<p>বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানায় হামলা চালিয়ে সব গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার পর একটি পুরাতন গাড়ি দিয়ে টহল দিচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা। এ অবস্থায় উত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার সিরাজগঞ্জ অংশের ৯৬ কিলোমিটার মহাসড়ক বর্তমানে অরক্ষিত রয়েছে। তবে পুলিশের কর্মকর্তাদের দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছেন তারা।</p> <p>৪ আগস্ট থানায় ভাঙচুর, কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের মারধর, থানা ভবন ও পুলিশের যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, অস্ত্র, গুলি এবং সরকারি ও ব্যক্তিগত জিনিসপত্র লুটপাট করে হামলাকারীরা। এ কারণে ১১ দিন থানার কার্যক্রম সমপন্ন বন্ধ থাকার পর ১৫ আগস্ট পাঁচলিয়া এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে এই থানার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।</p> <p>হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি এম এ ওয়াদুদ রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) জানান, আন্দোলনকারীদের হামলার সময় লুট হওয়া ১০টি অস্ত্র ও আড়াই শতাধিক গুলি এখনো উদ্ধার হয়নি। ঘটনার সময় থানায় কর্তব্যরত ৩৮ জন পুলিশ সদস্যর কম-বেশি সবাই আহত হয়েছিলেন। এদের মধ্যে ৩৫ জন কাজে যোগ দিলেও তিনজন এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হামলার সময় পুলিশের ব্যবহৃত তিনটি পিকআপ, একটি প্রাইভেটকার ও পাঁচটি মটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জব্দকৃত বেশকিছু যানবাহন, পুলিশ সদস্যদের ব্যবহারিক সরকারী এবং ব্যক্তিগত সকল জিনিসপত্রে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়েছে। এসব কারণে ১১ দিন থানার কার্যক্রম সম্পন্ন বন্ধ ছিল।</p> <p>ওসি আরো বলেন, মহাসড়কের পাঁচলিয়া এলাকায় একটি ভবনের দুইটি তলা ভাড়া নিয়ে ১৫ আগস্ট থেকে থানার কার্যক্রম চালুর চেষ্টা চলছে। অন্য থানা থেকে একটি পুরাতন পুলিশ পিকআপ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। আহত পুলিশ সদস্যদের মনোবল ফেরাতে কাউন্সিলিং করা হচ্ছে। অস্ত্রাঘারে রক্ষিত থাকা কিছু অস্ত্র দিয়েই চলছে থানার কার্যক্রম।</p> <p>বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড়ে অবস্থিত ৯৬ কিলোমিটার মহাসড়কের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে ওসি ওয়াদুদ বলেন, মাত্র একটি পুরাতন পিকআপ দিয়ে মহাসড়কে রাতে ও দিনে টহল চালু রাখা হয়েছে।</p> <p>এই মহাসড়ক দিয়ে উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী, বগুড়া ও পাবনা এবং দক্ষিনাঞ্চলের খুলনা ও যশোরসহ ২২টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। হাইওয়ে পুলিশের অপ্রতুলতার কারণে ইতোমধ্যে মহাসড়কে অবাধে তিন চাকার যানবাহনসহ অবৈধ যানবাহনগুলো অবাধে চলাচল করছে। এ কারণে মহাসড়কে যেমন দুর্ঘটনার আশঙ্ক বাড়ছে, তেমনি নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা।</p> <p>বগুড়া থেকে ঢাকাগামী দুরপাল্লার বাসের চালক জহুরুল ইসলাম জানান, ‘আগে মহাসড়কে পুলিশী নিরাপত্তা থাকার পরও ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটত। বর্তমানে মহাসড়কে কোনো নিরাপত্তা নেই। এ অবস্থায় আমরা এবং যাত্রীরা উভয়ই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’</p>