জেলার কয়েকটি সর্ববৃহৎ বড় বিলের মধ্যে রুহুল বিল অন্যতম। সরকারিভাবে বিলের মাঝখানে মৎস্য অভয়াশ্রম করায় দেশীয় নানা প্রজাতির মাছ বাস করে এই বিলে। এ কারণে আশপাশের অন্তত ৩০টি গ্রামের কয়েক শ মৎস্যজীবী শতাধিক একর আয়তনের এই বিলে মাছ শিকার করে সারাবছর জীবিকা নির্বাহ করে। তবে বাংলা বছরের অগ্রাহায়ণ মাসের সুবিধামতো শনি ও মঙ্গলবারে এই বিলে মৎস্য শিকার উৎসব পালিত হয়।
সৌখিন মৎস্যজীবীদের 'পলো উৎসব'
ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি

পূর্বঘোষণা অনুযায়ী এ দিন সকাল থেকেই পাবনা ও আশপাশের জেলা থেকে সহস্রাধিক মানুষ পলো, উড়ালজাল, লাঠিজাল, পাতাজালসহ নানা ধরনের মাছ শিকারের সরঞ্জামাদি নিয়ে বিল এলাকায় হাজির হতে থাকে। পরে শীতের সকালে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা পানি উপেক্ষা করে সকলে একজোট হয়ে বিভিন্ন ধরনের ধ্বনি দিয়ে বিলে নেমে পড়ে।
মাছ শিকারে অংশগ্রহণকারী নাটোরের নুরুল ইসলাম বলেন, বিলের পানিতে পলো দিয়ে মাছ ধরা আমার একটি নেশা। তাই আশপাশের বিভিন্ন জেলার কোনো বিলে বাউৎ উৎসব হলেই আমি সেখানে অংশগ্রহণের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করি। গত প্রায় ৬-৭ বছর ধরে আমি এই রুহুল বিলে মাছ শিকার করতে আসি। তবে প্রতিবছরই মাছ নিয়ে বাড়ি ফিরলেও এ বছর খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। রাজশাহী থেকে মাছ মারতে আসা শফিকুল ইসলাম বলেন, ছোটবেলা থেকেই মাছ ধরা আমার শখ। সেই শখের বশবর্তী হয়েই আজ পাবনার এই বিলে পলো নিয়ে মাছ ধরতে এসেছি।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা মৎস্য অফিসের মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আলী আযম বলেন, জেলার বড় বিলগুলোর মধ্যে রুহুল বিল অন্যতম। প্রতিবছর এ সময়ে এই বিলে মৎস্য শিকার উৎসবে মানুষের ঢল নামে। তবে এ বছর বিলে মাছের পরিমাণ কম। পেশাদার মৎস্যজীবীরা আগেই মাছ মেরে নেওয়ায় মাছের এই সংকট। তবে এতে সৌখিন মৎস্যজীবীদের আগ্রহের কোনো ঘাটতি পড়বে না। এ ছাড়া আগামীতে যেন মৌসুমের আগেই কেউ মাছ মেরে নিতে না পারে সে ব্যাপারে নজরদারি বাড়ানো হবে।
সম্পর্কিত খবর

চাঁদা না পেয়ে গেট বন্ধ করে ব্যবসায়ীর বাড়িতে আগুন
কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে চাঁদা না দেওয়ায় নয়ন সরকার নামের এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় রবিবার (১৬ মার্চ) থানায় একটি অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সোনামুখী ইউনিয়নের সোনামুখী বাজারের ব্যবসায়ী নয়নের কাছে চাঁদা দাবি করেন একই গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে শিবলী রেজা বাবু। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় শনিবার রাতে বাড়ির গেট আটকিয়ে আগুন দেন তিনি।
নয়নের এক প্রতিবেশী বলেন, 'আমি রাতে শব্দ শুনে ঘরের জানালা খুলে দেখি নয়নদের বাড়িতে আগুন জ্বলছে। তাড়াহুড়া করে ঘর থেকে বের হয়ে দেখি, অনেক লোকজন তার মধ্যে শিবলীও রয়েছে। লোকজন আগুন নেভাতে গেলে শিবলী তাদের আগুন নেভাতে নিষেধ করে। আগুন নেভাতে নিষেধ করলে আমি শিবলীকে গালাগাল করে বলি, আগুন কেনো নেভাবে না, বাড়ি পুড়ে শেষ হয়ে গেল।
অভিযুক্ত শিবলীর সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করেও সাড়া মেলেনি।
কাজিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম জানান, 'রবিবার সকালে প্রাথমিক তদন্ত করেছি। এরপর বিকেলে নয়ন একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফেনীতে ২২ কেজি গাঁজাসহ ২ নারী আটক
ফেনী প্রতিনিধি

