<p style="text-align:justify">জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের পরিচিতিমূলকসভায় হট্টগোল হয়েছে। সভা ঘিরে নবগঠিত কমিটির নেতাকর্মী ও পদবঞ্চিতদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এ সময় জানালার কাচ ভাঙচুরও হয়। এক পর্যায়ে সভাটি স্থগিত করেন ছাত্রদলের জাবি শাখার আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর।</p> <p style="text-align:justify">আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনারকক্ষে এ ঘটনা ঘটে।</p> <p style="text-align:justify">বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ জানুয়ারি জাবি শাখা ছাত্রদলের ১৭৭ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটির পক্ষ থেকে আজ পরিচিতিসভার আয়োজন করা হয়।</p> <p style="text-align:justify">প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিকেলে সভা শুরু হলে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা হট্টগোল শুরু করেন। তারা পদের দাবি তোলার পাশাপাশি অভিযোগ করেন- কমিটিতে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা পদ পেয়েছেন। এ সময় তারা স্লোগান দিতে দিতে বের হয়ে যান।</p> <p style="text-align:justify">সেখান থেকে বের হয়ে তারা কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে চলে যান। কিছুক্ষণ পর তারা আবার ঘটনাস্থলে গিয়ে জহির রায়হান মিলনায়তনের সবগুলো লাইট (বাতি) বন্ধ করে দেন। সেমিনার কক্ষের বাইরে জড়ো হয়ে ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটিতে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের পদ দেওয়া হয়েছে দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এ</p> <p style="text-align:justify">এ সময় সেমিনার কক্ষের ভেতরে থাকা পরিচিতিমূলক সভায় উপস্থিত পদধারী নেতাকর্মীরাও স্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সেমিনার কক্ষের বাইরে থাকা পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা সেমিনার কক্ষের বাইরে থেকে কক্ষের জানালার কাঁচ ভাঙচুর করেন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ঘটনাস্থলে গিয়ে মিলনায়তনের লাইটগুলো চালু করেন। তখন সভাটি স্থগিত ঘোষণা করা হলে উভয় পক্ষ চলে যায়।</p> <p style="text-align:justify">এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী ও পদবঞ্চিত নেতা আব্দুল কাদের মারজুক বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট দানব শেখ হাসিনার স্টিমরোলার সহ্য করে গত এক যুগ ধরে আমরা যারা আন্দোলন করেছি। আমাদের বঞ্চিত করে যে পকেট কমিটি হয়েছে সেই কমিটি মানি না।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেককে বঞ্চিত করা হয়েছে। অথচ ৫ আগস্টের পরও অনেকে প্রগ্রাম করেনি, তার নামও এসেছে এই কমিটিতে। এই কমিটি কিভাবে সভা-সমাবেশ করতে হয় তাও জানে না। আমরা এসেছিলাম এগুলো নিয়ে কথা বলতে, কিন্তু এই কমিটি এতটাই অযোগ্য যে তারা এই পরিবেশটাও তৈরি করে দিতে পারেনি।’</p> <p style="text-align:justify">বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর বলেন, ‘নতুন কমিটির সবাইকে নিয়ে একটি আনুষ্ঠানিক পরিচয় পর্বের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা ছিল। যারা নতুন কমিটিতে আছেন আমরা তাদেরকেই আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে কয়েকজন উপস্থিত ছিল যাদের আমরা নাম-পরিচয় জানি না।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি গুপ্ত সংগঠনের ইন্ধনে তারা আমাদের প্রগ্রাম বানচালের চেষ্টা করেছে। এখানে একটা অংশ ছিল যারা বিরোধী রাজনীতি করেছে, যাদের মধ্যে একটা না পাওয়ার বেদনা ছিল। আমরা সেই বেদনাটা কমিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছি। আমরা সবাইকে নিয়ে একসাথে কাজ করার চেষ্টা করছি। আমরা মনে করি তৃতীয় পক্ষের ইন্ধনে আজকের ঘটনা ঘটেছে।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের বড় একটি কমিটি হয়েছে, এই কমিটির সবার বিস্তারিত আমাদের কাছে এখনও নেই। কেন্দ্রীয় সংসদ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যদি এই কমিটির কারো সাথে ছাত্রলীগ বা ছাত্রশিবিরের সাথে সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, তাহলে তাদেরকে অব্যাহতি দিয়ে দেওয়া হবে।’</p> <p style="text-align:justify">বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, ‘যে ঘটনাটি ঘটেছে তা আসলেই কাম্য নয়। আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েই লাইটের (আলো) ব্যবস্থা করেছি। আশা করব কেউ রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট না করার ব্যাপারে সচেতন থাকবে।’</p>