<p style="text-align: justify;">আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে টাঙ্গাইলের মধুপুর ও ধনবাড়ী উপজেলায় স্থানীয় এমপি সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের একাংশের সম্প্রতি বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে দুই উপজেলার এ সভায় অনুপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সভায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করায় দুই উপজেলার তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে চরম ক্ষোভ ও সমালোচনা। ভোটের আগেই বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এ বিভক্তির জেরে নির্বাচনকালীন সময়ে মারামারির শংকাও করছেন অনেকে।</p> <p style="text-align: justify;">জানা যায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতিক না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। ফলে দলের যে কারোর নির্বাচন করতে বিধি নিষেধ নেই। এ সুযোগে অনেক ত্যাগী ও পরীক্ষীত নেতাই নির্বাচন করার জন্য ইতোমধ্যে গনসংযোগ শুরু করেছেন। স্থানীয় নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীদের জন্য রয়েছে নির্দেশনা। </p> <p style="text-align: justify;">১ টি পৌরসভা ও ১১ টি ইউনিয়ন নিয়ে মধুপুর উপজেলা গঠিত। উপজেলা নির্বাচনে সাম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন- বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছরোয়ার আলম খান আবু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও শোলাকুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইয়াকুব আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ড. ফরহাদুল আলম মণি। </p> <p style="text-align: justify;">১ টি পৌরসভা এবং ৭ টি ইউনিয়ন নিয়ে ধনবাড়ী উপজেলা গঠিত। এবার উপজেলায় সাম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন- বর্তমান চেয়ারম্যান ও এমপির খালাতো ভাই হারুনার রশিদ হীরা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মীর ফারুক আহমেদ ফরিদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার দুইবারের মেয়র এবং দুইবারের ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম তপন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী কিসলু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াদুদ তালুকদার সবুজ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান রনি ও সাবেক ছাত্রনেতা আজিুজল ইসলাম। </p> <p style="text-align: justify;">ধনবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম তপন কালের কণ্ঠকে বলেন, আমাদের এমপি ড. আব্দুর রাজ্জাক ভাই গত ৩ মার্চ রবিবার বিশেষ সভা করে তার খালাতো ভাই হারুনার রশিদ হীরাকে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। সেইসঙ্গে হিরার পক্ষে ভোট চেয়ে তাকে সবার হাতে তুলে দেন। এ সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আমি উপস্থিত ছিলাম না। দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত এবার উপজেলা নির্বাচন হবে উন্মুক্ত। তিনি বর্ষীয়ান কেন্দ্রীয় নেতা হয়ে কিভাবে একজন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলেন সেটা বোধগম্য নয়? উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর ফারুক আহমেদ ফরিদ বলেন এ ঘোষণা দল ও নেত্রীর সিদ্ধান্ত অমান্য করা। এমপির এ কাজে আমাদের নেতাকর্মীর অত্যন্ত ক্ষুদ্ধ।</p> <p style="text-align: justify;">মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছরোয়ার আলম খান আবু বলেন, আমাদের আসনে হ-য-ব-র-ল অবস্থা চলছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বাদ দিয়ে এমপি মহোদয় গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিশেষ বর্ধিত সভা ডেকে পছন্দের ইয়াকুব আলীকে চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। যা অনিয়মতান্ত্রিক ও স্বেচ্ছাচারিতার বহি:প্রকাশ। দল যেখানে প্রতিক ও সমর্থন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেখানে তিনি এটা করতে পারেন না।</p> <p style="text-align: justify;">জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ড. ফরহাদুল আলম মণি বলেন, আমাদের এমপি সাহেব এতগুলো প্রার্থীর মধ্যে কিভাবে ইয়াকুব আলীকে সাপোর্ট করলেন? সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গফুর মন্টু এর প্রতিবাদ করে সভা থেকে বের হয়ে আসেন। এমপি মহোদয় নিরপেক্ষতা ভঙ্গ করছেন। </p> <p style="text-align: justify;">জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলমসহ পদধারী একাধিক নেতা কালের কণ্ঠকে বলেন, উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতিক দেওয়া হবে না। কিন্তু কাউকে সরাসরি সমর্থন দেওয়া যাবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত আমরা পাই নাই। </p> <p style="text-align: justify;">আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট তারানা হালিম এমপি কালের কণ্ঠকে বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থী থাকতেই পারে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি যতটুকু জানি মির্টিং করে সরাসরি কাউকে সমর্থন কিংবা সমর্থন না করার সুযোগ নেই। </p> <p style="text-align: justify;">এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য স্থানীয় এমপি ড. আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নি।</p> <p style="text-align: justify;">উল্লেখ্য, সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক টাঙ্গাইল-১ মধুপুর-ধনবাড়ী আসন থেকে টানা ৫ বার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এবারের নিবার্চনের আগে মধুপুরে এমপির অনুসারী এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছরোয়ার আলম খান আবুর অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ, হামলা- মামলার ঘটনা ঘটে। নির্বাচনের পর ধনবাড়ীতে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মেহেদী হাসান রনির বাড়িতে হামলা ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।</p>