<p>বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ টঙ্গীর তামিরুল মিল্লাত মাদরাসার আলিম শ্রেণির ছাত্র মো. জুনাইদ রহমান বাদী হয়ে ডিএমপির উত্তরা পূর্ব থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক দুই ভিসিসহ ৩৯ জনের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেছেন।</p> <p>শনিবার (৩১ আগস্ট) উত্তরা পূর্ব থানায় এই মামলা হয়।</p> <p>আসামীরা হলেন- মাহবুবুল আলম হানিফ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, প্রফেসর হারুনুর রশীদ  সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, আ ক ম মোজাম্মেল হক সাবেক মন্ত্রী, প্রফেসর নাসির উদ্দিন-স্নাতকপূর্ব শিক্ষা বিষয়ক স্কুলের ডীন, প্রফেসর ড. ফকির রফিকুল আলম  চেয়ারম্যান, একাডেমি কমিটি, ন্যাচারাল সায়েন্স, জাতীয়  বিশ্ববিদ্যালয়, মো. হাফিজুর রহমান প্রভাষক শিক্ষা একাডেমিক আর্টস কমিটি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মোহাম্মদ বিন কাশেম-ভিন, ট্রেনিং এন্ড রিচার্স সেন্টার, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, প্রফেসর ড. মনিরুজ্জামান শাহীন কারিকুলাম উন্নয়ন ও মূল্যায়ন কেন্দ্রের ডীন ও সাবেক কলেজ পরিদর্শকসহ বাকীরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা। এ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরো ৬০-৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে।</p> <p>মামলার এজাহারে বলা হয়, বাদী তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা, টঙ্গী, গাজীপুরের আলীম শ্রেণিতে লেখাপড়া করেন। গত ৬ জুলাই থেকে দেশ জুড়ে বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলন চলছিল। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গত ১৮ জুলাই সকাল ১১টায় বাদীসহ তার সহপাঠীরা ও বিভিন্ন স্কুল, কলেজের ছাত্র ও সাধারণ জনগণ একত্রে উত্তরা পূর্ব থানাধীন ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের পূর্ব পাশে বিএনএস সেন্টারের বিপরীত পাশে পাকা রাস্তার ওপর অবস্থান নেয়। অদূরে অবস্থানরত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং ওপরে বর্ণিত অধিকাংশ আসামিসহ আওয়ামী লীগ এবং তার বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে বানচাল করার লক্ষ্যে ইটপাটকেল ও হত্যার উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছুড়তে থাকে। দুষ্কৃতিকারীদের ছোড়া একটি গুলি বাদীর ডান হাতের কনুইর নিচে এসে লাগে এবং হাতের এক পার্শ্বে ছিদ্র হয়ে হাতের অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে বুকের নিচে লাগে। এরপর ঘটনাস্থল থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বাদীকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। বাদী ২০ দিন হাসপাতালে ভর্তি থেকে বর্তমানে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।</p> <p>এজাহারে আরো বলা হয়, ২৯ জুলাই বেলা আনুমানিক ১১টায় ১নং আসামি মাহবুবুল আলম হানিফ ও ২নং আসামি তৎকালীন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান উক্ত ঘটনা ও সারা দেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডসমূহকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য গণভবনে প্রেস কনফারেন্স করেন। উক্ত কনফারেন্স করার পর গত ৩ আগস্ট ২নং আসামি অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গাজীপুরে ডীন ও বিভাগীয় প্রধানদের দায়িত্বে থাকা পরিচালকগণ সহবর্ণিত অন্যান্য আসামিদের সঙ্গে নিয়ে ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গণহত্যাকে সমর্থন করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে তথাকথিত প্রতিবাদ ও শান্তি সমাবেশ করে।</p> <p>মামলা আরো বলা হয়, ১৬ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালে অন ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীরা শহীদ আবু সাইদ ও শহীদ মুগ্ধর গ্রাফিতি অংকন করতে শুরু করলে বর্ণিত আসামীরা এসে শিক্ষার্থীদের কাজে বাধা দেয় এবং হুমকি প্রদান করে।</p>