<p>আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার আমিরাবাড়ী ইউনিয়নের গোপালপুরে বাবে বরকত দেওয়ানবাগ শরীফে হামলা করেছে বিক্ষব্ধ জনতা। এ সময় প্রতিরোধের মুখে পড়ে দুপক্ষের আহত হয়েছে অন্তত অর্ধশতাধিক।<br />  <br /> রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের লোকজন একত্র হয়ে প্রথমে দেওয়ানবাগীর মাজারে ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। এ সময় তারা দেওয়ানবাগ শরীফের প্রধান ফটক ও সীমানা প্রাচীর ভেঙে ভিতরে ডুকার চেষ্টা চালালে ভিতরে থাকা কয়েকশত ভক্ত অনুরাগী ভিতরে থেকেই মরিচের গুঁড়ো স্প্রে, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, গুলাই দিয়ে মার্বেল নিক্ষেপ ও গরম পানি ছোড়ে। বাহির থেকে এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা ভিতরে থাকা লোকজনের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে দুপক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হয়। </p> <p>এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা উত্তেজিত হয়ে মূল ফটকের বাইরে থাকা তাদের কন্ট্রোল রুমে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হতে থাকলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে লাঠিচার্জ করে বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বর্তমানে পরিস্থিতি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।<br />  <br /> জানা যায়, দেওয়ানবাগ শরীফে বিতর্কিত ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড হতো বলে ঘোষণা দিয়ে মাজার ভাঙে দেওয়ার জন্য মিছিল নিয়ে যান তারা। ঘটনাস্থলে ছিলেন ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জেলা পর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উর্ধতন কর্মকর্তা ও স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এ সময় এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তারা। </p> <p>স্থানীয় রাকিবুল হাসান রাকিব বলেন, ইসলামবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করায় এলাকাবাসী ভন্ড পীর দেওয়ানবাগীর ওপর অনেক আগে থেকেই ক্ষিপ্ত ছিল। আজকে সকালে এলাকার জনগণ একত্র হয়ে এই দরবার উৎখাত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।</p> <p>দেওয়ানবাগ শরীফের মিডিয়া সেলের কো-অর্ডিনেটর ড. সৈয়দ মেহেদী হাসান আজকের হামলায় তাদের ১২০ জন আহত হয়েছে জানিয়ে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দরবার পরিচালনা করে আসছি। আমাদের দেওয়ানবাগী হুজুরের মূল শিক্ষায় হলো মানবতার শিক্ষা। আমরা কাউকে আঘাত করিনি। এভাবে চলতে থাকলে তো টিকা যাবে না। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে আমরা আগে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবাদ জানাবো, তারপর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’<br />  <br /> ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, ‘দেওয়ানবাগ শরীফে হামলা হতে পারে এমন সংবাদের ভিত্তিতে সকাল থেকেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়ন করা হয়। স্থানীয় এলাকাবাসী হামলা চালাতে চাইলে আমরা তাদেরকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিযন্ত্রণে আনার চেষ্টা করি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’</p> <p>ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুয়েল আহমেদ বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়ন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।</p>