<p>ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে তিন লাখ জাল টাকা এবং জাল টাকা তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১০। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. গিয়াস উদ্দিন (২৭), রেদোয়ান শেখ মুমিন (১৯)।</p> <p>আজ শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দুপুর ১২টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‌্যাব-১০-এর উপপরিচালক (অপস ও মিডিয়া) এম জে সোহেল।</p> <p>এম জে সোহেল বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার রাতে  র‌্যাব-১০-এর লালবাগ ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার শুভাঢ্যা এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে দুইজন জাল টাকা প্রস্তুতকারীকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১০০ টাকার জাল নোট ২৮০০টি ও ৫০ টাকার ৬০০টি জাল নোটসহ একটি ল্যাপটপ, একটি প্রিন্টার, একটি কি-বোর্ড, একটি মাউস, চারটি কেবল, একটি রাউটার, একটি হেয়ার ড্রায়ার, একটি পাম্প অ্যান্ড স্প্রে, একটি ফয়েল রোল, একবোতল বিভিন্ন রঙের কালি, একটি স্টিলের স্কেল, দুইটি কার্টার, তিনটি কার্টিং ফ্রেম, ১০০ পাতা কাগজ, নগদ ২ হাজার টাকা, পাকিস্তানি ৫০ রুপি ও তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার এবং একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।’</p> <p>প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা একটি সংঘবদ্ধ জাল টাকা প্রস্তুতকারী ও সরবরাহকারী চক্র জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘তারা ইউটিউব, গুগলসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে জাল টাকা তৈরির সার্বিক দক্ষতা অর্জন করে। অতঃপর তারা উচ্চাভিলাষী অভিপ্রায় ও কম সময়ে অল্প পুঁজিতে অধিক অর্থ উপার্জনের উদ্দেশে জাল টাকা প্রস্তুত করার পরিকল্পনা করে। পরবর্তী সময়ে তারা জাল টাকা তৈরির প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ক্রয় করে এবং জাল টাকা সরবরাহের জন্য জাল টাকা তৈরি ও সরবরাহকারী বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পেইজ ও গ্রুপে সংযুক্ত হয়। তারা ফেসবুক গ্রুপ থেকে কমেন্ট দেখে তাদের সঙ্গে মেসেঞ্জারে চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে ক্লায়েন্ট তৈরি করেন। জাল টাকা সরবরাহের ক্ষেত্রে তারা অগ্রিম টাকা নিতেন তারা এবং পরবর্তী সময়ে তাদের সুবিধাজনক স্থানে জাল নোটগুলো সরবরাহ করতেন।’</p> <p>র‍্যাব ১০-এর উপপরিচালক বলেন, ‘চক্রটি বিভিন্ন সময়ে রাজধানী ঢাকার কেরানীগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, শ্যামপুর, ডেমরা এবং নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তৈরীকৃত জাল নোট সরবরাহ করত। তারা প্রতি এক লাখ টাকা মূল্যের জাল নোট ১৫-২০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করতেন। বিশেষ করে মাছবাজার, লঞ্চঘাট, বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন মার্কেটে নানা কৌশল অবলম্বন করে জাল নোট সরবরাহ করত। এ ছাড়া তারা অধিক জনসমাগম অনুষ্ঠান বিশেষ করে বিভিন্ন মেলা, উৎসব, পূজা ও কোরবানির পশুর হাট উপলক্ষে বিপুল পরিমাণ জাল নোট ছাপিয়ে ছিল বলে তথ্য প্রদান করে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে জাল নোট প্রিন্টিংয়ের সময় কাগজের অব্যবহৃত ও নষ্ট অংশগুলো পুড়িয়ে ফেলতেন। এ পর্যন্ত তারা বিভিন্ন সময়ে প্রায় এক-দুই কোটি টাকা মূল্যমানের জাল নোটের ব্যবসা করেছে বলে জানা যায়। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজুকরত সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’</p>