<p>বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট টার্মিনাল এলাকায় আট যাত্রীর দুই লাখ টাকা ছিনতাই হয়েছে। গতকাল সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) চেকপোস্ট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। প্রায় প্রতিদিনই যাত্রীদের টাকা ছিনতাই হয় বলে জানা গেছে।</p> <p>এ ঘটনার পর বেনাপোল চেকপোস্টের একটি মার্কেটের গলি থেকে দুজন যাত্রীর ১৩ হাজার টাকা উদ্ধার করে দিয়েছে স্থানীয় বিজিবি, বন্দর ও বাজার কমিটি। ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যাওয়ায় বাকি টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।</p> <p>মঙ্গলবার বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ, চেকপোস্ট বাজার কমিটি ও পরিবহন সমিতি মিলে ছিনতাইকারীদের নামসর্বস্ব সাইন বোর্ডবিহীন অভিযুক্ত আটটি অবৈধ দোকানে তালা ঝুলিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া আরো চারটি দোকান মালিককে সতর্ক বার্তা দিয়েছে তারা।</p> <p>অভিযুক্ত ছিনতাইকারীরা হলেন চৌধুরী সুপারমার্কেটের রবি, সাইদুর সুপারমার্কেটের বাবুল, রেজাউল সুপারমার্কেটের হামিদ, ইউনুস সুপারমার্কেটের বরিশালের শামীম, রবি, সয়েব, ইবাদত, হৃদয়, শিমুল, ইমরান ও মারুফ।</p> <p>যাত্রীরা রাত ৩টার দিকে বাস থেকে নামার পর বন্দরের বাস টার্মিনাল এবং প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে তাদের পাসপোর্ট ফরম ও ভ্রমণ কর কেটে দেওয়ার কথা বলেন কিছু চিহ্নিত ছিনতাইকারী। এরপর বিভিন্ন অলিগলিতে বসিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকার নম্বর এন্ট্রির কথা বলে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তারা। বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের সামনে এসব ঘটনা ঘটলেও মিলছে না কোনো প্রতিকার।</p> <p>নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের আশপাশে গোপনে বসে থাকেন দালাল পরিচয়ে ছিনতাইকারীচক্রের সদস্যরা। পরে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পাসপোর্টযাত্রীদের টার্গেট করেন তারা। বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কথা বলে তারা বিভিন্ন মার্কেটের গলিতে নিয়ে বিভিন্ন কৌশলে টাকা ছিনতাই করেন। এসব ছিনতাইকারীর ভয়ে স্থানীয়রা কেউ প্রতিবাদ করতে পারে না। কারণ তারা দলে অনেক ভারী। আর এসব চক্রকে নানাভাবে সহযোগিতা করেন নামধারী কিছু সাংবাদিক, রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকা লোকজন এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর অসাধু সদস্যরা।</p> <p>ছিনতাইয়ের কবলে পড়া খুলনার সাগর হোসেন নামের এক যাত্রী জানান, তিনি ভারতে যাওয়ার উদ্দেশে প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের সামনে সকালে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেখানে কয়েকজন লোক তাকে বলেন, অনলাইনে ভ্রমণ ট্যাক্স জমা দিলে তারা বন্দরের লম্বা লাইনের আগে ইমিগ্রেশনে পৌঁছে দেবেন। পরে তাকে পাশের একটি মার্কেটের গলিতে কম্পিউটারের দোকানে বসান। সেখানে তার কাছ থেকে ২৩ হাজার টাকা নেন তারা। পরে বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিলে বন্দর ও বিজিবি সদস্যদের সহযোগিতায় ৭ হাজার টাকা ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের পাশেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা ঘোরাফেরা করলেও তারা কিছুই দেখেন না।</p> <p>এ ব্যাপারে বেনাপোল বন্দরে নিয়োজিত আমর্ড ব্যাটালিয়নের ওসি বাদল চন্দ্র জানান, পাসপোর্টযাত্রীদের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা দুঃখজনক। এ রকম ঘটনা মাঝেমধ্যে ঘটে। পরে ছিনতাই হওয়া টাকা উদ্ধার করে দেওয়া হয়। বন্দর এলাকায় ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে আরো কড়াকড়ি আরোপ করা হবে।</p> <p>বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন ভক্ত জানান, প্রতিদিন নানা কৌশলে পাসপোর্টধারীদের জিম্মি করে ছিনতাই করে প্রতারকচক্র। এ ধরনের প্রতারকদের আটটি অবৈধ প্রতিষ্ঠানে তালা মারা হয়েছে। এ ছাড়া অন্যদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।</p>