<p>কুমিল্লার চান্দিনায় কাভার্ডভ্যান বোঝাই করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে শতাধিক সিলিন্ডার রেখে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ভ্রাম্যমাণ কম্প্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস (সিএনজি) পাম্প। </p> <p>উপজেলার দোল্লাই নবাবপুর বাজার এলাকায় অবৈধ ওই পাম্পে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও গাড়িতে গ্যাস সরবরাহ করে মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। একটি খালি জায়গার ওপরে ত্রিপল টানিয়ে মেশিন স্থাপন করে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রতি ঘনমিটার গ্যাস বিক্রিতে সরকারি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাড়তি সাড়ে ৫ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে এই উপায়ে। তাছাড়া এ পদ্ধতিতে গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণসহ বড় ধরনের দুর্ঘটনার প্রবল শঙ্কা বিরাজ করছে। </p> <p>মাধাইয়া-নবাবপুর সড়কের পাশেই নবাবপুর বাজারের দক্ষিণ বাজার সংলগ্ন এই অবৈধ ভ্রাম্যমাণ গ্যাস পাম্পটি দীর্ঘদিন চলতে থাকলেও যেন দেখার কেউ নেই! </p> <p>সরেজিমনে ওই ভ্রাম্যমাণ গ্যাস পাম্পে গিয়ে দেখা যায়, ২টি কাভার্ডভ্যানে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিটি কাভার্ডভ্যানে অন্তত ১শ গ্যাস সিলিন্ডার রয়েছে। ওই কাভার্ডভ্যানের গ্যাস সিলিন্ডারের সাথে সিরিজ সংযোগ দিয়ে কন্ট্রোল মেশিনের মাধ্যমে সারি-সারি সিএনজি অটোরিকশায় গ্যাস সরবরাহ করছেন এক যুবক। প্রতি ঘনমিটার গ্যাস ৫০ টাকা মূল্যে দেওয়া হচ্ছে। পাম্পটি কার এমন প্রশ্নে ওই যুবক বলেন, আমরা ৩ জন এখানে কাজ করি। পাম্পের মালিক গিয়াস উদ্দিন। কোন গিয়াস উদ্দিন জানতে চাইলে তিনি বলেন, চেয়ারম্যানের ছেলে গিয়াস উদ্দিন। </p> <p>পরে খোঁজ নিয়ে জানাযায়, দোল্লাই নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিনের ছেলে এবং উপজেলা যুবলীগ সদস্যসচিব গিয়াস উদ্দিন অবৈধ ওই ভ্রাম্যমাণ ওই গ্যাস পাম্পটি পরিচালনা করছেন। <br /> <br /> এদিকে কাভার্ডভ্যান ভর্তি ওই গ্যাস কোন জায়গা থেকে আসে এমন তথ্যের খোঁজ নিলে বেরিয়ে আসে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। মহাসড়ক সংলগ্ন কয়েকটি গ্যাস পাম্পের সাথে চুক্তি করে ওই গ্যাস আনা হয়। এমন ঘটনা শুধু নবাবপুরেই নয়, কুমিল্লার আরো বেশ কয়েকটি স্থানেও ঘটে চলেছে। </p> <p>নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ব্যক্তি জানান, যে পাম্প থেকে কাভার্ডভ্যানে করে গ্যাস আনা হয় ওইসব পাম্পগুলোতে মিটার ও রেগুলেটর মেশিনের বাইরের লাইন টেম্পারিং করে বিশেষ কৌশলে কাভার্ডভ্যানে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। যা মূল মিটারের হিসাবে আসে না এবং তা থেকে সরকার সম্পূর্ণ রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এতে সিএনজি পাম্পের অসাধু মালিক ও সংশ্লিষ্টরা রাতারাতি কোটি-কোটি টাকা অবৈধভাবে লুটে নিচ্ছেন। আর ওইসব কাভার্ডভ্যানগুলোর গ্যাস অনেকটা কম দামে কিনে এনে সরকারের নির্ধারিত দামের চেয়ে অধিক মূল্যে বিক্রি করে ‘আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ’ বনে যাচ্ছেন অসাধু কারবারিরা। </p> <p>পাম্পের মালিকের বিষয়ে জানতে চেয়ে গিয়াস উদ্দিন এর ব্যবহৃত মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, পাম্পটি আমার। এ বিষয়ে আমি আপনার সাথে পরে কথা বলবো। </p> <p>এ ব্যাপারে চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বিভীষণ কান্তি দাশ জানান, বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি শুনেছি। শিগগিরই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। </p>