<p style="text-align:justify">ঢাকার ধামরাইয়ে গোলাকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক দেলুয়ার হোসেন একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। এলাকায় সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে চাঁদায় আদায়, জমি দখল, টাকা আত্মসাৎ, মামলা দিয়ে হয়রানিসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ডজনখানেক মামলা রয়েছে থানা ও আদালতে। </p> <p style="text-align:justify">এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল আজিজ ১৫ আগস্ট তাকে (শিক্ষক দেলুয়ার হোসেন) সাময়িক বরখাস্ত করেন। এর আগে ২০০৪ সালের ১(৮) নম্বর মামলায় দেলোয়ার হোসেন মাস্টার মাসাধিক হাজতবাসও করেছেন। এরপরও থেমে নেই ওই সিন্ডিকেটের অপকর্ম। তাদের কর্মকাণ্ড দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে।</p> <p style="text-align:justify">এলাকাবাসীদের কাছ থেকে জানা গেছে, ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ দীঘল গ্রামের শিক্ষক দেলুয়ার হোসেন, বাঙ্গালপাড়ার গোলাম নবী, সাইদপাড়ার খোরশেদ, নায়েব আলীসহ কয়েকজন মিলে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। তারা এলাকার মানুষজনকে জিম্মি করে জমি দখল, চাঁদা দাবিসহ বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার নির্যাতন করে আসছে। </p> <p style="text-align:justify">প্রতিবাদ করলেই সাধারণ মানুষের নামে থানায় মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। তাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা ও জিডি হলেও বিভিন্ন ধরনের অপরাধমুলক কাজ চলছে সমানতালে। তাদের ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটে এলাকাবাসীর। এমনকি অন্যের বাড়ির কেয়ারটেকার সেজেও গোলাম নবী এলাকাবাসীর কয়েকজনের নামে হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে জেলও খাটিয়েছেন বলে ভুক্তভোগীরা জানান। </p> <p style="text-align:justify">উত্তর দীঘল গ্রামের নুরুল ইসলাম, আবুল হোসেন, আব্দুর রশিদ, আনোয়ার হোসেন, শাহাদাত হোসেন, আব্দুল খালেক, হাবেজ উদ্দিন, বদর উদ্দিন, আবু বক্কর সিদ্দিক, আব্দুর রাজ্জাক, সানোয়ার হোসেন, মোকছেদ আলী, মোড়ারচর গ্রামের মজিদ, বৈষ্টবদিয়া গ্রামের মো.হাসান, কেরামত আলীসহ বিভিন্ন গ্রামের প্রায় অর্ধশত ভুক্তভোগী রয়েছে। </p> <p style="text-align:justify">যারা দেলুয়ার হোসেন ও গোলাম নবীর দ্বারা মামলা, জমি দখল ও চাঁদাবাজের শিকার হয়েছেন। দেলুয়ার হোসেনের নেতৃত্বে সিন্ডিকেটের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যক্তির জমির মালিকানা দাবি করে সাইনবোর্ড টানিয়ে বিবাদের সৃষ্টি করে। এরপর বিচার সালিশের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়।</p> <p style="text-align:justify">উত্তর দীঘল গ্রামের নুরুল ইসলাম বলেন, দেলুয়ার হোসেন ও গোলাম নবীর বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলা করা হয়েছে। তারা ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকাও নিয়েছে। এর প্রতিবাদ করতে গেলেই তারা বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে। </p> <p style="text-align:justify">উত্তর দীঘল গ্রামের হাফিজ উদ্দিন বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধে মিমাংসার কথা বলে তার কাছ থেকে এক লাখ টাকা চাঁদাদাবি করে দেলুয়ার মাষ্টা। পরে তাকে ১০হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। উল্টো আমার নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছিল। অনেক কাঠখর পুড়িয়ে টিকে আছি। </p> <p style="text-align:justify">দীঘল গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, ঋণ পরিশোধ করার শর্তে তার কাছ থেকে গোলাম নবী জমি লিখে নিয়েছেন কিন্তু কোন ঋণ পরিশোধ করেনি। </p> <p style="text-align:justify">মো. হাসান জানান, তার প্রতিবেশী মাসুদুর রহমানের কেয়ারটেকার সেজে জমি সংক্রান্ত বিরোধে মিথা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে গোলাম নবী গং। </p> <p style="text-align:justify">বাঙ্গালপাড়ার প্রবাসী জয়নাল আবেদিন বলেন,তার জমিতে জোরপূর্বক ছাপড়া ঘর উত্তোলন করে গোলাম নবী। এরপর তা সরিয়ে নিতে তার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তিনি। দখলের পর মিমাংসার নামে নীরিহ মানুষের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়াই তাদের কাজ।  </p> <p style="text-align:justify">উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শিক্ষক দেলুয়ার হোসেনের কর্মকান্ডে আমরাও বিব্রত। সম্মানজনক পেশায় থেকে তাঁর কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত ঘটনা মোটেও প্রত্যাশা করিনা।</p> <p style="text-align:justify">অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষক দেলুয়ার হোসেন বলেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন। প্রতিপক্ষ অকারণে অসত্য তথ্য প্রকাশ করছে। <br /> গোলাম নবী বলেন, আমি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমাকেই মানুষ উল্টো মামলায় ফাসিয়ে দেয়। তবে আমি কোনো ঘটনার সাথে জড়িত নই। </p> <p style="text-align:justify">ধামরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মোমেনুল ইসলাম বলেন, দেলুয়ার হোসেন ও গোলাম নবীর বিরুদ্ধে ধামরাই থানায় চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা ও জিডি রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছিল।</p>