<p>পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে বাড়ি ছেড়েছিলেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার দক্ষিণ চরটেকী গ্রামের মো. মুর্শিদ মিয়া। এরপর কেটে যায় ৩২ বছর। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে তাঁর খোঁজ পান স্বজনরা। পরে প্রশাসনের সহায়তায় বাড়ি ফেরেন তিনি।</p> <p>মুর্শিদ মিয়া (৭০) একই গ্রামের মৃত শাহিদ ব্যাপারির ছেলে। গত রবিবার দুপুরে পাকুন্দিয়া থানার পুলিশের সহযোগিতায় নরসিংদীর বেলাব উপজেলা থেকে তাঁকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যান স্বজনরা। পরে পাকুন্দিয়া থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান টিটুর এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি জানাজানি হয়। </p> <p>পাকুন্দিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মোবারক হোসেন বলেন, ‘আমার বাড়ি নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার ধুকুন্দি গ্রামে। আমাদের গ্রামের সাহাজ উদ্দিন মাস্টারের বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকের কাজ করতেন মুর্শিদ মিয়া। কয়েক মাস ধরে কিছুটা বয়োবৃদ্ধ ও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তাঁর মধ্যে নিজের বাড়িতে ফেরার ইচ্ছা জাগে। তাঁর গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় জানালে আমি খোঁজখবর নিতে থাকি। কয়েক দিন আগে ধুকুন্দি গ্রামের এক ব্যক্তি মুর্শিদ মিয়াকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেন। ওই পোস্টের মাধ্যমে মুর্শিদ মিয়াকে চিনতে পারেন স্বজনরা। পরে রবিবার মুর্শিদের ভাতিজাসহ বেশ কয়েকজন তাঁকে পাকুন্দিয়ায় নিজেদের বাড়িতে নিয়ে আসেন।’ </p> <p>তিনি জানান, বেলাবতে মুর্শিদ মিয়া শ্রমিকের কাজ করতেন। তা থেকে জমানো চার লাখ ৫০ হাজার টাকা কয়েক দিন আগে পাশের গ্রামের একটি মসজিদে দান করে মহানুভবতার পরিচয় দেন তিনি।</p> <p>স্বজন ও স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ৩২ বছর আগে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে বাড়ি ছাড়েন মুর্শিদ মিয়া। বাড়ির লোকজন বহু খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর কোনো খোঁজ পায়নি। এক পর্যায়ে বাড়ির লোকজন তাঁকে পাওয়ার আশা ছেড়ে দেয়। ছেড়ে যান স্ত্রীও। </p> <p>মুর্শিদ মিয়ার ভাতিজা আবদুল হাকিম বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর চাচাকে ফিরে পেয়ে আমরা আনন্দিত। চাচার বউ-সন্তান কেউ নেই। রয়েছে অনেক জমাজমি, যা আমার বড় চাচা ভোগ করছেন। মুর্শিদ চাচা যাতে জীবনের শেষ সময়টা ভালো করে কাটাতে পারেন আমরা সেই চেষ্টা করছি।’ </p> <p>এ বিষয়ে মুর্শিদ মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি সঠিক কোনো জবাব দিতে পারেননি। তবে তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানান, তিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন। </p>