<p>বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) প্রায় ১২ কোটি টাকার উন্নয়নকাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএনপির কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতার বিরুদ্ধে। কাজগুলোর ঠিকাদার নির্ধারণে ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) প্রক্রিয়ায় দরপত্রের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। তবে সর্বনিম্ন দরদাতা দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দিতে বাধা দিচ্ছেন বিএনপি নেতারা। তারা পুনঃদরপত্রের জন্য বিসিসি কর্তৃপক্ষকে নানামুখী চাপ দিচ্ছেন।</p> <p>বেশ কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, বিএনপি নেতা আতহারুল ইসলাম চৌধুরী বাবুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের মহানগরের সাবেক আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান পিন্টু, মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য বদিউজ্জামান টলন, রফিকুল ইসলাম শাহীনসহ আরো কয়েকজন এর সঙ্গে জড়িত। তারা জোটবদ্ধ হয়ে নগর ভবনে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীরের কক্ষে গিয়ে তিনটি গ্রুপের দরপত্র বাতিল করতে চাপ দেন।</p> <p>অপসারিত মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ দায়িত্বে থাকাকালে নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে সড়ক ও ড্রেন নির্মাণে পৃথক তিনটি প্যাকেজে দরপত্র আহ্বান করেন। প্রায় ১২ কোটি টাকা কাজের পুরোটা বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়িত হবে।  </p> <p>এ কাজগুলোর দরপত্র জমার সর্বশেষ তারিখ ছিল ৮ আগস্ট। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়। প্রতিটি প্যাকেজের বিপরীতে তিনটি করে দরপত্র পড়ে। ওই সময়ে আওয়ামীপন্থী ঠিকাদাররা আত্মগোপনে থাকায় অংশগ্রহণকারী সব ঠিকাদার হলেন বিএনপিপন্থী। </p> <p>যৌথ প্রতিষ্ঠান শরীফ এন্টারপ্রাইজ ও তালুকদার এন্টরপ্রাইজ এবং আরেক প্রতিষ্ঠান এসএইচ এন্টারপ্রাইজ প্রতিটি প্যাকেজে দরপত্র দেন। তিন কোটি ৬৫ লাখ ৯৫ হাজার ৭০১ টাকা এবং চার কোটি ৭৮ লাখ ৭২ হাজার ২৭২ টাকায় দুটি প্যাকেজের সর্বনিম্ন দরদাতা হয় যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। অন্য প্যাকেজে তিন কোটি ৬৯ লাখ ৪৯ হাজার ২১৭ টাকার সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান এসএইচ এন্টারপ্রাইজ। নিয়মানুযায়ী তারাই কার্যাদেশ পাবেন। </p> <p>ঠিকাদার শাহাবুদ্দিন আজাদ বলেন, অজ্ঞাত কারণে তাকে কার্যাদেশ দেওয়া হচ্ছে না। অন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানরেরও একই অবস্থা। আজাদ বলেন, তারা শুনেছেন, কে বা কারা কার্যাদেশ না দেওয়ার জন্য সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে চাপে রেখেছে। কেউ দরপত্রে অংশ নিতে না পারলে সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যর্থতা। ই-জিপির ক্ষেত্রে পুনঃদরপত্রের কোনো সুযোগ নেই। অপর কাজ দুটি কাজের সর্বনিম্ন দরদাতা যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মনির হোসেন তালুকদারও একই অভিযোগ করেন। </p> <p>কার্যাদেশে বাধা দিচ্ছেন কি না, জানতে চাইলে মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য বদিউজ্জামান টলন বলেন, ‘ওই প্যাকেজগুলোর বিষয়ে জানতে নগর ভবনে গিয়ে শুনেছি, ই-জিপি দরপত্র শেষ হয়েছে। এসব বিষয়ে আমাদের তো জানার অধিকার আছে। তাই তিনিসহ বিএনপি নেতা বাবুল চৌধুরী, রফিকুল ইসলাম শাহীন, যুবদলের মাহবুবুর রহমান পিন্টুসহ কয়েকজন গিয়েছিলাম।’</p> <p>অন্যদিকে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা পিন্টু বলেন, পূর্বে অনেক ঠিকাদারি কাজের তাদের বকেয়া বিল রয়েছে। এ জন্য সচিব ও হিসাব শাখায় কয়েকবার গিয়েছিলেন। </p> <p>বিএনপিপন্থী ঠিকাদারের বাধা প্রদান প্রসঙ্গে বিসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।</p>