<p>ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার একটি গ্রামে ক্ষতিকর নিম্নমানের সরিষার তেল প্রস্তুত করে 'মদিনা খাঁটি সরিষার তৈল' নাম ব্যবহার করে বাজারজাত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।</p> <p>অভিযোগ রয়েছে, নকল ওই সরিষার তেলের বোতলে একই আদলে 'মদিনা খাঁটি সরিষার তৈল'র মোড়ক লাগিয়ে স্বল্পমূল্যে বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে এসব 'ক্ষতিকর' নকল তেল।</p> <p>বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে মদিনা অয়েল মিলের পক্ষ থেকে গত বুধবার বাঞ্ছারামপুর ও নবীনগরের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্তি পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) ও বাঞ্ছারামপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।</p> <p>ওই লিখিত অভিযোগ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের অন্যতম সরিষার তেল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান 'মদিনা অয়েল মিল' ২০০৩ সাল থেকে সরকারি অনুমোদন নিয়ে (বিএসটিআই অনুমোদিত) 'মদিনা খাঁটি সরিষার তৈল' নাম দিয়ে সারা দেশে সরবরাহ করে আসছে।</p> <p>লিখিত ওই আবেদনে অভিযোগ করা হয়, নরসিংদীতে প্রতিষ্ঠিত মদিনা অয়েল মিলের সুনাম পরিকল্পিতভাবে নষ্ট করার লক্ষ্যে একটি চক্র গত কয়েক মাস ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ছলিমাবাদ গ্রামে নকল কারখানা গড়ে তুলে 'মদিনা খাঁটি সরিষার  তৈল' নাম দিয়ে ওই অঞ্চলে বাজারজাত করছে। ছলিমাবাদ গ্রামের কালু মেম্বারের ছেলে আতিক মিয়ার নেতৃত্বে এই অপকর্ম নির্বিঘ্নে  চলছে বলেও আবেদনে অভিযোগ করা হয়।</p> <p>তবে একই আদলে প্রস্তুত দুটি বোতলের মোড়ক দেখতে হুবহু একই রকম দেখা গেলেও, নকল মদিনা তেলের বোতলটিতে সুকৌশলে বড় অক্ষরে মদিনা লেখাটির ওপর ছোট্ট করে 'আল' শব্দটি যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আসল 'মদিনা সরিষার তৈল'র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে 'মেসার্স মদিনা অয়েল মিল, লাকড়িপট্টি, নরসিংদী লেখা থাকলেও, নকল মদিনা সরিষার তৈল'র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এসকেএম অয়েল মিল, নরসিংদী লেখা দেখতে পাওয়া যায়।</p> <p>এ ব্যাপারে আবেদনকারী মদিনা অয়েল মিলের চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লা অঞ্চলের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক (আরএসএম) মো. আক্তার হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'মদিনা নাম দিয়ে প্রস্তুত এই নিম্নমানের নকল সরিষার তেল আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি, এটি মানুষের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এটি সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়। এই নকল তেল বাজারজাত হওয়ায় আমাদের প্রতিষ্ঠানের সুনাম বিনষ্ট ও ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। তাই দ্রুত এর প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি।'</p> <p>এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছলিমাবাদ গ্রামের আতিক মিয়ার সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও কথা বলা যায়নি তার সঙ্গে।</p> <p>ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্তি পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) মো. মেহেদী হাসান বলেন, 'বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে বাঞ্ছারামপুরের ওসিকে এরইমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'</p> <p>বাঞ্ছারামপরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম লিখিত আবেদনের প্রাপ্তি স্বীকার করে কালের কণ্ঠকে মুঠোফোনে বলেন, 'শিগগির ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' </p>