<p>কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষের সময় একটি ভবনের ছাদসহ বিভিন্ন তলা থেকে বেশ কয়েকজনকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের মুরাদনগরে এই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।  </p> <p>ছাদ থেকে ফেলা সবাই স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল এক হয়ে তাঁদের ওই ভবন থেকে নিচে ফেলে দেয় বলে আহতদের পারিবারিক সূত্রের অভিযোগ। </p> <p>এ ঘটনার একটি ভিডিও চিত্র কালের কণ্ঠ’র হাতে এসেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, একটি বহুতল ভবনের বিভিন্ন তলার সানশেডের কার্নিশে অনেক তরুণ ঝুলছেন। তাঁরা ‘আল্লাহ’ ‘আল্লাহ’ বলছিলেন। এ সময় একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘কেরে ওডা, হে ভাই মারিসনে, মরে যাব তো বেডা।’ ওই ভিডিওতে আরো দেখা যায়, ছাদ থেকে পর পর তিনজনকে নিচে ফেলা হয়েছে। নিচে পড়ে তাঁরা নিথর হয়ে যান।</p> <p>খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরের মুরাদপুর এলাকায় কোটাবিরোধীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এক পর্যায়ে কোটাবিরোধীদের হামলা থেকে রক্ষা পেতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের শতাধিক নেতাকর্মী ওই এলাকার পাশের একটি ছয়তলা ভবনে আশ্রয় নেন। পরে ওই ভবনে গিয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালান। এ সময় ১২ থেকে ১৫ জন কর্মীকে ছাদ থেকে নিচে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ করেছে ছাত্রলীগ। </p> <p>গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁরা সেখানে পড়ে ছিলেন। চিকিত্সার জন্য তাঁদের উদ্ধারে কাউকে যেতে দেওয়া হয়নি। প্রায় এক ঘণ্টা পর নগরের পাঁচলাইশ থানার পুলিশ গিয়ে সেখান থেকে ১৫ জনকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করায়।</p> <p>ঘটনার কথা তুলে ধরে ওই সময় মুরাদপুর এলাকায় থাকা চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদুল করিম গত রাত সাড়ে ৯টার দিকে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজের শতাধিক নেতাকর্মী মুরাদপুরের ওই ভবনে আশ্রয় নিয়েছিল। কিছুক্ষণ পর সেখানে ঢুকে শিবির ও ছাত্রদলের ক্যাডাররা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর নারকীয় হামলা চালিয়েছে। ১৪-১৫ জনকে ভবন থেকে ফেলে দেয়। অনেকে কার্নিশে লুকিয়ে থেকেও রক্ষা পায়নি। তাদের কারো হাত, কারো পা, কারো কোমর ভেঙে গেছে।’ </p> <p>পাঁচলাইশ থানার ওসি সন্তোষ কুমার চাকমা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ওই এলাকা থেকে আমরা ১৫ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করি। এর মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।’ </p> <p>এর আগে গতকাল বিকেল থেকে নগরের মুরাদপুর, ষোলশহর দুই নম্বর গেটসহ আরো কয়েকটি এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষে সেখানে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এসব সংঘর্ষে তিনজনের প্রাণহানি ঘটেছে। আহত হয়েছেন শতাধিক। এর মধ্যে ৭৮ জন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। </p>