<p>নেত্রকোনার মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স। তাও জ্বালানি তেলের সংকটে এক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে করে মুমূর্ষ রোগী ও স্বজনরা পড়েছে চরম ভোগান্তিতে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কোনো রকম ব্যবস্থা না নেওয়ায় অতিরিক্ত টাকা দিয়ে বাইরে থেকে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে দূরবর্তী হাসপাতালে যাতায়াত করছেন রোগীরা।</p> <p>মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সটির জ্বালানি হিসাবে অকটেন ব্যবহার করা হয়। মদনের সরকারি অ্যাম্বুলেন্সটির জ্বালানি তেল সরবরাহ করে থাকেন নেত্রকোনা জেলা শহরের মোনাকো ইন্টারন্যশনাল লিমিটেড (তেল পাম্প) নামীয় প্রতিষ্ঠান।</p> <p>গত এক বছরে জ্বালানি তেল বাবদ মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের কাছে ১৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকা বকেয়া হয়েছে পান মোনাকো ইন্টারন্যশনাল লিমিটেড (তেল পাম্প)। টাকা পরিশোধ না করায় গত ২ আগস্ট থেকে জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ওই প্রতিষ্ঠানটি। একটি মাত্র সরকারি অ্যাম্বুলেন্স তেলের অভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রোগীরা পড়েছে চমর ভোগান্তিতে।</p> <p>উন্নত চিকিৎসার জন্য মদন উপজেলার রোগীরা ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ ও নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে থাকেন। সরকারি নিয়মানুযায়ী মদন থেকে নেত্রকোরা আধুনিক সদর হাসপাতালের ৬০০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা রয়েছে। এর সঙ্গে মদন থেকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে ভাড়া নির্ধারণ রয়েছে ১ হাজার ৪৬০ টাকা। কিন্তু সরকারি অ্যাম্বুলেন্স চলাচল বন্ধ থাকায় রোগীদের ভাড়া গুনতে হচ্ছে তিন থেকে চার গুণ বেশি। প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্সে মদন থেকে নেত্রকোনায় ভাড়া নিচ্ছে দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা। মদন থেকে ময়মনসিংহে ভাড়া নিচ্ছেন চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। এতে করে রোগী ও স্বজনরা পড়েছেন বিপাকে। সরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালু না থাকায় বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে চিকিৎসার জন্য যাতায়াত করতে হচ্ছে। </p> <p>এ ছাড়াও পাশের উপজেলা খালিয়াজুরীর রোগী ও আটপাড়া উপজেলার দুটি ইউনিয়েনর রোগীরা মদন হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সটির ওপর নির্ভরশীল। তাই অন্য উপজেলার তুলনায় মদনের জ্বালানি খরচ বেশি হয়ে থাকে।</p> <p>উপজেলা ধুবাওয়ালা গ্রামের বাসিন্দা শামীম মিয়া জানান, ‘আমার মেয়ে অসুস্থ। মদন হাসপাতালে নিয়ে আসার পর ডাক্তার বলেছে ময়মনসিংহ যাওয়ার জন্য। কিন্তু সরকারি অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ। এখন বাহির থেকে অ্যাম্বুলেন্স নিলে ৪ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হবে। যেহেতু চিকিৎসার জন্য যেতেই হবে অতিরিক্ত ভাড়া দিতেই হবে। রোগীদের ভোগান্তি কমাতে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সটি চালু করা দরকার।’</p> <p>মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স আবুল হুসাইন মো. শহিদুল ইসলাম জনান,‘ প্রতিদিনেই রোগীর লোকজন আমাকে ফোন দেয় রোগী নিয়ে নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহ যাওয়ার জন্য। কিন্তু পাম্পে বকেয়া থাকায় জ্বালানি তেল দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তাই এক মাসের বেশি সময় ধরে অ্যাম্বুলেন্স চালানো বন্ধ রয়েছে।’</p> <p>নেত্রকোনার মোনাকো ইন্টারন্যশনাল লিমিটেডের প্রতিনিধি মহিউদ্দিন জানান, ‘মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সের তেল বাবাদ ১৩ লাখ টাকার বেশি বকেয়া রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ফোন দিয়েও পাওয়া যায় না। বকেয়া পরিশোধ না করায় মালিকের নির্দেশে তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।’<br />  <br /> মদন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার নূরুল হুদা খান জানান, ‘১৫ লাখ টাকার বেশি বকেয়া ছিল। চাহিদা পাঠিয়ে যোগাযোগ করায় ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। একাউন্ট অফিসের কর্মবিরতির কারণে এখনো বিল পাস হয়নি। আগামী মঙ্গল অথবা বুধবারের মধ্যেই অ্যাম্বুলেন্স চালু হবে বলে আশা করছি। বাকি টাকার জন্যও অধিদপ্তরের অর্থ বিভাগে যোগাযোগ করা হবে।’<br />  </p>