<p>করপোরেটে কাজ করতে গেলে কর্মীদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার ভুগতে হয়। এই সমস্যাগুলোর সঠিক কোনো সমাধানও করা যায় না। আবার কিছু সমস্যা সমাধান করা গেলেও সেটি প্রকৃত কর্মীবান্ধব হয় না। তাই করপোরেটের এসব সমস্যা সমাধানের জন্য দরকার দক্ষতাসম্পন্ন এইচআর নেতৃত্ব। যার মাধ্যমে কর্মীদের এসব সমস্যা যোক্তিক এবং সুন্দর সমাধান করা সম্ভব। </p> <p>শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) মিলনায়তনে ইউনিভার্সিটির হিউম্যান রিসোর্সেস ক্লাব (এইচআর) আয়োজিত বেঙ্গল টি প্রেজেন্ট এইচআর কেলিব্রেশন ৪.০ কর্মশালার ফাইনালে বক্তারা এসব কথা বলেন।</p> <p>দেশের সবচেয়ে বড় আন্ত বিশ্ববিদ্যালয় মানবসম্পদ বিষয়ে বিজনেস কেস কম্পিটিশনের এই ফাইনাল টানা দেড় মাস পর অনুষ্ঠিত হলো। এই যাত্রায় দেশের ৩২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এই আয়োজনের মিডিয়া পার্টনার ছিল কালের কণ্ঠ। দুই ধাপে প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই আয়োজনের শেষ ধাপে নর্থ সাউথ ইউনিভাসির্টি প্রাঙ্গণে ৭টি দল ফাইনালে অংশ নেয়। </p> <p>আয়োজকরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় এবং চাকরির বাজারের মাঝে দূরত্ব কমানোই ছিল এই আয়োজনের প্রধান উদ্দেশ্য। যেটি সফল আয়োজনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে ফাইনালে সাত দলের মধ্যে বিজয়ী হয় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) দল দ্য ওয়াকিং ডেট, প্রথম রানার্স আপ হয় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের টিম ওয়ান ডি এবং দ্বিতীয় রানার্স আপ হয় একই বিশ্ববিদ্যালয়ের রাইজ অব দ্য প্রফেশনাল অ্যাপস।</p> <p>অংশগ্রহণকারী কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, ফাইনালে অংশ নেওয়ার সম্মান অর্জন করার জন্য দলগুলোকে শুধু তাদের সামনে আনা সমস্যাগুলোর সমাধান করে থেমে যেতে হয়নি, তাদের অফিসে কর্মচারীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করতে ও কাজ করতে হয়েছে। এ ছাড়া তাদের মাতৃত্বকালীন এবং পিতৃত্বকালীন ছুটি নিয়েও কাজ করতে হয়েছে।</p> <p>প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল হান্নান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মানবসম্পদ বিষয়ক যেকোনো সমস্যা সাধারণত উপেক্ষিত হয়। আমি মনে করি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচআর ক্লাবের এই অসাধারণ উদ্যোগ ভবিষ্যতে এই সেক্টরে পরিবর্তনের সমস্যাগুলোর সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিজয়ী দলগুলোর জন্য আমার শুভেচ্ছা এবং যারা এই পর্যায়ে এসেছে। আশা করি, তারাও ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতে পারবে।’</p> <p>অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক্সের ডিন ড. এ কে েএম ওয়ারেসুল কারীম, বেঙ্গল টি সিটি গ্রুপের টি অপারেশনের জেনারেল ম্যানেজার সাজ্জাত সারোয়ার।</p> <p>আয়োজনের উদ্দেশ্য এবং সফলতা নিয়ে এনএসইউ এইচআর ক্লাবের জয়েন্ট সেক্রেটারি রেজওয়ানুল ইসলাম তানভীর কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের ক্লাব ২০১৪ সালে কাজ শুরু করে। মানবসম্পদ বিভাগের এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের করপোরেটের সঙ্গে সংযোগ করানোর উদ্দেশ্যেই আমাদের যাত্রা শুরু হয়। আমাদের এই আয়োজন প্রতিবছরই হয়ে থাকে। এবারের আয়োজনের উদ্দেশ্য হচ্ছে মানবসম্পদ বিভাগ এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে দূরত্ব কমানো। এবারের থিম হচ্ছে আমরা কিভাবে বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিতে বা করপোরেটে কিভাবে কর্মীবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে পারি। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা এই সম্পর্কিত সমস্যারই সমাধান করেছে।’</p> <p>তিনি বলেন, ‘এই আয়োজনের সমাপ্তির মাধ্যমে আমাদের কাজ শেষ হচ্ছে না। প্রতিযোগিতায় যারা অংশ নিয়েছেন, যারা বিজয়ী অথবা রানার আপ হয়েছেন তারা যাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে এইচআরের নেতৃত্ব দিতে পারেন এবং নেতৃত্ব নিয়ে যেনো তারা তাদের প্রতিষ্ঠানে কর্মীবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে পারেন, সেটি আমরা নজরে রাখব। একই সঙ্গে তারা যাতে সহজে কর্মীদের সমস্যা বুঝতে পারেন এবং সমাধান করতে পারেন। যেমন মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়ে একটি সমস্যা রয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মীরা এই বিষয়ে ভুক্তভোগী হয়ে থাকেন। এই ধরনের সমস্যা সামনে এনে প্রতিযোগীদের সমাধান করতে বলা হয় এবং তারা করেন।’</p> <p>ফাইনালের উদ্বোধন করেন এনএসইউ এইচআর ক্লাবের ফ্যাকাল্টি অ্যাডভাইজার তাসনিম তারান্নুম। এর আগে চূড়ান্ত দলগুলো তাদের প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করে। উপস্থাপনার জন্য প্রতিটি দলকে দেওয়া হয় ২৫ মিনিট। সন্ধা ৭টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত বিরতির পর আবারও শুরু হয় প্রেজেন্টশন। বিরতির পর কাজের পরিবেশে এইচআরের গুরুত্বের বিষয়ে আলোচনা করা হয়। পরে স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপনের পর বিচারকরা আয়োজক এবং অংশগ্রহণকারী দলগুলোর বিষয়ে বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। এরপর অনুষ্ঠানটি প্রচারণামূলক ভিডিও এবং মূল ব্যক্তিদের বক্তব্যের পর অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়- ঘোষণা করা হয় চ্যাম্পিয়নদের নাম। পরে পুরস্কার বিতরণের পর এনএসইউ এইচআর ক্লাবের সভাপতি শেখ রিশাদ উল আরবের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে।</p>