<p>সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হয়। এর পর থেকেই মাঠপর্যায়ে আগের মতো সক্রিয় হতে পারেনি পুলিশ। এ সুযোগে ঝিনাইদহে অবাধে চলছে মাদকের কারবার। শুধু জেলা সদরেই নয় প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলেও মাদক কারবারিরা বেপেরোয়া হয়ে উঠেছে। জেলার সচেতন নাগরিক সমাজ মাদকের ভয়াল থাবা থেকে নতুন প্রজন্মকে বাঁচাতে স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।</p> <p>জানা গেছে, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার সরকার পতনের পর থেকে জেলা শহরে নতুন করে অন্তত ২৫টি স্পটে অবাধে চলছে মাদক কেনাবেচা। এসব স্পটে মাদক কেনাবেচার সঙ্গে জড়িতদের অধিকাংশের বয়স ১৬ থেকে ২৫-এর মধ্যে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও এ তালিকায় রয়েছেন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। তবে সীমান্তবর্তী এ জেলায় প্রকাশ্যে মাদক কেনাবেচা নতুন কিছু নয়। মাঝে মাঝে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান পরিচালনা করে। এসব অভিযানে ছোট ছোট কারবারিদের আটক করা হলেও মাদকের বড় বড় রাঘব-বোয়ালরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। চলমান পরিস্থিতিতে মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় না থাকায় দেদারছে মাদক কেনাবেচা করে যাচ্ছে কারবারিরা।</p> <p>স্থানীয় গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলা শহরের চাকলাপাড়া, ব্যাপারিপাড়া, ওয়াপদা, ট্রাক টার্মিনাল ও বাস টার্মিনাল, হামদহ শেখপাড়, মোল্লাপাড়া, দাসাপাড়া ও ঘোষপাড়া, ধোপাঘাটা পুরাতন ব্রিজ, আরাপপুর, পাগলাকানাই, ভূটিয়ারগাতি, ষাটবাড়িয়া, পবহাটি, আদর্শপাড়া ও কালিকাপুর এলাকায় প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে সকল প্রকার মাদক। <br /> এ ছাড়াও জেলার শৈলকুপা, হরিণাকুণ্ডু, কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলার বিভিন্ন স্পটে বিক্রি হচ্ছে দেশি-বিদেশি মদ, গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ  নানা প্রকারের মাদক।</p> <p>কাঞ্চননগর স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার জানান, ‘শহরজুড়ে হঠাৎ করেই মাদকসেবীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে শহরের বেশ কয়েক জায়গায় চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। মাদকের প্রসারের কারণে এগুলো বেশি সংঘটিত হচ্ছে। তাই প্রশাসনকে এ বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত।’</p> <p>জেলা সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত হোসেন জানান, ‘তরুণ সমাজের অবক্ষয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এর প্রধান কারণ মাদক। মাদকের বিরুদ্ধে এর আগের সরকারকেও জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করতে দেখেছি। বাস্তবে সেই নীতি কাউকে অবলম্বন করতে দেখি নাই। তাই নতুন সরকারে কাছে দাবি জানাচ্ছি মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করার।’  </p> <p>এ বিষয়ে ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে আমরা আগেও সোচ্চার ছিলাম। চলমান পরিস্থিতিতে আমাদের পুলিশ সদস্যরা কিছুটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিল। আশা করছি খুব দ্রুতই আমরা মাদকের বিরুদ্ধে পুরো উদ্যোমে কাজ শুরু করব।’</p>