<p>যশোরের ঝিকরগাছায় আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় এ বছর পাটের ফলন ভালো হয়নি। গত কয়েক দিনে বাজারদর কিছুটা বাড়লেও হাসি নেই কৃষকের মুখে। তবে প্রতিবিঘায় ৪-৫ হাজার টাকার লোকসানে পাটচাষির পিঠরক্ষা হচ্ছে পাটকাঠি (পাটখড়ি) বিক্রি করে।</p> <p>ঝিকরগাছায় এ বছর ৫ হাজার ৫ শ হেক্টর জমিতে পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। চাষ হয়েছে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে। ফলন হয়েছে ১০ হাজার ৮ মেট্রিকটন পাট। আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় এ বছর পাটের ফলন ভালো হয়নি। বিশেষ করে বপনের কিছুদিন পরে খরা হওয়ায় পাটগাছ তেমন বাড়েনি। আর কাটার পরে তো পানির অভাবে পাট জাগ দিতে চাষিদেরকে জলাশয় শ্যালোমেশিন দিয়ে ভরাট করতে হয়েছে। ফলে, গুনতে হয়েছে বাড়তি খরচ। </p> <p>উপজেলার বল্লা গ্রামের মেহেদী হাসান চঞ্জল ৭ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিল। বিঘাপ্রতি গড়ে ১৩ মন পাট পেয়েছেন। তার দাবি ভারতীয় উচ্চফলনশীল জাতের পাট এবার ফলন ভালো হয়েছে। একই গ্রামের আব্দুর রব ও আব্দুস সামাদ জানান, একদিকে খরার কারণে ফলন কম হয়েছে অপরদিকে, দাম না থাকায় পাট চাষে গচ্চা গুনতে হচ্ছে। তবে পাটকাঠির (পাটখড়ি) দাম ভালো থাকায় পিঠরক্ষা হচ্চে তাতে। পাট চাষে বীজ ক্রয়, জমি প্রস্তুত, সার-কীটনাশক, পরিচর্যা (নিড়ানি) ও সেচ বাবদ খরচ হয়েছে বিঘায় ১০-১১ হাজার টাকা। এরপর পাট কাটা-বাঁধা, বহন, পচানো (জাগ) ও ছাল ছাড়ানোসহ (ধোয়া) খরচ হয়েছে ৬-৭ হাজার টাকা। তারপর পাট শুকানোতেও খরচ হয়েছে দেড়-দুই হাজার টাকা। সবমিলিয়ে প্রতিবিঘা জমিতে পাট চাষ থেকে শুরু করে মহাজনের পাল্লায় পৌঁছাতে খরচ হচ্ছে ২২-২৩ হাজার টাকা।</p> <p>গত এক সপ্তাহ ধরে ঝিকরগাছার বিভিন্ন হাটবাজারে পাটের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১২ শ থেকে ১৪ শ টাকা মণ। ঝিকরগাছা বোটঘাট রোডের পাট ব্যবসায়ী আব্দুল আলিম জানান, পাটের প্রকারভেদে কেনা হচ্ছে ১৩ শ থেকে ১৪ শ টাকা পর্যন্ত। সে হিসেবে প্রতিবিঘা জমির পাট বিক্রি করে কৃষক পাচ্ছে ১৮-১৯ হাজার আর পাটকাঠিতে (পাটখড়ি) আসছে ৪-৫ হাজার টাকা। এরপরও পাটচাষে কৃষকের লোকসান গুনতে হচ্ছে। </p> <p>তবে বর্গাচাষিদের লোকসানের পরিমাণ আরো বেশি।উপজেলার নোয়ালী গ্রামের আমিরুল ইসলাম জানান, পাট চাষ করে লাভ হয়েছে শুধু পাটকাঠি। সরকারের নির্ধারিত মূল্যে পাট বিক্রি করতে পারলে কৃষকের মুখে হাসি থাকত- এমনটাই দাবি অনেক কৃষকের।</p>