীদ করা হয়। একটি স্বাধীন দেশে ফ্যাসিবাদ ও তার দোসরদের মাধ্যমে বিগত বছরগুলোতে শিক্ষাঙ্গন, কর্মস্থল ও অন্যান্য পরিসরে যেসকল নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে তার জন্য তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে এ সকল ঘটনার যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করছি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় অখণ্ডতা সুরক্ষার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ দাবি করছি।</p> <p>সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন প্ল্যাটফর্মটির বুয়েট প্রতিনিধি আব্দুর নূর তুষার ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. জাকারিয়া।</p>