ফেনীর মহিপালে ২২ কেজি গাঁজাসহ দুই নারীকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। রবিবার (১৬ মার্চ) সকালে ফেনীর মহিপাল বাস স্টেশন এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার পাইপ বাগান এলাকার কাদের হোসেনের মেয়ে রশিদা বেগম (৬০) ও একই এলাকার আবদুর শুক্কুরের মেয়ে সুফিয়া খাতুন (৪৫)।
র্যাব জানায়, রবিবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদক পাচারের খবর পেয়ে উপজেলার বাসস্টেশন এলাকায় অভিযান চালায় র্যাব।
ফেনী র্যাব-৭-এর মিডিয়া ইউং সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এ আর এম মোজাফফর হোসেন কালের কণ্ঠকে জানান, আটককৃতরা কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মাদক সংগ্রহ করে সুকৌশলে চট্টগ্রাম ও ফেনী জেলার আশপাশের এলাকায় বিক্রি করে আসছিল।
এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুজ্জামান বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে।’

সাভারে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের সহযোগী গ্রেপ্তার
সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা

হত্যা মামলায় সাভারের সাবেক উপজেলা চেয়্যারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজিবের একান্ত সহযোগী মামুনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিবার (১৬ মার্চ) সাভারের ব্যাংক কলোনি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা জেলা উত্তর (ডিবি) পুলিশ।
মামুন সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের ভরারী এলাকার বিল্লাল হোসেনের ছেলে।
ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ইনচার্জ মো. জালাল উদ্দীন বলেন, জুলাই আন্দোলনে প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে ছাত্র-জনতার হামলা চালিয়ে হত্যার মামলাসহ মামুনের বিরুদ্ধে সাভারের হেমায়েতপুর ভরারী এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম, চাঁদাবাজি, অবৈধভাবে জমি দখলসহ একাধিক মামলা ও অভিযোগ রয়েছে।

ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় বৃদ্ধকে পেটালেন যুবদল নেতা
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, নেত্রকোনা

ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় প্রতিবন্ধী বৃদ্ধকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে সাকের খান নামের এক যুবদল নেতার বিরুদ্ধে। আহত অবস্থায় ওই বৃদ্ধকে স্বজনরা উদ্ধার করে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।
শনিবার (১৬ মার্চ) উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের তিয়শ্রী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত বৃদ্ধ হক মিয়া (৬০) একই ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের মৃত ডেন্ডু মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় লোকজন ও ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন জানায়, হক মিয়া একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে তার সংসার। নিজের ৩ শতাংশ বসতভিটে ছাড়া কোনো জমিও নেই। সরকারি একটি ঘর পেতে তথাকথিত সাংবাদিক পরিচয়ধারী ও যুবদল নেতা সাকের খানকে ৪ বছর আগে ১৪ হাজার টাকা ঘুষ দেন।
শনিবার বিকেলে বৃদ্ধ হক মিয়া টাকা চাইতে তিয়শ্রী গ্রামে সাকের খানের শ্বশুর বাড়িতে যান। টাকা চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে সাকের খান ওই বৃদ্ধকে লাঠিপেটা করে গুরুতর আহত করে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সাকের খান ঘর জামাই থাকেন। সে নানা অপকর্মের সঙ্গে তিনি জড়িত। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজি, তদবির বাণিজ্যসহ সব ধরনের অপরাধ করে গেছেন। এর আগে ২০১৯ সালে মামলা তদবির করার জন্য নায়েকপুর গ্রামের হাসিম উদ্দিম নামের বৃদ্ধের কাছ থেকে ঘুষ নেন। কাজ না করেই টাকা আত্মসাৎ করায় পাওনা টাকা ফেরত চাইলে পিতা-পুত্রকে পিটিয়ে আহত করেছিল। এ নিয়ে থানায় অভিযোগ হলেও বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়। বিভিন্ন অফিসেও নানা অপকর্ম করায় তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকলেও সংশ্লিষ্টরা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বার বার অপকর্ম করলেও কোন শাস্তি না হওয়ায় এখন তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
ভুক্তভোগী হক মিয়া জানান, আমি গরীব মানুষ। ঘর দিবে বলে সাকের খান ১৪ হাজার টাকা ঘুষ নেন। ৪ বছর ঘুরে ৩ হাজার টাকা ফেরত নিয়েছি। বাকি টাকা ফেরত চাওয়ায় আমাকে মারপিট করেছে। আমি তার বিচার চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাকের খানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে মদন উপজেলা যুবদলের সভাপতি গোলাম রাসেল রুবেল বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি। আহত হক মিয়ার স্বজনদের সঙ্গে কথা হয়েছে। টাকার লেনদেন পরিশোধ করে বিষয়টি সমাধান করার জন্য তাদের বলেছি।
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাঈম মোহাম্মদ নাহিদ হাসান জানান, এ ঘটনায় এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।