<p>ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে করোনাভাইরাস প্রেক্ষাপটে গুজব রটনাকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন পোস্ট ও মেসেজ দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে অনেকেই। আবার পরিকল্পিতভাবে ভুয়া তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে করোনাভাইরাসজনিত সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপকে অকার্যকর এবং ব্যর্থ প্রমাণ করার চেষ্টা করছে। এ অবস্থায় গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া না হলে সামনের দিনগুলোতে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।</p> <p>জানা যায়, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে গুজব রটনাকারীরা প্রতিনিয়ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন পোস্ট ও মেসেজ দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। সম্প্রতি ফেসবুকে এক আইডি থেকে গুজব রটনা করা হয় যে, চীনের বিখ্যাত করোনাভাইরাস বিশেষজ্ঞ মৃত্যুর আগে বলে গেছেন ‘তিনটি কেমিকেল করোনাভাইরাসকে মেরে ফেলতে পারে। এই তিনটি কেমিকেল চায়ের মধ্যে রয়েছে। কেউ যদি দিনে ৩টি চা খান তা হলে তার করোনা ভাইরাস হওয়ার সম্ভাবনা নাই এবং হলেও ভাল হয়ে যাবে।’  ভিন্ন এক আইডি থেকে বলা হয়েছে, ‘গফরগাঁওয়ের পুখুরিয়ায় এক নারীর সদ্যজাত শিশু হঠাৎ কথা বলে জানায় করোনা ভাইরাসে কালোজিরা, লং আদা খেলে ভাল হয়ে যায়। পরে শিশুটি মারা যায়’। একই কথা ভিন্ন আইডি থেকে ভালুকার বিরুনিয়া ও ফরিদপুর জেলার একটি গ্রামের উল্লেখ করে গুজব রটনা করা হয়েছে। </p> <p>এক আইডি থেকে বলা হয়েছে, ‘রাত ১১টা ৪০ মিনিটে কেউ বাহিরে থাকবেন না, ‘এ সময় হেলিকপ্টার দিয়ে বাতাসে জীবানুনাশক ছিটানো হবে।’ </p> <p>আবার ভিন্ন ভিন্ন আইডি থেকে বলা হচ্ছে, ‘সন্ধ্যায় নারিকেল গাছে পানি দিলে করোনাভাইরাস ভালো হয়ে যাবে।’  </p> <p>এছাড়া ধর্মীয় বিষয়কে পুঁজি করে নানা গুজবে সয়লাব হয়ে গেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। রটনাকারীরা হাজার হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারীর মেসেঞ্জারে এসব গুজব লিখে সেন্ড করছে। এতে করোনাভাইরাস নিয়ে মানুষের সতর্কতা আতঙ্কে পরিণত হচ্ছে।</p> <p>খায়রুল্লাহ সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক নূরুজ্জামান বলেন, স্বাভাবিক কারনেই মানুষ বিশ্ব মহামারী করোনা নিয়ে খুবই চিন্তিত, ভীত। মানুষের এই দুঃসময়ে আবেগ অনুভুতি নিয়ে গুজব রটনাকারীরা মেতে উঠেছে। গুজব রটনা করা ধর্মীয় আমান আমলের পরিপন্থি। গুজব রটনাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা উচিত।</p> <p>উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন খান বলেন, এ সব গুজবের কোনো ভিত্তি নেই। গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে দুই মাসের জেল, ২৫ হাজার টাকা জরিমানাসহ উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।</p> <p>অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গফরগাঁও সার্কেল) আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, অনলাইনে গুজব বা মিথ্যা তথ্য রটনাকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের অবস্থান খুবই কঠোর। এদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সংশ্লিষ্ট আইনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</p>