<p>'শিক্ষক হাসিকনা মরিয়া প্রমাণ করিল, অবৈধ সুদের কারবারি নির্মূল করা দরকার!' বলছিলেন ষাটোর্ধ্ব বয়সী অনন্ত তরফদার। খড়মখালী গ্রামে তাঁর বাড়ি। তাঁর প্রতিবেশী এক নারী শিক্ষকের প্রাণের বিনিময়ে অবশেষে অবৈধ সুদের কারবারিদের বিরুদ্ধে আজ  বুধবার মামলা হয়েছে। তাদের ধরতে অভিযানে নেমেছে পুলিশ। তবে এখনো কোনো আসামিকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।</p> <p>সুদখোরদের নানামুখী অত্যাচার এবং একজন নারী শিক্ষকের রহস্যজনক মৃত্যুর এই অমানবিক ঘটনা কয়েক দিন ধরে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোড়নের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার এই মামলা হয়।</p> <p>পুলিশ সূত্র জানায়, বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার দক্ষিণ শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হাসিকনা বিশ্বাসকে (৩৩) আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার বিষয়ে তাঁর স্বামী শিক্ষক কান্তি ডাকুয়া বাদী হয়ে এই মামলা করেন। গত সোমবার হাসিকনার রহস্যজনক মৃত্যুর পর থানায় ইউডি মামলা হয়। তাঁর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ।</p> <p>চিতলমারী থানার ওসি মীর শরিফুল হক বুধবার কালের কণ্ঠকে জানান, গোটা চিতলমারী উপজেলা অবৈধ সুদের ব্যবসায়ীমুক্ত করতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। সুদের দেনার চাপে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক। ওই শিক্ষকের স্বামী বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাতদের আসামি করে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা করেছেন। মামলাটি তদন্তে আছে। অচিরেই অবৈধ সুদের ব্যবসায়ীরা আটক হবে।</p> <p>জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে হাসিকনা ও তার স্বামীর উপর এলাকার প্রভাবশালী অবৈধ সুদখোররা নানাভাবে অত্যাচার নির্যাতন করছিল। এমনি প্রেক্ষপাটে গত সোমবার দুপুরে বিদ্যালয় হতে বাড়িতে ফেরার পথে যুগল কান্তি পাওনাদার দুই সুদ ব্যবসায়ী অনুপ বসু ও রেফাজুলকে দেখতে পায়। তাদের সাথে দেনা-পাওনা নিয়ে কথা বলেন। ওই দিনই হাসিকনা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। এই ঘটনার একদিন আগে আরো কয়েক জন সুদ ব্যবসায়ী পাওনা টাকার চেয়ে তাদের নানাভাবে অপমান-অপদস্ত করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।</p>