<p>চট্টগ্রামের পটিয়ায় ভূমি অফিসের মিউটেশন কাম সহকারীকে ঘুষ না দেওয়ায় এক অসহায় পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর থেকে উচ্ছেদ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শহীদুল ইসলাম চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। </p> <p>অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পটিয়া পৌরসভার কাগজীপাড়া এলাকার মনির আহমদের পুত্র শহীদুল ইসলামকে অসহায় ভূমিহীন হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর একটি ঘর উপহার দেওয়া হয় ২০২১ সালে। উপজেলার হাইদগাঁও গুচ্ছগ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৪৯ নম্বর ঘরটি তাঁর নামে রেজিস্ট্রেশন হয়। তিনি স্ত্রী, সন্তান ও মাকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উক্ত ঘরে বসবাস করে আসছিলেন। </p> <p>সম্প্রতি তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর অসুস্থতার কারণে স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যান। এ অবস্থায় ভূমি অফিসের সহকারী হামিদুর রহমান আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে অবস্থান তল্লাশিতে গেলে শহীদের পরিবারকে না পেয়ে তাকে ফোন দেন। তিনি ঘর টিকিয়ে রাখতে হলে শহীদকে ৫০ হাজার টাকা দিতে বলেন। অন্যথায় ঘরটি আরেকজনের হাতে চলে যাবে বলে জানান। পরবর্তী সময়ে তিনি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে এসে দেখতে পান সে ঘরে অন্য একটি পরিবার বসবাস করছে। </p> <p>এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ভূমি অফিসের সহকারী হামিদুর রহমান বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো তল্লাশি করে মোট ৫২টি ঘরে কোনো পরিবার না থাকার প্রমাণ মেলে। আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষ বরাবর বিষয়টি অবহিত করেছি। শহীদুলের ঘরেও কাউকে না পেয়ে তাকে ফোন দিই, কিন্তু তিনি ফোন কেটে দেন। পরবর্তী সময়ে ওই ঘরে কারা বসবাস করছে তা আমার জানা নেই। তবে আমি কারো কাছে কোনো প্রকার টাকা কিংবা ঘুষ দাবি করিনি।</p> <p>ভুক্তভোগী শহীদুল ইসলাম বলেন, এত দিন ওরা আমার দেওয়া দরখাস্তগুলো ফেলে রেখেছিল। আমি যখন জেলা প্রশাসককে লিখিত অভিযোগ করেছি তারপর বুধবার দুপুরে ভূমি অফিসের অফিস সহকারী হামিদ তার এক সহযোগীকে দিয়ে আমাকে ফোনে জানান, ইউএনও আমার দরখাস্ত শুনানি করবেন আগামী ৩ এপ্রিল। অথচ আমি গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ইউএনওকে দরখাস্ত দিলে উনি তা নট প্রেস করে এসি ল্যান্ডকে রেফার করেন। </p> <p>শহীদ আরো বলেন, কয়েক দিন আগে হামিদ তার বড় ভাই বাংলাদেশ সরকারের উপসচিব কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রাক্তন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নুরুজ্জামান চৌধুরীর নাম বিক্রি করে ভয়ভীতি প্রদান করেন আমাকে। </p> <p>পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আতিকুল মামুন কালের কণ্ঠকে বলেন, এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। এরপর শুনানির জন্য তাদেরকে ডাকা হবে। অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।</p> <p>উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, পটিয়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো পাওয়ার পর যারা দীর্ঘদিন ধরে ঘরে থাকছেন না বা ভাড়া দিয়েছেন, তাদের ঘরগুলো চিহ্নিত করে মোট ৫২টি পরিবারের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। তার মধ্যে ১১টি ঘরের মালিকরা তাদের দোষ স্বীকার করে কথা দিয়েছেন, তারা এখন থেকে ঘরে থাকবেন। আর বাকি ৪১টি ঘরের মালিকদের আগামী ৩ ও ৪ এপ্রিল এসি ল্যান্ড অফিস ও ইউএনও অফিসে শিডিউল করে শুনানির জন্য ডাকা হয়েছে। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে উপজেলা প্রশাসন।</p>