<p>কক্সবাজারের চকরিয়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারক শূন্য অবস্থায় দীর্ঘ এক বছর ২২ দিন অতিবাহিত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আদালতে বিচারক শূন্য থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে বিচারপ্রার্থীদের। বিচারক শূন্য থাকায় ঝুলে আছে ৪৪৫১টি দেওয়ানী মামলার কার্যক্রম। এই অবস্থায় আদালতে নতুন করে একজন সহকারী জজ নিয়োগ দেওয়া হলে ঝুলে থাকা মামলার নিষ্পত্তি এবং জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধ কমে আসা ছাড়াও চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার সাত লাখ মানুষের ভোগান্তি দূর হবে বলে মনে করেন আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা।</p> <p>সংশ্লিষ্টরা জানান, বিচারাধীন মামলায় তাৎক্ষণিক কোনো আদেশ প্রচার (নিষেধাজ্ঞা/স্থিতাবস্থা) করতে না পারায় অপতৎপরতা বেড়েছে ভূমিদস্যুদের। এমনকি পারিবারিক মামলায় চূড়ান্ত রায় হওয়ার পর মোহরানার টাকা জমা করা সত্বেও আদালতে সহকারী জজ না থাকায় সেই টাকা উত্তোলনেও প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে। কিছু মামলার পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করতে না পারায় অভিযুক্ত ব্যক্তি টাকা জমা না করে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন।</p> <p>আদালত সূত্র জানায়, লন্ডন সরকারের শেভিনিং বৃত্তিপ্রাপ্ত হওয়ায় ২০১৯ সালের ২৭ আগস্ট আইন মন্ত্রণালয়ে বদলী হন চকরিয়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারক মো. আব্বাস উদ্দিন। এই আদালতে তিনি যোগ দেন ২০১৮ সালের ১০ নভেম্বর। কিন্তু তিনি বদলী হওয়ায় ইতোমধ্যে এক বছর ২২ দিন অতিবাহিত হলেও<br /> সেই পদটি বিচারক শূন্যই রয়েছে। এতে মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে জটিলতা শুরু হয়েছে।</p> <p>স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর মোহরানা আদায়ের মামলা করেন কাউসার জন্নাত। তিনি বলেন, আমার মোহরানা পাওয়ার জন্য মামলা করলে আদালত মাসিক কিস্তিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা দেওয়ার আদেশ দেন। সেই আদেশের পর কয়েক কিস্তির টাকা জমা দিলেও এক বছরের বেশিসময় ধরে সেই কিস্তির টাকা জমা বা উত্তোলন করতে পারছি না বিচারক না থাকায়।</p> <p>পেকুয়ার মেহেরনামার বাসিন্দা ভুক্তভোগী আহমদ হোসেন বলেন, ২০১২ সালে জমি সংক্রান্ত একটি মামলা দায়েরের পর অনেকটা শেষপর্যায়ে চলে আসে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বিচারক না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছি। দুশ্চিন্তায় পড়েছি কখন বিচারক আসবে এবং মামলা নিষ্পত্তি করতে পারবো।</p> <p>চকরিয়া আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, বিচারকের পদ শূন্য থাকায় মামলার বাদী-বিবাদীরা বেশ হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তাই অতিদ্রুত এই আদালতে একজন সহকারী জজ পদায়ন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এছাড়াও চকরিয়ায় একটি নারী আদালত এবং যুগ্ম জেলা জজ আদালত স্থাপনের দাবি করছি। যাতে চকরিয়া ও পেকুয়ার সাত লাখ মানুষ উপকৃত হয়।</p> <p>এ ব্যাপারে চকরিয়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও আদালতের সহকারি পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট এ এইচ এম শহীদুল্লাহ চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা একাধিকবার জেলা জজ সাহেবের সাথে দেখা করে শূন্য পদে বিচারক পদায়নের জন্য অনুরোধ করেছি। লিখিতভাবে একাধিকবার আবেদনও করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিচারক পদায়ন না হওয়ায় দেওয়ানী মামলার বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি বেড়েই চলেছে।</p>