জুলাই-আগস্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সংঘটিত সহিংস ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গঠিত সত্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২৮ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে গত বছরের ১৫ জুলাই ঢাবিতে হামলায় সরাসরি অংশ নিলেও ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, বাকি হলগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নামসহ হামলায় অংশ নেওয়া অনেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর নাম তালিকায় না আসায় বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের তালিকা ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।
এতে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এতো সময় নিয়ে তদন্ত করে মাত্র ১২৮ জনকে বহিষ্কার করেছে।
কিন্তু হামলাকারীর সংখ্যা প্রায় ৫০০ এর মতো। ঢাকা মেডিক্যালের বহিঃবিভাগে ঢুকেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা করেছে। এতো প্রমাণ, ছবি, ভিডিও ফুটেজ থাকার পরও কেন তাদের বহিষ্কার করা হয়নি সেটির জবাবদিহিতা চাইতে আমরা এখানে এসেছি।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় সংগঠক হামজা মাহবুব নিজের ফেসবুক পোস্টে বলেন, এই তালিকায় জহুরুল হক হলের ডাইনিংয়ের ভেতরে আশ্রয় নেওয়া নারী শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করে করে পেটানো জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন রানা নাই।
এই তালিকায় জহুরুল হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি, ক্যাম্পাসের রিনোউনড মাদকব্যবসায়ী ও অস্ত্র ব্যবসায়ী সাকিবুর রহমান সায়েম নাই। এই তালিকায় 'চালাইদেন' পরিভাষার জনক হাফিজুর রহমান নাই। জগন্নাথ হলের ভবতোষ নামে মাত্র একজন আছে তালিকায়, আর কারও নাম নাই।
তিনি আরো বলেন, আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে দুইটা মামলায় প্রায় ৬০০ জনের বিরুদ্ধে প্রমাণাদিসহ মামলা করেছিলাম।
আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি নাকি মাত্র ১২৮ জনকে খুঁজে পেয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায় সত্যানুসন্ধান কমিটি কর্তৃক চিহ্নিত ১২৮ জনের তালিকাটি পূর্ণাঙ্গ নয়। এ নিয়ে বিভ্রান্ত না হতে আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঢাবি ক্যাম্পাসে সংঘটিত সহিংস ঘটনায় সত্যানুসন্ধান কমিটি কর্তৃক চিহ্নিত ১২৮ জনের বিষয়টি আমলে নিয়ে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হল, বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে সহিংস ঘটনায় জড়িতদের তথ্য চেয়ে চিঠি দেবে 'অধিকতর তদন্ত কমিটি'। পরে এই কমিটি প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করে খুব শিগগিরই তদন্ত কমিটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ করবে।
পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টের ভিত্তিতে দোষীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।