<p>পাবনার চাটমোহরে এনায়েতুল্লাহ ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আবু ইসহাককে জোরপূর্বক মাদরাসা থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে তার কক্ষে গিয়ে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে চাবি ও ফাইলপত্র কেড়ে নিয়ে অফিসকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর ও বিএনপির কিছু সমর্থক।</p> <p>এ সময় ওই মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক রবিউল করিম বাচ্চুর গলায় ফুলের মালা পরিয়ে তাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে চেয়ারে বসিয়ে উল্লাস করেন তারা। পরে তারা নিজেরা মিষ্টি মুখ করেন। এ সময় মাদরাসার কিছু শিক্ষক সেখানে উপস্থিত থাকলেও ভয়ে কোনো প্রতিবাদ করেননি বলে জানান।</p> <p>এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক মাওলানা আবু ইসহাক।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="পাবনায় আন্দোলনে আ. লীগ নেতাদের গুলি, এখনো অধরা আসামিরা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/16/1726461882-799bad5a3b514f096e69bbc4a7896cd9.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>পাবনায় আন্দোলনে আ. লীগ নেতাদের গুলি, এখনো অধরা আসামিরা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/09/16/1426012" target="_blank"> </a></div> </div> <p>অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মাহাতাব হোসেন, চাটমোহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোকলেছুর রহমান বিদ্যুৎ, স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম সরকারের নেতৃত্বে এলাকার কিছু লোকজন আমার কক্ষে আসেন। তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর, আওয়ামী লীগের লোকজনকে নিয়ে কমিটি করেছি, বালুচরের মানুষকে কমিটিতে রাখি নাই কেন, আমি কোন ক্ষমতাবলে চেয়ারে আছি, এমন বিভিন্ন রকম প্রশ্ন করেন। এক পর্যায়ে তারা যাকে খুশি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বানাবে বলে আমাকে চেয়ার ছেড়ে দিতে বলেন এবং চাবি বুঝিয়ে দিয়ে বের হয়ে যেতে বলেন। আমি তাদের নানাভাবে আমার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ থাকার বৈধতা সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করলেও তারা কোনো কথাই শোনেননি। তখন আমি সম্মান রক্ষার্থে চলে এসেছি। পরে তারা মাদরাসায় তালা ঝুলিয়ে দেন।’</p> <p>স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সাল থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন মাদরাসার সিনিয়র আরবি শিক্ষক মাওলানা আবু ইসহাক। মাদরাসার নিয়োগ কার্যক্রমের জন্য ম্যানেজিং কমিটি মিটিংয়ের মাধ্যমে একই মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক রবিউল করিম বাচ্চুকে নিয়োগকালীন সময়ের জন্য সাময়িক সাচিবিক দায়িত্ব পালন করতে বলেন এবং মাওলানা আবু ইসহাককে মাদরাসার সব প্রশাসনিক কাজ করতে বলেন। পরবর্তীতে সরকারি এক ঘোষণায় নিয়োগের সব কার্যক্রম বাতিল হয়ে যায়। তারপর বিগত ৯ থেকে ১০ মাস মাদরাসার প্রশাসনিকসহ সব কার্যক্রম ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে মাওলানা আবু ইসহাক দায়িত্ব পালন করে আসছেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="পাবনায় প্রতিপক্ষের হামলায় প্রাণ গেল কৃষকের" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/05/1725521995-a4dba9b67cf54c1c9da7b162dfbc1b74.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>পাবনায় প্রতিপক্ষের হামলায় প্রাণ গেল কৃষকের</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/09/05/1422344" target="_blank"> </a></div> </div> <p>সূত্র আরো জানায়, নিয়োগকালীন সময়ের ওই রেজুলেশনের কথা বলে হঠাৎ করেই কিছুদিন ধরে নিজেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দাবি শুরু করেন রবিউল করিম বাচ্চু। একই সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আবু ইসহাকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে অপপ্রচার চালান তিনি। তাতেও কুলিয়ে উঠতে না পেরে অবশেষে দ্বারস্থ হন স্থানীয় কাউন্সিলরসহ কিছু বিএনপি সমর্থক লোকজনের কাছে।</p> <p>এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী অধ্যাপক ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দাবিদার রবিউল করিম বাচ্চু বলেন, ‘নিয়োগকালীন সময়ে ম্যানেজিং কমিটি রেজুলেশন করে আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু মাওলানা ইসহাক সাহেবকে বারবার বলার পরও তিনি আমাকে কখনো দায়িত্ব বুঝিয়ে দেননি। আজ এলাকাবাসী তাকে সরিয়ে আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের চেয়ারে বসিয়ে দিয়েছেন।’</p> <p>ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত ও রেজুলেশন ছাড়া কেউ কি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানকে জোরপূর্বক বের করে দিয়ে আপনাকে চেয়ারে বসিয়ে দিতে পারেন কি না এবং আপনি বসতে পারেন কি না-এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি রবিউল করিম বাচ্চু। চেয়ারে বসার আগে মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইউএনও সাহেব জানতেন না বলেও স্বীকার করেন তিনি।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="অধ্যক্ষকে হাতুড়িপেটা করে পদত্যাগপত্রে সই, প্রভাবশালীদের নামে মামলা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/06/1725641691-e06d061a77a7bde916b8a91163029d41.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>অধ্যক্ষকে হাতুড়িপেটা করে পদত্যাগপত্রে সই, প্রভাবশালীদের নামে মামলা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/09/06/1422813" target="_blank"> </a></div> </div> <p>জানতে চাইলে ঘটনায় নেতৃত্বে থাকা চাটমোহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোকলেছুর রহমান বিদ্যুৎ বলেন, ‘বালুচর সমাজের মানুষের হাতে গড়া মাদরাসাটি। সমাজের লোকজনই এটা করছে। আমিও সমাজের মানুষের মধ্যে পড়ি। মাওলানা ইসহাক সাহেবের বৈধ কাগজপত্র নাই। এ জন্য তাকে চলে যেতে বলা হয়েছে। রেজুলেশনে রবিউল করিমের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব রয়েছে।’</p> <p>সেই রেজুলেশন পড়েছেন কি না, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি পড়ি নাই, আমাকে বলেছে। যার কাগজ আছে তাকেই বসাব।, একজনকে সরিয়ে আরেকজনকে চেয়ারে বসাতে পারেন কি না, জানতে চাইলে বলেন, ‘তা পারি না। সমাজের মানুষ বসিয়েছে।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/08/30/1724973506-e4077b90d8a4369c5578fd331223331a.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/08/30/1420271" target="_blank"> </a></div> </div> <p>মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেদুয়ানুল হালিম বলেন, ‘এ বিষয়ে সামনে মাদরাসার পরিচালনা কমিটির একটি সভা আহ্বান করব। সেখানে কমিটির সদস্যদের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’</p> <p>একজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানপ্রধানকে অপমান করে বের করে দেওয়া হলো, এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন জানতে চাইলে তার উত্তর না দিয়ে একই সুরে কথা বলেন ইউএনও।</p>