<p>রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দুই শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে হল প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। সোমবার (৪ নভেম্বর) হলের নোটিশ বোর্ডে এক শিক্ষার্থীর নামসহ নোটিশ টানিয়ে হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় প্রশাসন। অন্য আরেক শিক্ষার্থীকে মুঠোফোনে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।</p> <p>তিনি হলেন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম। ওই দুই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ এবং নাজমুস সাকিব।</p> <p>নোটিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ একটি নিষিদ্ধ সংগঠন হওয়ার কারণে এই হলে ছাত্রলীগের ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর প্রকাশিত তালিকায় পদধারী হওয়ার প্রেক্ষিতে শেরে বাংলা ফজলুল হক হলে বর্তমানে অবস্থানকারী এবং নতুনভাবে আবাসিকতা লাভের জন্য প্রাথমিকভাবে তালিকাভুক্ত ছাত্রদের আবাসিকতা কেন বাতিল করা হবে না তা আগামী ১০ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে অফিসে জানানোর জন্য বলা হয়েছে।</p> <p>তবে ওই দুই শিক্ষার্থীর দাবি, শুধু নামের মিল থাকায় তারা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষকে জানালেও তিনি নোটিশ সরাননি বলে জানান তারা। </p> <p>রাজু আহমেদ বলেন, 'এই নোটিশ দেখার পর প্রাধ্যক্ষের কাছে গিয়ে সব পরিষ্কার করার পরও তিনি নোটিশ রেখেছেন। রাজু নামে এই হলে আরো তিনজন শিক্ষার্থী আছেন, কিন্তু নোটিশে আমার নামই কেন এলো, আমি জানি না। প্রাধ্যক্ষ বলেছেন, এটি ভুল করে হয়েছে। কিন্তু নোটিশ সরাতে বললে তিনি (প্রাধ্যক্ষ) বলেন ‘তুমি যদি ছাত্রলীগের না হয়ে থাকো তাহলে নোটিশে সমস্যা কই।’ আমি মাস্টার্সের শিক্ষার্থী, বিভাগের শিক্ষার্থীরা এটা দেখে আমায় ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করছে আমি আবার কবে এসবে (ছাত্রলীগ) গেলাম।'</p> <p>আরেক শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব বলেন, ‘২৬ তারিখ সিলসিলায় আমি জেলা সমিতির একটা মিটিংয়ে ছিলাম। তখন হলের প্রভোস্ট আমাকে ফোন দিয়ে বলে, ‘তুমি কি নাজমুস সাকিব বলছ? তখন আমি বলছিলাম, জ্বী স্যার আমি নাজমুস সাকিব। তখন স্যার আমাকে বলে, তোমার রুমে কি মাহবুব, ফরিদ আর সৈকত থাকে? তখন আমি বলছিলাম, জ্বী স্যার ওরা থাকে। পরে তিনি আমাকে বলেন, তুমি শেরে বাংলা হলের ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। তুমি জান ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তুমি হলে থাকতে পারবে না। তখন সঙ্গে সঙ্গে আমি স্যারকে বলি, স্যার আপনার ভুল হচ্ছে। আমি কখনো তাদের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। হয়ত আপনার তথ্যগত ভুল হচ্ছে। পরের দিন স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি আমাকে বলেন, ম্যাটেরিয়াল সায়েন্সের একটা ছেলের নাম তোমার নামেই ছিল। তাই আমাদের তথ্যগত ভুল হয়েছে। পরে আমি বললাম, সাধারণ শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে হয়রানি করা কেন হচ্ছে? তিনি উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে গেলেন।’</p> <p>অভিযোগের বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ বলেন, হলের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এবং ছাত্রলীগের সর্বশেষ কমিটির তালিকার নামের সঙ্গে মিল থাকায় তাদের এই নোটিশ দিয়ে ১০ দিনের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে। তারপর সেটা হল প্রশাসন তদন্ত করবে। যদি তারা জড়িত না থাকে তবে তাদের নাম বাদ দেওয়া হবে। </p>